ঔপনিবেশিক পুলিশি ব্যবস্থা বিলোপ করতে হবে: আ স ম রব

সম্প্রতি নিউ মার্কেট এলাকায় তাণ্ডব এবং কলাবাগানে তেঁতুলতলা মাঠকে কেন্দ্র করে সংঘটিত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলক জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেছেন, নিউ মার্কেটে সংঘটিত রণক্ষেত্রে দ্রুত হস্তক্ষেপ না করে হেলমেট বাহিনীর তাণ্ডব করতে দেওয়া এবং খুনিদের গ্রেফতার না করে গায়েবি মামলা দিয়ে সরকারের রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের উপায় হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ায় পুলিশ বাহিনীর ভূমিকা দারুণভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।

মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে রব এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘যারা খুনি তাদের গ্রেফতার করে জবানবন্দি গ্রহণ করা ছাড়াই ইন্ধনদাতাদের রহস্য উদঘাটনে পুলিশের অতিশয় তৎপরতা ভয়ের সংস্কৃতি বিস্তারকেই উসকে দিচ্ছে, ন্যায়বিচারকে নয়। তেঁতুলতলা মাঠকে কেন্দ্র করে বিনা কারণে মা এবং পুত্রকে গ্রেফতার করায় প্রমাণ হয়, রাষ্ট্র কী ভয়ংকর পর্যায়ে উপনীত হয়েছে।’

রব মনে করেন, কর্তৃত্ববাদী সরকারের শাসন ব্যবস্থায় স্বাধীন দেশের নাগরিকের বিরুদ্ধে যে ধরনের অন্যায়-অবিচার এবং অনৈতিকতার চর্চা হচ্ছে, তা এখন এক ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। সরকারের ‘ক্রীড়নক’ আর জনগণের সঙ্গে ‘বৈরিতা’ কোনও স্বাধীন রাষ্ট্রের পুলিশ বাহিনীর দর্শন হতে পারে না।

তার মতে, যেখানে রাষ্ট্র তার ভূখণ্ড ও জনগণকে অন্যায়কারীর হাত থেকে রক্ষা করার কথা, সেখানে দেশের জনগণ ক্রমাগত অন্যায়-অবিচারের শিকার হচ্ছে। তবু রাষ্ট্র জনগণের পাশে দাঁড়াচ্ছে না। এ হচ্ছে অভ্যন্তরীণ উপনিবেশবাদের ফলশ্রুতি। মনে রাখতে হবে, ঔপনিবেশিক আমলের রাষ্ট্রীয় কাঠামো এবং শাসন ব্যবস্থা দিয়ে দেশ পরিচালনা করাই হলো অভ্যন্তরীণ উপনিবেশবাদ।

রবের মন্তব্য, বিদ্যমান ঔপনিবেশিক শাসন কাঠামোর মৌলিক পরিবর্তন, ধ্বংসপ্রাপ্ত রাষ্ট্র ব্যবস্থার প্রয়োজনীয় মেরামত এবং ফ্যাসিবাদী সরকারের অপসারণ করে গণমুখী রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রবর্তন করা জরুরি রাজনৈতিক কর্তব্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তিনি যোগ করেন, এমতাবস্থায় ১৮৬১ সালের ঔপনিবেশিক ও নিপীড়নমূলক পুলিশি ব্যবস্থা বিলুপ্ত করে স্বাধীন দেশের উপযোগী গণবান্ধব, মানবিক ও নৈতিক পুলিশি ব্যবস্থা প্রবর্তন করতে হবে। যে পুলিশি ব্যবস্থা গণতন্ত্র, জনগণের মৌলিক অধিকার এবং মানবাধিকারসহ সাংবিধানিক চেতনাকে প্রাধান্য দেবে।

জেএসডি সভাপতি বলেন, ‘অবিলম্বে পুরনো ঔপনিবেশিক পুলিশি ব্যবস্থা বিলোপ এবং আধুনিক পুলিশি ব্যবস্থা প্রবর্তনে আইন বিশেষজ্ঞ, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, সমাজ ও মনোবিজ্ঞানী, অপরাধ বিশেষজ্ঞ, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, প্রযুক্তিবিদ এবং পেশাজীবীসহ সব অংশীজন সমন্বয়ে পুলিশ সংস্কার কমিশন গঠন করতে হবে।’