বঙ্গবন্ধুকে আমরা তার প্রাপ্য সম্মান দিতে পারিনি: কাদের সিদ্দিকী

কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে আমরা তার প্রাপ্য সম্মান দিতে পারিনি। কারণ আমাদের মতো অপদার্থ ভক্ত থাকলে বঙ্গবন্ধু ধুয়ে-মুছে যাবে, এটা কেউ ঠেকাতে পারবে না।’

মঙ্গলবার (১৭ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে বাংলাদেশ পিপলস পার্টি ঈদ পুনর্মিলনী ও আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সভার সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ পিপলস পার্টির (বিপিপি) চেয়ারম্যান মো. বাবুল সরদার চাখারী।

কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বারবার বলেন, বঙ্গবন্ধুকে মোছা যাবে না। আমরা তো বঙ্গবন্ধুকে মানুষের অন্তর থেকে মুছে ফেলছি। নতুন প্রজন্মের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর জন্য মায়া নেই, ভালোবাসা নেই। বর্তমান সরকারের ব্যর্থতা, বঙ্গবন্ধুর ব্যর্থতায় পর্যবসিত হচ্ছে। এখন থেকে বেরিয়ে আসা দরকার।’

তিনি বলেন, ‘আজ জয় বাংলা স্লোগান জাতীয় স্লোগান করা হয়েছে। আইন করা হয়েছে। সংসেদে পাশ করা হয়েছে। কিন্তু মানুষের অন্তরে এটা নেই। এই স্লোগান আমাদের ত্রুটির কারণে অনেক দূরে সরে গেছে।’

সিনিয়র এই রাজনীতিবিদ বলেন, ‘দেশের রাজনীতিতে পরিবর্তন আনতে একটা জিনিসের অভাব। যেটার কারণে সাফলতা আসবে না, সেটা হলো জনগণের সম্পৃক্তা। জনগণ শুধু শেখ হাসিনাকে চায় না তা নয়, অন্য নেতাদেরও চায় না। সেটা খালেদা জিয়াকেও বলা যেতে পারে, তারেক রহমানকেও বলা যেতে পারে। একটু বদল হওয়া দরকার। সেই বদলটা এখন পর্যন্ত হয়নি।’

আলোচনা সভায় গণফোরামের সভাপতি মোস্তফা মোহসীন মন্টু বলেন, ‘এই দেশের স্বাধীনতা এমনি আসেনি, নির্বাচন এমনি আসেনি। নির্বাচনি গণতন্ত্রকে রক্ষা করার জন্য আমাদের রক্ত দিতে হয়েছে, সংগ্রাম করতে হয়েছে। তারপর আমরা গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পেয়েছি। আজ সেই বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর উদযাপন করছি, কিন্তু কষ্ট হয়, এখনও আমরা সেই গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন করছি। গণতন্ত্র আজ রাজপথে হারিয়ে গেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘একটা নির্বাচন আমরা চাই, যে নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু ও নিরেপেক্ষ হবে। এর জন্য আমাদের একটাই কাজ, আমরা যেন বিচ্ছিন্নতাই না যাই। এইটা অর্জন করতে যেয়ে যেন পথ হারিয়ে না ফেলি, সে বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে।’

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, ‘অধিকাংশ রাজনৈতিক দল এই সরকারের অধীনে নির্বাচন করতে রাজি নয়। বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছি আমরা।’

মান্না বলেন, ‘আমরা একই কথা বলবো, একই দিনে একই কর্মসূচি দেবো। আমরা অনেক দূর এগিয়েছি। যারা মনে করেন, আমরা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কোনও কাজ করছি না। তারা একটা কথা ভুলে যাবেন না, রাজনীতির লড়াই, নীতির লড়াই।’

বাংলাদেশ পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান মো. বাবুল সরদার চাখারীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন–ন্যাশনাল পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি জগলুল হায়দার আফ্রিক, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, এবি পার্টির চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন প্রমুখ।