করোনা মোকাবিলায় ওয়ালটনের ফেস শিল্ড ও সেফটি গগলস

ফেস প্রোটেকটিভ শিল্ড ও সেফটি গগলসের মোল্ড তৈরি হচ্ছেকরোনাভাইরাস মহামারি মোকাবিলায় পরিপূর্ণ ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জামের (পিপিই) জন্য ‘ফেস শিল্ড’ ও ‘সেফটি গগলস’ অত্যাবশ্যকীয়। চিকিৎসকদের মতে, এগুলো মানসম্পন্ন না হলে কোভিড-১৯ রোগীদের সেবা দেওয়া নিরাপদ নয়। কিন্তু বিশ্বব্যাপী রফতানিকারক দেশগুলো এসব সুরক্ষা সরঞ্জাম সরবরাহ করতে হিমশিম খাচ্ছে।

এমন দুর্যোগপূর্ণ সময়ে দেশেই বিশ্বমানের ‘ফেস প্রোটেকটিভ শিল্ড’ ও ‘সেফটি গগলস’ তৈরি করলো ওয়ালটন। প্রাথমিকভাবে স্বাস্থ্যকর্মীদের এগুলো বিনামূল্যে সরবরাহ করছে ইলেক্ট্রনিক্স প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানটি। জরুরি প্রয়োজনে স্বল্পতম সময়ে নিজস্ব কারখানায় মোল্ড ও নকশা চূড়ান্ত করে উৎপাদনে যাওয়ায় সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীদের ধন্যবাদ জানিয়েছে ওয়ালটন কর্তৃপক্ষ।

জানা গেছে, প্রাথমিকভাবে দৈনিক ১ হাজার গগলস এবং দেড় হাজার ফেস শিল্ড তৈরি করছে ওয়ালটন। তবে চাহিদা অনুযায়ী এর তিনগুণ উৎপাদন সক্ষমতা রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির। এগুলো ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অনুমোদন পেয়েছে। সারাদেশের চিকিৎসকদের মাঝে বিতরণের জন্য সরকারি এই সংস্থাকে শনিবার (১১ এপ্রিল) আনুষ্ঠানিকভাবে ফেস শিল্ড ও সেফটি গগলস হস্তান্তর করে ওয়ালটন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অধিদফতরের অতিরিক্ত পরিচালক জেনারেল অধ্যাপক সানিয়া তাহমিনা, প্রোগ্রাম ম্যানেজার (নন-কমিউনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোল) ডা. মো. রিজওয়ানুল করিম, ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. মোহাম্মদ মারুফুর রহমান, ওয়ালটনের ফেস শিল্ড এবং সেফটি গগলস উৎপাদন প্রকল্পের সমন্বয়ক প্রকৌশলী আপেল মাহমুদ।

ওয়ালটন কারখানায় মোল্ড ও ডাইয়ের কাজ চলছেওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক প্রকৌশলী গোলাম মুর্শেদ বলেন, ‘সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী কারখানাসহ অফিস ছুটি থাকলেও দেশের জরুরি প্রয়োজনে ওয়ালটনের প্রকৌশলীরা দিনরাত কাজ করছেন। দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রাথমিকভাবে উৎপাদনে গেলেও ফেস শিল্ড এবং গগলসের মানোন্নয়নের কাজ চলমান রয়েছে। শিগগিরই এন্টি-ফগ প্রযুক্তির গগলস তৈরি হবে। পাশাপাশি ভেন্টিলেটর, পিএপিআর (পাওয়ার এয়ার পিউরিফায়ার রেসপিরেটর), ইউভি ডিসইনফেকট্যান্ট, রেসপিরেটরি মাস্ক ইত্যাদি চিকিৎসা সরঞ্জাম তৈরিতে কাজ চলছে।’

কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসায় ভেন্টিলেটর খুবই জরুরি। ভেন্টিলেটর তৈরিতে বিশ্বখ্যাত মেডিক্যাল যন্ত্র প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান মেডট্রনিকের নকশা নিয়ে ওয়ালটন কারখানায় কাজ চলছে। এতে সার্বিক দিকনির্দেশনা দিচ্ছে সরকারের আইসিটি মন্ত্রণালয়।

ওয়ালটনের নির্বাহী পরিচালক উদয় হাকিম বলেন, ‘দেশে আগে থেকেই সুরক্ষা স্যুট, মাস্ক, গ্লাভস, স্যু কভার, হেড ক্যাপ ইত্যাদি আইটেম তৈরি হচ্ছিল। এবারই প্রথম ব্যাপক আকারে ফেস শিল্ড ও গগলসের মতো পণ্য তৈরি শুরু করলো ওয়ালটন। পরিস্থিতি বুঝে দেশের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি এসব মেডিক্যাল পণ্য রফতাানি করা সম্ভব হবে।’

ওয়ালটন কর্তৃপক্ষ জানায়, সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় চিকিৎসকদের বিনামূল্যে এসব সুরক্ষা সরঞ্জাম দিচ্ছে ওয়ালটন। শিগগিরই আন্তর্জাতিক বাজারের তুলনায় স্বল্পমূল্যে বাণিজ্যিক উৎপাদনে যাবে প্রতিষ্ঠানটি।