‘ফ্যাসিস্টের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি, তারপরও আমাকে অ্যারেস্ট করা হয়েছে’

বাংলাদেশ পিপলস পার্টির (বিপিপি) চেয়ারম্যান বাবুল সরদার চাখারী বলেছেন, ‘ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি। শেখ হাসিনা, জাতীয় পার্টির বিরুদ্ধে মামলা করেছি। তারপরও আমাকে অ্যারেস্ট করেছে। কত বড় স্বৈরাচার এই ইউনূস সরকার।’

বুধবার (১৮ জুন) আদালত থেকে কারাগারে নিয়ে যাওয়ার পথে উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি এসব কথা বলেন। এদিন ২০২৩ সালে পল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশে গণঅধিকার পরিষদের কর্মী বদরুল ইসলাম সায়মনকে হত্যাচেষ্টা মামলায় তাকে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। এর আগে  মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পল্টন মডেল থানার এসআই বিমান তরফদার বাবুল সরদার চাখারীর ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। আদালত আসামির উপস্থিতিতে রিমান্ড শুনানির দিন বুধবার (১৮ জুন) ধার্য করেন। এদিন শুনানিকালে তাকে আদালতে হাজির করা হয়।

ঢাকার মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম মিজবাহ উর রহমানের আদালত রিমান্ডের বিষয়ে শুনানি হয়। রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন। বাবুল সরদার চাখারীর পক্ষে কোনও আইনজীবী ছিলেন না। আদালতের অনুমতি নিয়ে কথা বলেন তিনি।

বাবুল চাখারী আদালতকে বলেন, আমি কখনও আওয়ামী লীগ করিনি। আমি ২০ দলে আছি। প্রসিকিউশনে ফারুক ভাই আছেন তিনি জানেন। আমার বিরুদ্ধে চারটা হত্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। জামিন পেয়ে গেট (জেলখানার গেট) বের হবো, তখন আটকে দিয়েছে।

তিনি বলেন, ‘২০২১ সাল থেকে আমি ২০ দলে। কীভাবে আমি আওয়ামী লীগে গেলাম এবং ভাঙচুর করলাম। হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা করেছি। আপনার কাছে বিচার চায়। কীভাবে ফ্যাসিবাদের সঙ্গে যুক্ত হলাম? আপনার কাছে বিচার চাই।’

আদালত থেকে কারাগারে নিয়ে যাওয়ার পথে চিৎকার করে সাংবাদিকদের উদ্দেশে বাবুল চাখারী বলেন, ‘এই সরকার স্বৈরাচার সরকার। আন্দোলন করার পরও যদি আমাকে জেল খাটতে হয়। ৮ মাস জেল খাটছি, এই সরকারের অত্যাচারে।’ 

তিনি বলেন, ‘বিএনপির ২০ দলের নেতা আমি। তারপরও আমাকে জেল খাটতে হয় এই সরকারের আমলে। আমি আওয়ামী লীগ করিনি কখনও। তারপরও আমার বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে। এই সরকার স্বৈরাচারী আচরণ করছে। ড. ইউনূস ও আইন উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করছি। অন্যায়ভাবে আমাকে অত্যাচার করছে। এদেশে আইন বলতে কিছুই নেই। পুলিশ একটার পর একটা মামলা দেয়। জেলখানা থেকে বের হতে পারে না কেউ। এটা কোন ধরনের আইন, কোর্ট জামিন দেয়, আপনারা অ্যারেস্ট করেন।’

বাংলাদেশ পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘শপথ অনুষ্ঠান (অন্তর্বর্তী সরকারের) পর্যন্ত ডাক পেয়েছি, এখনও কার্ড পাই। আমি কীভাবে স্বৈরাচার হলাম, ফ্যাসিবাদ হলাম বলেন।’

স্বামীকে দেখতে আদালতে উপস্থিত হন তার স্ত্রী দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নাজমা আক্তার। তিনি বলেন, ‘৫ আগস্টে পর আমরা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কথা বলেছি। আন্দোলন করেছি। গত ১৮ নভেম্বর তাকে (বাবুল চাখারী) বাসা থেকে ডেকে নিয়ে আটক করা হয়। তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ দিলো পুলিশ। কিন্তু তাকে চাঁদাবাজির মামলা দিলো না কেন? তাকে এসব মামলায় (হত্যা মামলা) গ্রেফতার দেখানো হলো।’

নাজমা আক্তার বলেন, ‘গত ১৬ বছর আমরা কেউ ভোট দিতে পারেনি। এই ১৬ বছর কী এমনি এমনি আন্দোলন করলাম। এক ফ্যাসিস্ট সরকার গেল আরও রয়ে গেছে। আমি মনে করি, বর্তমানে আইন উপদেষ্টা আওয়ামী লীগের দোসর। এখনও আওয়ামী লীগের অনেক দোসররা বসে আছে। তারা এখনও ঘুরে বেড়াচ্ছে।’