সেক্রেটারি জেনারেল গোলাম পরওয়ারের দাবি

‘স্বাধীনতা, ভাষা আন্দোলনে ঐতিহাসিক ভূমিকা রেখেছে জামায়াত’

সদ্য কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়া বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল, সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ‘দেশ গঠন, স্বাধীনতা, ভাষা, গণঅভ্যুত্থান, স্বৈরাচারবিরোধী, ফ্যাসিবাদবিরোধী যত আন্দোলন হয়েছে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সঠিক ইতিহাস ধরে রাখার, আন্দোলনকে সঠিক ধারায় প্রবাহিত করার জন্য ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করে আসছে।

মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর একটি মিলনায়তনে শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। শাখার প্রচার বিভাগের সহকারী আব্দুল্লাহ সাইফের সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়েছে।

মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসকে সঠিকভাবে সামনে আসতে দেওয়া হয়নি। বারবার ষড়যন্ত্র করা হয়েছে, ইতিহাস ছিনতাই করা হয়েছে। আজকে এই প্রজন্মের দায়িত্বই হলো— ইতিহাস থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে সঠিক ইতিহাসকে তুলে ধরা।’ তিনি উল্লেখ করেন, ইতিহাস বিকৃতিকারী অপরাধীদের চিহ্নিত করা সময়ের দাবি হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আজকে ফ্যাসিবাদী-কর্তৃত্ববাদী সরকার আমাদের সব অধিকারের টুটি চেপে ধরে, অধিকারকে পদদলিত করতে চায়। ভাষা আন্দোলনের শিক্ষাকে ধারণ করে, দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে সব জুলুম অত্যাচার, কর্তৃত্ববাদী সরকারের বিরুদ্ধে অকুতোভয় ও নির্ভীকভাবে আন্দোলন এগিয়ে নিতে হবে।’

অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘যেকোনও জাতির সভ্যতা নির্মাণে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান, দেশপ্রেমিক সাহসী পুরুষরা ইতিহাস রচনা করে যান। ভাষার জন্য যারা সংগ্রাম করেছেন, তাদের প্রায় সসবাই ছিলেন মুসলিম ছাত্রনেতা। অধ্যাপক গোলাম আযম, প্রিন্সিপাল আবুল কাশেম, দেওয়ান মুহাম্মদ আজরফ, নুরুল হক ভুইয়া, মওলানা আকরাম খান— তারা সকলেই মুসলিম ছিলেন। পরবর্তীকালে কিছু ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী বিদেশি মতবাদের ধারক -বাহকরা আন্দোলনের মধ্যে ঘাপটি মেরে, এই আন্দোলনকে নানাভাবে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে। এমনকি ভাষা আন্দোলনে যারা জীবন দিয়েছিলেন, তারা সবাই মুসলমান ছিলেন। তাদের স্মরণ করা তো তাদের সংস্কৃতিতেই পালিত হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু তা না করে অপসংস্কৃতি আমদানি করে, ইসলামী আকিদাবিরোধী ধারা তৈরি করে, তাদের স্মারণ করার ধারা চলছে। যার সঙ্গে শিরক জড়িত।’

কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন— কেন্দ্রীয় মজলিশে মুরার সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির আবদুস সবুর ফকির, কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি দেলাওয়ার হোসেন ও কামাল হোসাইন, কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরার সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক মোকাররম হোসাইন, ড. মোবারক হোসাইন, মহানগরীর কর্মপরিষদ সদস্য আবদুস সালাম প্রমুখ।

প্রসঙ্গত, চলতি ফেব্রুয়ারির ৮ তারিখে মুক্তি পেয়েছেন জামায়াত সেক্রেটারি মিয়া গোলাম পরওয়ার। ২০২১ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ভাটারা থানার সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর তাকে একাধিক মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে রিমান্ডে নেওয়া হয়। এরপর থেকেই কারাগারে আটক ছিলেন তিনি।