রাষ্ট্র স্বাভাবিক মৃত্যুর নিশ্চয়তা দিতে ব্যর্থ: জাপা এমপি

জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বলেছেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর পরে এসে একজন নিরাপরাধ ছাত্রীর স্বাভাবিক মৃত্যুর নিশ্চয়তা দিতে রাষ্ট্র ব্যর্থ হয়েছে। কেন একজন পিতা রাষ্ট্রের কাছে বিচার চাইতে ভয় পাচ্ছেন, রাষ্ট্রকে তার জবাব দিতে হবে। বুধবার (৩০ মার্চ) জাতীয় সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

সম্প্রতি রাজধানীর শাজাহানপুরের আমতলা মসজিদ এলাকায় দুর্বৃত্তের এলোপাতাড়ি গুলিতে নিহত হন কলেজছাত্রী সামিয়া আফনান জামাল। এ ঘটনার পর সামিয়ার পিতা–মাতা বলেছেন, তারা বিচার চান না। এ বিষয়টি উল্লেখ করে বুধবার জাতীয় সংসদে বক্তব্য দেন সৈয়দ আবু হোসেন। ওই ছাত্রীর কী অপরাধ ছিল— এমন প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, একজন সংসদ সদস্য হিসেবে তিনি এ ঘটনায় লজ্জিত। ওই ছাত্রী রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। এই ঘটনার পর একজন চিকিৎসককে হত্যা করা হয়েছে। তিনিও রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন না।

যারা এসব হত্যাকাণ্ডে জড়িত তাদের ‘হায়েনা’ আখ্যা দিয়ে জাতীয় পার্টির এই এমপি বলেন, ‘এসব হায়েনাদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। না হলে উন্নয়ন, অগ্রগতি সব ম্লান হয়ে যাবে।’ যেভাবে জঙ্গিদের দমন করা হয়েছে, সেভাবে শক্ত হাতে এসব হায়েনাদের দমন করার জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানান।

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়েও সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষের এখন ত্রাহি অবস্থা। যেকোনও মূল্যে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে আনতে হবে। অনেক সময় মন্ত্রীরা বলেন, ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়ে দেন। যদি ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে থাকে, তাহলে সরকার কেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না।’

জনগণের পকেট কাটা হচ্ছে

বিএনপি দলীয় এমপি জিএম সিরাজ বলেন, ‘দেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালনের সময় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাড়িয়ে সরাসরি জনগণের পকেট কাটা হচ্ছে।’

সিরাজ বলেন, ‘সরকারি–বেসরকারি সিন্ডিকেট হাজার কোটি টাকা লুট করে বিদেশে পাচার করেছে। ৪৩ শতাংশ পরিবার খাবারের ব্যয় কমিয়ে দিয়েছে। বাণিজ্যমন্ত্রী নিজেও বলেছেন, মধ্যবিত্তরা টিসিবির লাইনে দাঁড়াচ্ছেন। দেশের জনসংখ্যার অর্ধেক মানুষ যখন কোনোভাবে বেঁচে আছেন, তখন সরকারের মন্ত্রী, এমপি, সুবিধাভোগী তথাকথিত বুদ্ধিজীবীরা নৌবিহারের নামে আনন্দ ফুর্তিতে মত্ত।’ 

সরকার সময়ের কাজ সময়ে করতে পারছে না, এমন দাবি করে বিএনপির এই এমপি বলেন, ‘বাজার নিয়ন্ত্রণে টাক্সফোর্স করা হয়েছে দাম বাড়ার দুই মাস পর। সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সয়াবিন তেলের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়িয়ে গত ৪৫ দিনে ৩ হাজার কোটি টাকা লোপাট করা হয়েছে। বৈষম্য এখন আকাশ পাতাল। এর জন্য দায়ী বর্তমান সরকারের দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা। মধ্যবিত্ত নিম্নবিত্ত মানুষের দুরবস্থা নিয়ে কোনও নির্দেশনা নেই। মধ্যবিত্ত গরিব হয়ে যাচ্ছে। মধ্যবিত্ত আজ নিস্ব হয়ে যাচ্ছে। তারা টিসিবির লাইনে দাঁড়াতে পারছে না। এ বিষয়ে সরকারের দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’