এমপিরা প্রতিজ্ঞা করলে চাঁদাবাজি কমানো যাবে: আনিসুল ইসলাম মাহমুদ

চাঁদাবাজি সমাজে একটি সংস্কৃতি হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও দলটির সংসদ সদস্য আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। সংসদ সদস্যদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘৩৫০ জন এমপি যদি নিজেরা প্রতিজ্ঞা করেন— চাঁদাবাজদের মদদ দেবেন না, প্রতিহত করবেন, তাহলে চাঁদাবাজি হয়তো নির্মূল করা যাবে না, কিন্তু কমানো যাবে।’

রবিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

একটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ তুলে ধরে আনিসুল ইসলাম বলেন, ‘আজকে চাঁদা একটা কালাচারে পরিণত হয়েছে। রাস্তা দিয়ে যখন পরিবহনের ট্রাকগুলো আসে, সেখানে চাঁদা দিতে হয়। সেই চাঁদা যোগ হয় দ্রব্যমূল্যের সঙ্গে। আপনি একটি বাড়ি করবেন, সেখানে বালি কে দেবে, ইট কে সাপ্লাই দেবে, রড কে সাপ্লাই দেবে— এগুলোর জন্য দিতে হয় চাঁদা। হয় চাঁদা দিতে হবে, নয়তো তাদেরকে সেই সাপ্লাইয়ের কাজ দিতে হবে। আজকে চাঁদাটা ভয়ঙ্কর ব্যাধির আকার ধারণ করেছে।’

আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, ‘হকারদেরও চাঁদা দিতে হবে। যে হকাররা খুবই গরিব মানুষ, কোনোভাবে তারা সংসার চালায়। এই গরিব লোকদের কাছ থেকে পর্যন্ত চাঁদা নিচ্ছে। চাঁদা নেওয়া হচ্ছে রিকশাওয়ালার কাছ থেকে। রিকশার যে স্ট্যান্ড সেখানে তাদের চাঁদা দিতে হচ্ছে। সিএনজির যে মালিক, ড্রাইভার তাদের চাঁদা দিতে হচ্ছে। সমাজের প্রত্যেক জায়গায়, বিশ্ববিদ্যালয়েও আমরা অনেক কিছু দেখছি। এই চাঁদার যে কালচার ডেভেলপ করছে, এটার বিরুদ্ধে যদি আমরা একটা মুভমেন্ট না করি, তাহলে আমাদের দেশের জন্য দুর্দিন সামনে আছে বলে, আমি মনে করি।’

এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে সামনে দুর্দিন আসবে— এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, সব সংসদ সদস্যকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে চাঁদাবাজদের মদদ না দেওয়া এবং চাঁদাবাজদের সম্পর্কে জানলে— প্রতিহত করার প্রতিজ্ঞা নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের সংসদে এখন তিনশ সদস্য আছেন। অচিরেই ৩৫০ জনে সেটি উন্নীত হবে। আমার একটি পরামর্শ আছে যে, আমরা যে ৩৫০ জন আছি, আমরা যদি নিজেদের কাছে প্রতিজ্ঞা করি— আমরা কোনও চাঁদাবাজকে কোনও মদদ দেবো না, সাহায্য করবো না, বরং তারা যদি এসব কাজ করে, তাহলে তাদের প্রতিহত করবো। আমি মনে করি, হয়তো বাংলাদেশ থেকে চাঁচাবাজি নির্মূল করা যাবে না, কিন্তু অনেকখানি কমাতে পারবো। এই সংসদে দাঁড়িয়ে আমার যে সহকর্মীরা আছেন, সেই সংসদ সদস্যদের কাছে আমার আবেদন, চলুন— আমরা এই একটা কাজে ঐক্যবদ্ধ হই। এখানে কোও পয়সা খরচ হবে না। কোনও কিছু লাগবে না। কেবল আমরা প্রতিজ্ঞা করবো— এদেরকে মদদ দেবো না এবং যেখানে জানবো, সেটা প্রতিহত করবো। এই কাজটি করলে আমরা মনে করি, বাংলাদেশ অনেকখানি বেঁচে যায়। এই যে উন্নত দেশের স্বপ্ন আমরা দেখি, হয়তো সেই উন্নত বাংলাদেশ গড়তে পারবো।’

অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টির মুজিবুল হক চুন্নু একটি পত্রিকার সংবাদ তুলে ধরেন। বলেন,    ‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ফরম বিক্রির টাকা উপাচার্য, উপ-উপাচার্যসহ শিক্ষকরা নানা হিসাবে ভাগবাটোয়ারা করে নেন। চট্টগ্রাম ছাত্রলীগ অতীতের মতোই এই টাকার ভাগ-বাটোয়ারার অংশ হতে চায়।’

শিক্ষামন্ত্রীর উদ্দেশে মুজিবুল হক বলেন, ‘এটি যদি সঠিক হয়ে থাকে, তাহলে মানুষকে জানান— কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’