ইসির মেরুদণ্ড সোজা আছে: ইসলামী ঐক্যজোট

বর্তমান নির্বাচন কমিশন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে সক্ষম বলে মনে করে ইসলামী ঐক্যজোট। নির্বাচন কমিশনকে উদ্দেশ করে দলটির মহাসচিব মুফতি ফয়জুল্লাহ বলেছেন, অনেকে আপনাদের সমালোচনা করছেন। বলছেন আপনাদের মেরুদণ্ড সোজা নয়। তবে আমরা মনে করি আপনাদের মেরুদণ্ড শক্তিশালী, সোজা আছে।

মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংলাপে তিনি এ সব কথা বলেন। দুপুর ১২টায় এ সংলাপ শুরু হয়।

পার্টির চেয়ারম্যান আবুল হাসনাত আমিনীর নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি সংলাপে অংশ নেয়। এর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির সঙ্গে ইসির সংলাপ অনুষ্ঠানের কথা থাকলেও দলটি আসেনি।

সংলাপের শুরুতে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, জাতীয় সাধারণ নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটা দিয়েই সংসদ সদস্যরা নির্বাচিত হন। এভাবে উঠে আসবে কেবিনেট বা সরকার। অনেক সময় তর্ক-বিতর্ক হয় যে ভোটাররা নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারেন না। আমরা এই বিষয়টাই আলোচনা করবো।

 

সংলাপে ইসলামী ঐক্যজোট ইভিএম ব্যবহারসহ ৯ দফা প্রস্তাব তুলে ধরে—

১। কারও প্ররোচনায় নয়, বরং অন্তরের তাগিদেই অনুসন্ধানের ভিত্তিতে বিচার বিবেচনার নিরিখে ভোট প্রদানের পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। নির্বাচনকালে প্রার্থী ও ভোটাররা যাতে শ্বাসরুদ্ধকর বা বিভীষিকাময় পরিস্থিতির অশুভ থাবায় আক্রান্ত না হয়, সেদিকে নির্বাচন কমিশনকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। নির্বাচনে অনৈতিকভাবে জেতার প্রয়াসকে প্রতিহত করার পদক্ষেপ নিতে হবে।

২। পোলিং বুথে সব প্রার্থীর এজেন্টদের নির্ভয়ে কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।

৩। প্রতিটি কেন্দ্রের নির্বাচনি ফলাফল জনসমক্ষে ঘোষণা করতে হবে এবং প্রত্যেক প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোটের সার্টিফিকেট ইস্যু বাধ্যতামূলক করতে হবে।

৪। নির্বাচনের সময় প্রতিটি নির্বাচনি এলাকা মূল্যায়ন করে প্রয়োজনে স্পর্শকাতর এলাকায় সেনাবাহিনী নিয়োগ করা যেতে পারে। কিন্তু ঢালাওভাবে নিয়োগের প্রয়োজন নেই। নির্বাচন কমিশনের উদ্যোগে সকল প্রার্থীর নাম, দল ও প্রতীকের উল্লেখ সম্বলিত অভিন্ন পোস্টারের ব্যবস্থা করতে হবে। এতে অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল যোগ্য প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগ পাবেন। নির্বাচনকালে প্রার্থীদের সকল রঙিন পোস্টর, ব্যানার ও অহেতুক আঞ্চলিক অফিস স্থাপন বন্ধ করতে হবে।

৫। তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচন পরবর্তী সরকার গঠন পর্যন্ত বিদ্যমান সরকার শুধু রুটিন ওয়ার্ক করবে। এমন কোনও পরিকল্পনা নিতে পারবে না, যাতে ভোটাররা প্রভাবিত হতে পারে।

৬। নির্বাচনি বিরোধ পাঁচ বছরেও শেষ না হওয়ার বর্তমান পদ্ধতি পরিবর্তন করে অভিযোগ তিন মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির বিধান করতে হবে।

৭। নির্বাচনকে কালো টাকা ও পেশীশক্তির প্রভাবমুক্ত রাখার পদক্ষেপ নিতে হবে।

৮। নৈতিক স্খলনের অভিযোগে দণ্ডিতদের সংসদ নির্বাচনে প্রতিযোগিতার সুযোগ বাতিল করতে হবে।

৯। যে সকল দল নির্বাচনে ৩০-এর অধিক প্রার্থী মনোনয়ন দেবে, সেসব দলকে সরকারি প্রচারমাধ্যমে প্রচারণা চালানোর সুযোগ দেওয়ার বর্তমান নিয়ম বহাল রাখতে হবে।