বিএনপি সর্বোচ্চ সহযোগিতা করে জাতীয় ঐকমত্য গঠনের চেষ্টা করে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, বিএনপি সহযোগিতা করছে না—এমন তকমা যেন না লাগে। আমরা সর্বোচ্চ সহযোগিতা করছি, ঐকমত্যে যেতে চাচ্ছি। অন্তত সব বিষয়ে না হোক, মেজর ইস্যুতে যেন একমত হতে পারি সেজন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।
বুধবার (২ জুলাই) রাজধানীর বেইলি রোডে ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে বিভিন্ন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনা শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
সালাহ উদ্দিন বলেন, সংস্কার কমিশনের ছয়টি কমিশনের যে প্রস্তাব দিয়েছিল, সে বিষয়ে আমরাই প্রথম বিস্তারিত জমা দেই। আজকে আলোচনার বিষয় ছিল সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতির মধ্যে কী সংশোধনী আনা যায়, এতে বিচার বিভাগকে না রেখে উত্তম কোনও প্রস্তাব আছে কিনা? সে বিষয়ে সবার মতামত।
তিনি বলেন, নির্বাচনি এলাকা সীমানা নির্ধারণ বিষয়ে আমি প্রস্তাব করেছিলাম। যেটিতে সবাই একমত। আর্টিকেল ১১৯ দেওয়া আছে। তবে নির্বাচনি সীমানা নির্ধারণে একটি বডি বা বিশেষায়িত কমিশন করার প্রস্তাবে দ্বিমত আছে। কিন্তু আমরা বলেছি বিশেষায়িত কমিটি করতে হবে। আইন সংযুক্ত করা ক্ষেত্রে আমরা একমত হয়েছি।
বিএনপির এই নেতা বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রায় পুনর্বহাল, পুনর্বহালের রিভিউ বিচারাধীন অবস্থানে আছে। আশা করি রায় জনগণের পক্ষে যাবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন প্রণালিতে দেখা যায়, এটি জুডিশিয়ারির মধ্যে সীমাবদ্ধ। ইমিডিয়েটলি, অবসরপ্রাপ্ত চিফ জাস্টিস দিয়ে শুরু হয়, সর্বশেষ অ্যাপিলড ডিভিশন দিয়ে শেষ হয়। কোন বিধান দিয়ে একমত না হলে, সর্বশেষ রাষ্ট্রপতিকে করা হয়। পার্লামেন্টে এ বিষয়ে আলোচনা হবে, তবে এখন যদি আমরা জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে বলতে পারি, জুডিশিয়ারিকে বাদ রেখে আরও দু-একটি পথ রাখা যাবে, যেটা সবার গ্রহণযোগ্যতা ভিত্তিতে প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগ হয় এবং প্রধান উপদেষ্টার পরামর্শক্রমে উপদেষ্টা নিয়োগ হবে। যাদের সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হওয়ায় যোগ্যতা থেকে তাদের কনসিডর করা যায়।
তিনি বলেন, জাতির সঙ্গে একটা ঐকমত্যে আসার জন্য নিজ উদ্যোগে আমরা প্রধানমন্ত্রীর জীবদ্দশায় ১০ বছরের বেশি নয়, এ বিষয়ে একমত হয়েছি। যাতে আর কেউ স্বৈরাচার হয়ে না আসতে পারে। একটা ব্যালেন্স যাতে সরকার ব্যবস্থায় হয়। অর্থবিল আর আস্থা ভোট ছাড়া বাকি বিষয়ে পার্লামেন্ট সদস্যরা স্বাধীন থাকবেন, এ বিষয়ে সবাই একমত হয়েছে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদের ক্ষেত্রে বিএনপি প্রস্তাব দিয়েছে, তিন মাস বা ৯০ দিন। যদি কোন কারণে বিলম্বিত হয়, আরও এক মাসের একটা বিধান রাখা যেতে পারে সংবিধানে। তবে স্থির থাকতে হবে তিন মাসে, এখানে আমরা আমাদের মতামত দিয়েছি।
তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধানে তো স্থানীয় সরকার নির্বাচন নেই। নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ারের মধ্যে দুটি জিনিস। একটি হচ্ছে, জাতীয় নির্বাচন আরেকটি রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। সেটা এখনও বহাল আছে। তাতে কোনও সংশোধন আসেনি। প্রস্তাব তো যে কেউ দিতেই পারে।