করোনা নিয়ে সরকারে অস্থিরতা কাজ করছে, সংসদে ইনু

করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ে সরকারের মধ্যে অস্থিরতা কাজ করছে বলে অভিযোগ তুলেছেন ১৪ দলীয় জোটের শরিক জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু। লকডাউন-শাটডাউনসহ বারবার প্রজ্ঞাপন পরিবর্তনের প্রসঙ্গ টেনে সোমবার (২৮ জুন) জাতীয় সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে তিনি এমন অভিযোগ করেন। তিনি এ সময় করোনা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর মধ্যে সমন্বয়হীনতারও অভিযোগ তোলেন।

গত কয়েকদিনের পত্রিকার রিপোর্ট এবং সরকারের বক্তব্য বিবৃতি সবকিছু মেলালে যা দেখা যায় তা ‘অতি উদ্বেগজনক’ উল্লেখ করে ইনু বলেন, সরকারের ভেতরে আমি অস্থিরতা লক্ষ্য করছি। গত কয়েকদিনে লকডাউন- শাটডাউন নিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি এবং তা ঘনঘন সংশোধন। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে অদলবদল করা। এসব বক্তব্য বিবৃতির মধ্য দিয়ে অস্থিরতাই প্রকাশ পাচ্ছে।

তিনি বলেন, প্রজ্ঞাপনে পরস্পর বিরোধী বক্তব্যও রয়েছে। এরকম পরিস্থিতিতে এটা বাঞ্ছনীয় নয়। একই সঙ্গে আমি যতটুকু জানি, করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ নয়টি মন্ত্রণালয় সম্পৃক্ত। এই নয়টি মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়হীনতাও লক্ষণীয়।

গণমাধ্যমে প্রকশিত খবরের প্রসঙ্গ টেনে সাবেক মন্ত্রী ইনু বলেন, করোনায় মৃত্যু আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। শুধু শহরেই নয়, জেলা উপজেলা শহরে সংক্রমণ ঘটেছে। ঘরে ঘরে অনেক অসুস্থ মানুষ, জেলা উপজেলায় রোগীর জন্য বেড পাওয়া যায় না। অক্সিজেনের জন্য হাহাকার চলছে। সরকারও বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত এবং উদ্বিগ্ন।

তিনি বলেন, সংক্রমণ বিস্তার রোধে লকডাউন কিংবা শাটডাউনের কোন বিকল্প নেই। কিন্তু অভিজ্ঞতা বলে দুই বা তিনদিনের মধ্যে খাদ্যের জন্য সাধারণ মানুষের হাহাকার শুরু হয়। সঙ্কট দেখা দেয়। অপরদিকে সংক্রমিত ব্যক্তিদের জন্য বেড, অক্সিজেনের চাহিদা ও আইসিইউর জন্য দৌড়াদৌড়ি..। এক্ষেত্রে জেলা উপজেলার হাসপাতালের অবিলম্বে কিছু বেড বাড়ানো উচিত। আইসিইউ হয় তো বাড়ানো যাবে না। কিন্তু হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা, অক্সিজেন সিলিন্ডার, পোর্টেবল অক্সিজেন যোগাড় করার সুযোগ রয়েছে। আমার দাবি থাকবে একটা রোগীও যেন হাসপাতাল থেকে ফিরে না যায় তার চেষ্টা করতে কবে।

ইনু বলেন, কোভিড মোকাবিলায় যেসব চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী কাজ করছে; যারা জান হাতে নিয়ে কাজ করছেন। তাদের গত নয় মাসে নির্ধারিত কোন দৈনিক ভাতা দেওয়া হয়নি। আমি জানি তাদের জন্য বরাদ্দ রয়েছে। তাদের প্রণোদনা দেওয়া দরকার। একই সাথে নীতিমালা পরিবর্তন চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীদের ঝুঁকিভাতা-প্রণোদনা দেওয়া উচিত।

টিকার কোন বিকল্প নেই উল্লেখ করে জাসদ সভাপতি বলেন, সর্বোচ্চ টিকা কূটনীতি প্রয়োগ করে টিকা সংগ্রহ করতে হবে। দেশের ভেতরে টিকা উৎপাদনের ব্যবস্থা করতে হবে। ২০২২ সালের মধ্যে ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে সকলকে টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। আমি মনে করি টিকাই মানুষকে বাঁচাবে।