বিএনপির গণমিছিলের স্থানে জমায়েত নিয়ে প্রশ্ন

জামায়াতের হামলায় ১০ পুলিশ আহত, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন

জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের হামলায় আহত হয়েছেন ১০ পুলিশ সদস্য। শুক্রবার (৩০ ডিসেম্বর) জুমার নামাজ শেষে রামপুরার আবুল হোটেলের সামনে থেকে মিছিল বের করে জামায়াতের নেতাকর্মীরা। পুলিশের বাধা উপেক্ষা করেই মিছিলটি মালিবাগ মোড় পর্যন্ত চলে আসে। সেখানে পৌঁছা মাত্রই মিছিল থেকে পুলিশের ওপর হামলা চালানো হয়। এতে মিছিলকারী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। আহত পুলিশের সদস্যরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলে জানিয়েছে ডিএমপি। 

আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন, এসি নিউমার্কেট জোনের এসি শরীফ মোহাম্মদ ফারুকুজ্জামান, রমনা জোনের এসি বায়েজীদুর রহমান, রমনা থানার এসআই শহীদুল ওসমান মাসুম, এসআই সুবীর কুমার কর্মকার, এসআই হাবিবুর রহমান, এসআই মোহাইমিনুল হাসান, এএসআই কবির হোসেন, এএসআই ফিরোজ মিয়া, পিওএম পূর্বের কনস্টেবল সৌরভ নাথ ও কনস্টেবল সাদী মোহাম্মদ।

322331753_5493850280723664_7754970325552678906_n

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এ সময় পুলিশ মিছিলকারীদের ওপরে টিয়ার গ্যাস ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে। এছাড়া লাঠিপেটা করে ছত্রভঙ্গ দেয়। কিন্তু তাদের আঘাতে পুলিশের ১০ সদস্য আহত হয়েছেন। যারা বর্তমানে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার ডিসি মো. শহিদুল্লাহ বলেন, ‘এসি রমনা ও এসি নিউমার্কেটসহ পুলিশের ১০ সদস্য মিছিলকারীদের হামলায় আহত হয়েছেন। এ সময় জামায়াতের ১১ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’

ডিসি শহীদুল্লাহ বলেন, ‘জামায়াত-শিবিরের ব্যানারে এই মিছিলটি মালিবাগ মোড় পর্যন্ত আসে এবং পুলিশের ওপর অতর্কিত হামলা করে। পুলিশ টিয়ার গ্যাস ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।’

আহত পুলিশ সদস্যরা হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানিয়েছে ডিএমপি

পরে ওই বিচ্ছিন্ন মিছিলের সঙ্গে পুলিশের কয়েক মিনিট ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। পরে মালিবাগসহ আশপাশের এলাকা নিয়ন্ত্রণে নেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পুলিশ ধাওয়া দিলে মিছিলকারীরা শান্তিবাগের দিকে গলিতে ও মৌচাকের দিকে চলে যায়।

ডিএমপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, মিছিল থেকে জামায়াতের ১১ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা হলেন, কাউছার ইসলাম (৩৯), হুমায়ুন কবির (৪০), সালাউদ্দিন (৩৪),  আ. রাজ্জাক (৪০), আ. আউয়াল (৪৪), সাইজ উদ্দিন (৫০), মোতালেব (৬০), আরিফুল ইসলাম (২৬), মঈন উদ্দিন (৩২), আব্দুস সোবহান (৬২) ও  আল আমিন (২৫)।

মালিবাগ মোড়ের জামায়াতের মিছিল থেকে অতর্কিত হামলায় আহত পুলিশ সদস্যদের খোঁজখবর নিতে পুলিশের মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন আগামীকাল শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) সকাল পৌনে ১২টায় রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে যাবেন বলে ডিএমপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

এদিকে, বিএনপির গণমিছিলের জন্য নির্ধারিত স্থানে বিনা অনুমতির কর্মসূচি পালন করে জটিলতা সৃষ্টি করায় জামায়াতের কর্মকাণ্ডে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন বিএনপি ও বিরোধী দলগুলোর একাধিক নেতা। তারা মনে করেন, জামায়াত ২৫ ডিসেম্বর ও ২৯ ডিসেম্বর আবেদন করে অনুমতি না পেয়ে রাজধানীতে মিছিল করেছে। এরমধ্যে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখাও গণমিছিল করে। এক্ষেত্রে কেবল মালিবাগ এলাকায় সংঘর্ষের পরিস্থিতি তৈরি করে জামায়াত। 

322116460_1331899754241232_5835341795920716172_n

বিএনপির দায়িত্বশীল একজন নেতা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘রাজধানীতে বরাবরই পুলিশের অনুমতির তোয়াক্কা না করে মিছিল করে আসছে জামায়াত। আজকেও এর ব্যতিক্রম ছিল না। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে তারা কেন মালিবাগকে বেছে নিলো। কারণ হচ্ছে, বিএনপির পূর্বনির্ধারিত এলাকা ছিল এটা। গণমিছিল মালিবাগ মোড় হয়ে মগবাজারের দিকে যাওয়ার কথা, সেটা আগেই ঘোষণা করা। সেক্ষেত্রে তারা পরিকল্পিতভাবে মালিবাগকে বেছে নিয়েছে। যদিও অন্য এলাকায় মিছিল করলেও পুলিশ কোনও সমস্যা সৃষ্টি করেনি। ফলে, উদ্দেশ্য ছিল বিএনপির গণমিছিলে হাঙ্গামা সৃষ্টি করা। কিন্তু বিএনপির নেতারা আগেই টের পেয়ে কর্মসূচি ডিলে করেছেন।’