মঙ্গল শোভাযাত্রার রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে: হেফাজতে ইসলাম

হেফাজতে ইসলামমঙ্গল শোভাযাত্রা সাম্প্রতিক ধর্মনিরপেক্ষ আবিষ্কার বলে মন্তব্য করেছেন হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব মুহাম্মদ জুনায়েদ বাবুনগরী। এই শোভাযাত্রার রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে বলেও অভিযোগ তার। বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) বিকালে সংবাদমাধ্যমে পাঠানো দলের এক বিবৃতিতে তিনি একথা বলেন।
হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব বিবৃতিতে বলেছেন, ‘দেশের আলেম সমাজ ও সাধারণ মুসলমানরা মঙ্গল শোভাযাত্রা নিয়ে শুরু থেকেই আপত্তি জানিয়ে আসছেন। এই শোভাযাত্রায় ইসলামি পোশাক এবং দাড়ি-টুপিধারী মুসলমানদের কখনও দানব, আবার কখনও রাক্ষস বা কীট হিসেবে তুলে ধরা হয়ে থাকে। এই শোভাযাত্রা থেকে মূলত ইসলামি পোশাক, রাসূল (সা.)-এর সুন্নত দাড়ি-টুপিধারী মুসলমানদের নির্মূল করার বাণী প্রচার হয়ে থাকে। এই প্রতীকায়ন বুশ-ব্লেয়ারের ওয়ার অন টেরর প্রকল্পের অংশ। এর মাধ্যমে সারাবিশ্বে মুসলমান সম্প্রদায়কে সন্ত্রাসী ও দানব হিসেবে চিত্রিত করার চেষ্টা চলে।’
জুনায়েদ বাবুনগরী আরও বলেন, ‘কোনও উৎসব পালনের জন্য কাউকে বাধ্য করা যায় না। বাধ্য করা হলে সেটা আর উৎসব থাকে না। তাছাড়া পহেলা বৈশাখ আমাদের কোনও জাতীয় দিবস নয় যে, সরকারি অর্থ সেখানে ব্যয় করা যাবে। এই শোভাযাত্রা রাজনৈতিক প্রকল্প হয়ে ওঠার কারণে দেশের সর্বসাধারণের কাছে স্বীকৃতি বা গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। সমাজে বিভাজন সৃষ্টি ও মুসলমানদের প্রতি ঘৃণা ছড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে পরিচালিত হওয়ার কারণে তা কখনোই সামাজিক উৎসবের মর্যাদা পায়নি। তাই মঙ্গল শোভাযাত্রাকে বাধ্যতামূলক করা এই বিভাজনের রাজনীতিকে আরও তৃণমূলে নিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা বলে আমরা মনে করি।’

ব্রিটিশদের ইংরেজি নববর্ষ পালন করতে দেখে পহেলা বৈশাখ উদযাপনের চিন্তার উদ্ভব মন্তব্য করে হেফাজত মহাসচিবের ভাষ্য, ‘বাংলার মুসলিম ঐতিহ্যের কথা বাদ দিলেও ঐতিহ্যগতভাবে এই ধর্মনিরপেক্ষরা যে আবহমান হাজার বছরের বাঙালি সংস্কৃতির কথা বলে মুখে ফেনা তোলেন, সেই সংস্কৃতিতেও মঙ্গল শোভাযাত্রা কখনও ছিল না। এমনকি পহেলা বৈশাখও ছিল না। আমাদের সময় চক্রাকারে আবর্তন করে। একটা চক্রের আবর্তন শেষ হলে আবার নতুন আবর্তন শুরু হয়। আমাদের সময় একরৈখিক নয়, চক্রাকার। তাই বছরের প্রথম দিন আমাদের জন্য কোনও আলাদা গুরুত্ব বহন করে না।’

মঙ্গল শোভাযাত্রা কোনও মুসলমানের পালনীয় উৎসব হতে পারে না বলে মন্তব্য করে জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, ‘এটি সমাজ ধারণার বিরোধী এবং বিভাজনের প্রতীক। মঙ্গল শোভাযাত্রা আমাদের ঈমান ও আক্কিদার পরিপন্থী। ওয়ার অন টেরর প্রজেক্টের অংশ হিসেবে মুসলমান সম্প্রদায়কে হেয় ও সন্ত্রাসী বলে উপস্থাপনের যে রাজনৈতিক প্রকল্প ঢাকার চারুকলা তৈরি করেছে, সেই মঙ্গল শোভাযাত্রাকে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের আওতাধীন সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিস্তৃত করার সরকারি নির্দেশের তীব্র নিন্দা জানাই।’

/সিএ/জেএইচ/