রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথে নামতে হবে: মান্না

নাগরিক ঐক্যর সভাপতি মাহামুদুর রহমান মান্না বলেছেন, সরকার পতনের আন্দোলনে আদর্শগত ভেদাভেদ ভুলে সব রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথে নামতে হবে। সরকারের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বলতে হবে, আপনারা না যাওয়া পর্যন্ত আমরা যাবো না।

রবিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। দেশকে বহুমুখী সংকট থেকে উত্তরণ, মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হকসহ কারাবন্দি জাতীয় নেতাদের মুক্তি এবং পাঠ্যপুস্তক থেকে বিতর্কিত লেখা বাতিলের দাবিতে ওই বৈঠকের আয়োজন করা হয়।

সবাইকে জোটবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মান্না বলেন, ‘৭ জানুয়ারি দেশে কোনও নির্বাচন হয়নি। ৯৫ ভাগ মানুষ ভোট দেয়নি। এবার নির্বাচনের পর সরকারের ওপর থেকে দেশ-বিদেশের শ্রদ্ধা চলে গেছে। মানুষ আবারও ঘুরে দাঁড়াতে চায়। যারা যে দলের আদর্শ মেলে চলেন তারা জোটবদ্ধ হন, নিজেরা নিজেদের মতো আন্দোলন চালিয়ে যান। সবাই মিলে সরকারকে হটাতে পারলে একটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হবে।’

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি বলেন, ‘এক দফার আন্দোলন এখনও জীবিত। ২০১৮ সালের পর রাতে ভোট ডাকাতির পর কোনও প্রতিবাদ করতে পারিনি। কিন্তু এবার ৭ জানুয়ারি আগে থেকে এখন পর্যন্ত আমরা রাজপথে আছি। এই সরকারের পতন খুব সামনে। এরা রিজার্ভ বাড়াতে পারবে না, এলসি খুলতে পারবে না, দ্রব্যমূল্য কমাতে পারবে না। কারণ এরাই সিন্ডিকেট, আর সিন্ডিকেটই সরকার।’

ডাকসুর সাবেক এই ভিপি বলেন, ‘গত ১৫ বছর সরকারকে হটাতে না পেরে হতাশার কিছু নেই। মানুষ হতাশ নয়।’

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, ‘আজ বাংলাদেশে আগুন লাগিয়ে দিচ্ছে ভারতীয় আধিপত্য। আর সহায়তা করছে শেখ হাসিনার সরকার। ধীরে ধীরে বাংলাদেশকে ভারতের ওপর নির্ভরশীল করে ফেলা হয়েছে। আজকে নারকেল, কচুরমুখীও ভারত থেকে আমদানি করা হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহ ছিল একটা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীকে পঙ্গু করে দেওয়া হয়েছে। আজ পর্যন্ত একটা নিরপেক্ষ তদন্ত হয়নি, কোনও তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ হয়নি।’

সভাপতি বক্তব্যে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সিনিয়র নায়েব আমীর ইউসুফ আশরাফ বলেন, ‘মওলানা মামুনুল হকসহ সব রাজনৈতিক নেতাকে মুক্তি দিতে হবে। না হলে আমরা রাজপথে আন্দোলন মাধ্যমে দাবি আদায় করবো।’

গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেন, ‘সরকার দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। অথচ দোষ চাপাচ্ছে বিএনপির ওপর। দেশের প্রতিটি সেক্টর ধ্বংস করে ভারতের ওপর নির্ভরশীল করা হয়েছে। আগামী দিনে রাজপথের আন্দোলন আরও জোরালো হবে।’ 

বৈঠকে আরও বক্তব্য রাখেন খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আব্দুল কাদের, এবি পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক তাজুল ইসলাম, এনডিএম চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ, মুসলিম লীগের মহাসচিব কাজী আবুল খায়ের প্রমুখ।