দেশ বর্ণবাদীদের কবলে, তারা দুটো ভাগ করে ফেলেছে: মির্জা ফখরুল

বাংলাদেশ এখন বর্ণবাদীদের কবলে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয় বাংলাদেশ শুধু ফ্যাসিস্টের কবলে পড়েনি, বাংলাদেশ এখন বর্ণবাদীদের কবলে পড়েছে। দেশটাকে তারা দুটো ভাগে ভাগ করে ফেলেছে। একটা ভাগ হচ্ছে আওয়ামী লীগ, আরেক ভাগ হচ্ছে বিরোধী দল।’

বুধবার (২৭ মার্চ) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বিএনপির এক আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল ইসলাম এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সাম্প্রদায়িকতা এমন পর্যায়ে গেছে যে যারা বিএনপি করেন, তাদের ঘরবাড়ি পর্যন্ত দখল করে নেওয়া হচ্ছে। তাদের জমি দখল করে নেওয়া হচ্ছে, ব্যবসা দখল করে নেওয়া হচ্ছে, তাদের ছেলেমেয়েদের চাকরির কোনও সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। এমনকি দূরসম্পর্কের আত্মীয় যারা আছেন, তাদেরও চিহ্নিত করে বঞ্চিত করা হচ্ছে। এটা ‘বর্ণবাদ’ ছাড়া কিছু নয়। এই অবস্থায় তারা নিজেরাই ‘সাম্প্রদায়িক’ অবস্থা তৈরি করছে।’

তার অভিযোগ, আওয়ামী লীগকরণ ছাড়া এবং তাদের নিজস্ব লোকজন ছাড়া তারা কাউকে কোথাও দাঁড়াতে দেয়নি। সব কয়টা প্রতিষ্ঠান তারা দলীয়করণ করে ধ্বংস করেছে।

১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের ঘোষণা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান দিয়েছিলেন—দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এ ব্যাপারে কোনও বিতর্ক হতে পারে না। কারণ, সেটাকে বিতর্কিত করতে গেলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধকে বিতর্কিত করতে হবে। আজকে যারা এটা করছে, তারা মূলত স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি নয়।

তিনি বলেন, ‘জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষণার মধ্য দিয়েই সেদিন একটি দিশাহারা জাতি দিশা খুঁজে পেয়েছিল এবং যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল।

‘বর্তমান শাসকগোষ্ঠী আওয়ামী লীগ অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করছে’, বলেন তিনি।

হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘পত্রিকায় দেখলাম আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষক নন, পাঠক। তিনি কার লেখা পাঠ করেছেন, কে তাকে লিখে দিয়েছে এ ঘোষণা। তাদের নেতা কোন বাণী লিখে দিয়েছেন যে এটা আপনি পড়বেন। বলা হয় দফতরি ঘণ্টা বাজিয়েছেন। তো হেডমাস্টার সাহেব কোথায় ছিলেন। অন্য মাস্টাররা কোথায় ছিলেন।’

মেজর অব. হাফিজ উদ্দিন বলেন, ‘কাউকে তো খুঁজে পাওয়া যায়নি সেই মাহেন্দ্রক্ষণে। যখন মেশিনগান নিয়ে, মর্টার নিয়ে, ট্যাংক নিয়ে হারমাদ বাহিনী নিরীহ মানুষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে—তখন কাউকে তো খুঁজে পাওয়া গেলো না। সেই দুঃসময়ে বিপদগ্রস্ত মানুষের পক্ষে প্রতিরোধ গড়ে দাঁড়িয়েছিলেন সৈনিক মেজর জিয়াউর রহমান।’

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও দলের স্বাধীনতা দিবস উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক মেজর অব. হাফিজ উদ্দিন আহমদ। সভায় বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান প্রমুখ।