‘আ.লীগ নিজেদের ১০ বছরের ক্রেডিটও বিএনপিকে দিতে চায়’


আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখছেন ড. কামাল হোসেন

ক্যাসিনো-জুয়া নিয়ে বিএনপিকে দোষারোপ করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতাদের বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করেছেন গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন। তিনি বলেন, ‘১০ বছর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থেকে যা করেছে, সেই সবের ক্রেডিটও তারা বিএনপিকে দিতে চায়।’ শুক্রবার (৪ অক্টোবর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

‘বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে জাতীয় সরকারের অপরিহার্যতা’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি)।

‘ক্যাসিনো বিএনপির সময়ে হয়েছিল’—আওয়ামী লীগ নেতাদের এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ড. কামাল বলেন, ‘আমি তো বিএনপির সমর্থক ছিলাম না। আমিও তাদের সমালোচনা করেছি। বিএনপি অনেক কিছুই করতে পারে কিন্তু দশ বছর তারা ক্ষমতায় নেই। এই সময়ে যা হয়েছে, সেসব তারাই করেছে—এমন অভিযোগ গ্রহণযোগ্য নয়।’

ড. কামাল বলেন, ‘আজকের সভায় কেউ কোনও দ্বিমত পোষণ করেননি। সবাই একই কথা বলেছেন। দেশের অবস্থা নিয়ে সবাই গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। ধর্ষণের পর হত্যা, আইনের শাসন অনুপস্থিত। এসবের প্রমাণ দিতে বেশি কিছু লাগে না। পত্রিকাগুলো খুলে দেখুন, ঘটনাগুলো ক্রমাগত ঘটছে। এই সরকারকে তো আমরা ভোট দেইনি। তাদের এই কর্মকাণ্ডের জন্য আমরা তাদের প্রত্যাখ্যান করতে বাধ্য। সেটা নিয়ে কোনও দ্বিমতের প্রয়োজন নেই।’
ক্ষমতাসীনরা দেশের শাসন ব্যবস্থাকে নষ্ট করছে বলে মন্তব্য করেন ড. কামাল বলেন, ‘ভোট হতে দেননি। ২৯-৩০ ডিসেম্বর কেউ ভোট দিয়েছিলেন? আমি একজনও খুঁজে পাচ্ছি না, যিনি ভোট দিয়েছিলেন। আপনারা পেলে তার ফোন নম্বর আমাকে দেবেন। অনেকে আমাকে বলেছেন, ইলেকশন হয়েছে কিনা তাও তারা জানেন না।’ তিনি আরও বলেন, ‘আজকে জুমার দিন, আপনারা যেভাবে কথা শুনছেন এবং শুনে মাথা নাড়াচ্ছেন, আমি বিশ্বাস করি, আপনাদের মধ্যে সেই ঐকমত্য আছে, দেশকে বাঁচাতে হবে।’

গণফোরাম সভাপতি আরও বলেন, ‘আমি মনে করি উচিত কথা যেগুলো বলা হয়েছে, সেগুলো আপনারা প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে দেখছেন। দুর্নীতি কোন জায়গায় চলে গেছে? অর্থনীতি কীভাবে ধ্বংস হচ্ছে, দ্রব্যমূল্যের কী পরিমাণ ঊর্ধ্বগতি; বিশেষ করে ব্যাংকিং সিস্টেমকে যেখানে নিয়ে আসা হয়েছে—এসব নিয়ে বেশি কিছু বলতে চাই না। এতে আরও ক্ষতি হবে।’

পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনের প্রসঙ্গ টেনে ড. কামাল বলেন, ‘এই যে রেকর্ড পরিমাণ টাকা বাইরে যাচ্ছে, কারা পাঠাচ্ছে? যাদের দেশপ্রেম থাকবে, দেশের প্রতি আস্থা থাকবে, তারা তো এভাবে বিদেশে টাকা পাঠাবে না। এগুলো তদন্ত হওয়া দরকার। সরকারের যদি অনুমতি না থাকে, তাহলে মানুষ এভাবে বাইরে টাকা পাঠাতে পারে না। এই লোকগুলো হাতেগোনা।’

আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব, যুগ্ম-সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মনিরুল হক চৌধুরী, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাইফুল হক প্রমুখ।