জানা গেছে, শুক্রবার জুমার নামাজের পর সারাদেশে বিক্ষোভ করবে হেফাজতে ইসলাম। কর্মসূচির অংশ হিসেবে চট্টগ্রামের আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ উত্তর গেটে কেন্দ্রীয় হেফাজতের উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে ২০১৩ সালের ৫ মে ১৩ দফা দাবি সামনে নিয়ে কর্মসূচি পালন করে সংগঠনটি।
এদিকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর পুরানা পল্টনে হাউজবিল্ডিং চত্বরে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিলের রিটের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে। দলটির মহাসচিব মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেন, ‘সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিলের চক্রান্ত বন্ধ না হলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। ২৭ মার্চ রিট শুনানির দিন দেশব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হবে। এদিন রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বেলা ১২টায় জমায়েত ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হবে। রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম একটি মীমাংসিত বিষয় এবং এ দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানের প্রাণের সঙ্গে মিশে আছে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম। কাজেই রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম নিয়ে যেকোনও ষড়যন্ত্র ইসলামী জনতা দেশবাসী জীবন দিয়ে রুখবে।’
এদিকে হেফাজতের কর্মসূচিতে সমর্থন দিয়েছে ইসলামী আইন বাস্তবায়ন কমিটি। সংগঠনটির আমির মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাস বলেন, ‘সাম্রাজ্যবাদী ইংরেজ বেনিয়াগোষ্ঠী ৬৭ বছর আগে বিদায় হলেও তাদের এজেন্টদের রেখে গেছে। এরাই এখন ২৮ বছর আগের একটি পুরনো রিটকে তড়িঘড়ি করে সচল করার মাধ্যমে সুপরিকল্পিতভাবে সংবিধান থেকে রাষ্ট্রর্ধম ইসলামকে বাদ দেওয়ার ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে।’
ইসলামী আইন বাস্তবায়ন কমিটির মহাসচিব মাওলানা আবুল হাসানাত আমিনী বলেন, ‘রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাদ দেওয়া সংখ্যাঘরিষ্ঠ মানুষের ধর্ম বিশ্বাস এবং ঈমান-আকিদার ওপর চরম আঘাত। প্রাণ থাকতে এ দেশের মুসলমানরা তা মেনে নেবে না।’
হেফাজতের মহাসচিব জুনাইদ বাবুনগরী বলেন, “রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে ইসলামের অবস্থান অবশ্যই একটি গণতান্ত্রিক অধিকার, সংখ্যাগরিষ্ঠের মতের অনুকূল। প্রয়োজনে গণভোটের মাধ্যমে এর নিষ্পত্তি করা হোক। ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল ঘোষিত বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ ও সমাজতন্ত্রের কোনও উল্লেখ ছিল না।”
প্রসঙ্গত, স্বৈরশাসক এইচ এম এরশাদ ১৯৮৮ সালের ৫ জুন সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে ইসলামকে সংযুক্ত করেন। একই বছর সাবেক প্রধান বিচারপতি কামাল উদ্দিন হোসেনসহ ১৫ জন বিশিষ্ট নাগরিক এর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেন। রুল দেওয়ার পর দীর্ঘ ২৩ বছর আবেদনটি হাইকোর্টে বিচারাধীন ছিল। গত ২৯ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টে এই রুলের ওপর শুনানি হয়। পরবর্তী শুনানির দিন ২৭ মার্চ।
/সিএ/এএইচ/
/আপ-এএ/