এজেন্ডা নিয়ে সন্দেহ বিএনপির

নৈশভোজের মাধ্যমে ইনসাফ কমিটি পুনর্গঠনের উদ্যোগ

আড়ম্বরপূর্ণ নৈশভোজের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠার অন্তত ১০ বছর পর সক্রিয় হচ্ছে লেখক-কবি ফরহাদ মজহার ও সাংবাদিক  শওকত মাহমুদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ইনসাফ কায়েম কমিটি (ন্যাশনাল কমিটি ফর সিভিল রাইটস)।

বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) সন্ধ্যার পর রাজধানীর বনানীতে আলফ্রেসকো গার্ডেন, শেরাটনে এই  নৈশভোজ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই আয়োজনে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর শীর্ষ নেতাদের নিমন্ত্রণ করা হয়েছে কার্ড দিয়ে ও ফোন করে।

তবে বিএনপির নেতারা মনে করেন, হঠাৎ করেই ‘জাতীয় ইনসাফ কায়েম কমিটি’ সক্রিয় করার পেছনে ভিন্ন কোনও উদ্দেশ্য রয়েছে।

কোনও কোনও প্রভাবশালী দায়িত্বশীলের ভাষ্য—এই প্রক্রিয়াটি মাইনাস টু ফর্মুলার অংশ ও বর্তমান বিএনপির দৃশ্যমান রাজনৈতিক নেতৃত্বের বিরুদ্ধে। উপরন্তু, এই নৈশভোজের পেছনে আর্থিক ব্যয়ের বিষয়টিও রহস্যজনক বলে জানিয়েছেন কেউ কেউ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কমিটির সদস্য সচিব বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘জাতীয় ইনসাফ কায়েম কমিটি ২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এটি মানবাধিকার বিষয়ক একটি কমিটি। কমিটির পক্ষ থেকে নৈশভোজের আয়োজন করা হয়েছে। কমিটিতে আর কেউ নেই। এটি পুনর্গঠন করা হবে।’

বিএনপির একাধিক নেতার সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, জাতীয় ইনসাফ কায়েম কমিটির মাধ্যমে ফরহাদ মজহার ও শওকত মাহমুদের সক্রিয় হওয়ার পেছনে রহস্য রয়েছে। স্পষ্টভাবে তারা বিষয়টি না জানলেও দীর্ঘ ১০ বছর পর আড়ম্বরপূর্ণভাবে সামনে আসার প্রক্রিয়া সন্দেহজনক বলে দাবি করেছেন কেউ কেউ। যদিও এ প্রসঙ্গে বিএনপির কোনও নেতা উদ্ধৃত হতে রাজি হননি।

দলের স্থায়ী কমিটির একজন সদস্যের ভাষ্য, ‘আমি জানি না তিনি (শওকত মাহমুদ) একটি দলে থেকে কীভাবে এরকম একটি সংগঠনে যুক্ত।’

বিএনপির উচ্চ পর্যায়ের একজন দায়িত্বশীল উল্লেখ করেছেন, মূলত বিষয়টি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে। দ্বিতীয়ত, এখন যারা বিএনপিকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তাদের বিরোধিতার জন্যও এই প্রক্রিয়া। শুরুর দিকে প্রক্রিয়ায় না জেনে-বুঝে অনেকে যুক্ত হলেও এর প্রকৃত রূপ প্রকাশে আরও সময় লাগবে বলে দাবি করেন তিনি।

বিএনপির সমমনা একাধিক বিরোধী রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতা এ প্রতিবেদককে বলেছেন, তারা আমন্ত্রণ পেয়েছেন। তবে, এই আয়োজনের রহস্য সম্পর্কে তারা অজ্ঞাত।

আরেকটি দলের অন্যতম শীর্ষ নেতা এ প্রতিবেদককে জানান, তিনি নৈশভোজে অংশ নিতে ইতোমধ্যে রওনা দিলেও মাঝপথ থেকে ফিরে এসেছেন।

বিরোধী একাধিক নেতা জানিয়েছেন, বিএনপির পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার জাতীয় ইনসাফ কায়েম কমিটির নৈশভোজে না যেতে বিরোধীদলীয় নেতাদের অনুরোধ করা হয়েছে। বিশেষ করে এই ‘ফোর্সের এজেন্ডা ভিন্ন এবং তাদের কার্যক্রম সন্দেহজনক’ বলে মনোভাব জানানো হয়েছে।

জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। প্রথম শুনলাম আপনার (প্রতিবেদক) কাছে।’