পঞ্চম কারাবন্দি দিবস, ভালো আছেন খালেদা জিয়া

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে যান বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এরপর ২০২০ সালের মার্চে করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতিতে শর্তসাপেক্ষে মুক্তি পেয়ে তিনি বাসায় আছেন। নিয়মিত চিকিৎসা নিচ্ছেন গুলশানের বাসা ফিরোজাতেই।

বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) তার কারাবন্দিত্বের পঞ্চম বর্ষপূর্তি। তার এই দিনটি অনেকটাই নীরবে কেটেছে। বুধবার শেষবেলায় এসে বিবৃতি দিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, খালেদা জিয়া এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নেওয়ার পর বাসায় আছেন। বর্তমানে তার শারীরিক অবস্থা ভালো। তার চিকিৎসক বোর্ড নিয়মিত দেখভাল করছেন।

চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের একজন  নাম প্রকাশ না করে বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, হাসপাতাল থেকে ফেরার পর নিয়মিত ট্রিটমেন্ট নিচ্ছেন খালেদা জিয়া। গুলশানের বাসা ফিরোজাতেই থাকছেন তিনি। নিয়মিত তার আত্মীয়স্বজনরা সাক্ষাৎ করেন। এছাড়া দলের মহাসচিব নিয়মিত তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, ‘দেশ, মাটি ও মানুষের নেত্রী খালেদা জিয়া আল্লাহর রহমতে ভালো আছেন। নিয়মিত চিকিৎসা চলছে। ঢাকায় অবস্থানরত পরিবারের সদস্যরা তাকে নিয়মিত দেখতে যান।’

এদিকে, বুধবার সন্ধ্যায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পঞ্চম কারাবন্দি দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন  বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আজ ৮ ফেব্রুয়ারি, বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক দিন। ২০১৮ সালের এই দিনে প্রতিহিংসাপরায়ণ আওয়ামী লীগ সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী খালেদা জিয়াকে ১/১১’র জরুরি অবস্থায় সরকারের বিরাজনীতিকরণের মিথ্যা মামলায় ফরমায়েশি সাজা দিয়ে অন্যায়ভাবে আটক রেখেছে। শুধু ফরমায়েশি সাজা দিয়ে তাকে আটক রাখা হয় নাই, তার প্রাপ্য জামিনের অধিকার কেড়ে নিয়ে ২৫ মাস অন্যায়ভাবে কারাগারে বন্দি রেখেছিল। বন্দি থাকা অবস্থায় সুচিকিৎসার অভাবে তার অসুস্থতা আরও তীব্র হয় এবং তার জীবন হুমকির মুখে পড়ে।’

বিএনপি মহাসচিব উল্লেখ করেন, খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে ব্যাপক আন্দোলন গড়ে ওঠে। এই আন্দোলনকেও দমন করতে সরকার নিষ্ঠুর নির্যাতন চালায়। দেশ-বিদেশে সর্বত্র খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি সোচ্চার হয়। আইনগতভাবে বারবার তার জামিনের আবেদন করা হলেও সরকারের হস্তক্ষেপে জামিন দেওয়া হয়নি। আইনি লড়াই করতে বিদেশ থেকে আইনজীবী আসতে চাইলেও সরকারের আপত্তির কারণে তাকে আসতে দেওয়া হয় নাই।’

ফখরুল বলেন, ‘খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে শর্ত সাপেক্ষে সরকার তার সাজা ৬ মাসের জন্য স্থগিত করে তাকে প্রকারান্তরে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে। তার উন্নত, উপযুক্ত সুচিকিৎসার জন্য চিকিৎসকরা তাকে বিদেশে উন্নত বিশেষায়িত হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করানোর সুপারিশ করলেও সরকার তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে দেয় নাই।’