ধর্মকে ইস্যু বানিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করা হচ্ছে: আনিসুল ইসলাম মাহমুদ

বাংলাদেশ ধর্মীয় সম্প্রীতি ও নিরপেক্ষতার উজ্জল দৃষ্টান্ত দাবি করে জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেছেন, সুবর্ণজয়ন্তীর অলোচনার দিনে অনুরোধ থাকবে— আমরা ধর্মকে ইস্যু করবো না। এটা চলবে না। এটাকে ইস্যু করে এই সমাজকে অস্থিতিশীল করবেন না। তিনি বলেন, ‘ধর্মকে যারা ইস্যু করছেন, তারা দেশের জন্য কাজ করছেন না। দেশকে অস্থিতিশীল করছেন। এটা অমঙ্গল বয়ে আসবে।’

বৃহস্পতিবার (২৫ নভেম্বর) স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে জাতীয় সংসদে বিশেষ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। বুধবার জাতীয় সংসদে এ সাধারণ আলোচনার জন্য প্রস্তাব তোলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগে সংসদে স্মারক বক্তৃতা দেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, ‘আপনারা আমাদের রাষ্ট্রীয় ধর্ম ইসলাম নিয়ে কথা বলেন। এটাকে ইস্যু করেন। অথচ, ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতির সবচেয়ে উদাহরণ যুক্তরাজ্য, কিন্তু সেখানে প্রোটেস্ট্যান্ট না হলে রাজা কিংবা রাণী হতে পারবেন না। যুক্তরাষ্ট্রে একজন প্রেসিডেন্ট বাইবেলের ওপর শপথ গ্রহণ করেন। আমরা কোনও ধর্মীয় গ্রন্থের ওপরে হাত রেখে শপথ নেই না। রাষ্ট্র পরিচালনা করি না।’

সাবেক এ মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ ধর্মীয় সম্প্রীতি ও ধর্মীয় নিরপেক্ষতার উজ্জল দৃষ্টান্ত। আমরা যারা এই প্রশ্ন করি— এটা দুঃখজনক। কারণ কিছু মানুষের কুকীর্তির জন্য সমস্ত জাতি তার গ্লানি বহন করতে পারে না।’ তিনি বলেন, ‘যারা ধর্মীয় সম্প্রীতি নষ্ট করে, এর বিরুদ্ধে কাজ করে। তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। তাহলে আমাদের দেশে যে ঘটনাগুলো ঘটেছে, তা ঘটবে না।’

ধর্ম নিরপেক্ষতার উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘আজকে সরকারি চাকরি, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ব্যবস্থায় কোনও পক্ষপাতিত্ব আছে? কোথাও কোনও পক্ষপাতিত্ব নাই।’

চট্টগ্রামের হাটহাজারী এলাকা থেকে নির্বাচিত এই এমপি বলেন, ‘হাটহাজারী নিয়ে অনেক কথা বলা হয়। হেফাজত নিয়ে অনেক কথা হয়। সেই হাটহাজরীতে কালীমন্দির ও হাটহাজারী মাদ্রাসা দুইটা পাশাপাশি। একটি দেয়াল। গত ১০০ বছরে কোনও ঘটনা ঘটেনি।’

দেশের অর্জনকে ধরে রাখার জন্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করতে হবে বলে জানিয়ে জাপার এই কো-চেয়ারম্যান বলেন, ‘সংবাদ মাধ্যমের সম্পূর্ণ স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে। ৫০ বছরে দেশ এগিয়ে গেছে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। বিচারবিভাগ নিরপেক্ষ করতে হবে। নির্বাচন কমিশনকে নিরপেক্ষ করতে হবে। এই কাজগুলো আমাদের করতে হবে। না হয়, প্রধানমন্ত্রী যে অর্জন করেছেন, তা ভবিষ্যতে ধরে রাখা যাবে না।’

তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্রের মূল হচ্ছে নির্বাচন। সেই নির্বাচনকে সম্পূর্ণরূপে নিরপেক্ষ করতে হবে। এর জন্য যে প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করার দরকার, সেগুলো শক্তিশালী করতে হবে।’