মাশরাফির আগে এই মাইলফলক ছুয়েঁছেন হাবিবুল বাশার সুমন ও সাকিব আল হাসান। সবার উপরে বর্তমান নির্বাচক হাবিবুল বাশার। ৬৯ ম্যাচে অধিনায়কত্ব করে বাংলাদেশকে জিতিয়েছেন ২৯টি ম্যাচ। অন্যদিকে বর্তমান টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক সাকিবের নেতৃত্বে বাংলাদেশ ৫০ বার মাঠে নেমেছে। যেখানে সাকিবে জিতেছেন ২৯টি ম্যাচে।
ম্যাচ সংখ্যায় রবিবার সাকিবকে ছুঁলেও বাশারকে ছুঁতে প্রয়োজন আর মাত্র দুটি জয়। নিজের অধিনায়কত্বের ৫০তম ম্যাচটি জিততে পারলে বাশারের থেকে একটি ম্যাচ দূরে থাকবেন মাশরাফি। যদিও শতাংশ হিসেবে বেশ আগেই সাবেক অধিনায়ক বাশারকে ছাড়িয়ে গেছেন তিনি। মাশরাফির অধিনায়কত্বে ৪৯ ওয়ানডের মধ্যে বাংলাদেশ জেতে ২৭ ম্যাচে এবং ২০ ম্যাচ পরাজয়ের পাশাপাশি একটি ম্যাচ হয় পরিত্যক্ত। এখানে মাশরাফির সাফল্যের হার দাঁড়াচ্ছে ৫৭.৪৪ শতাংশ। যেখানে বাশারের সাফল্যের হার ৪২.০২ শতাংশ ও সাকিবের সাফল্যের হার ৪৬.৯৩ শতাংশ। শতাংশের হিসেবে নিশ্চিত ভাবেই এগিয়ে মাশরাফি।
প্রায় ৯ বছর আগে পাওয়া অধিনায়কত্বটা এখন পর্যন্ত ঠিকভাবে পালন করতে পারলেও নিশ্চিতভাবেই আরও অনেক দূর যেতেন অধিনায়ক মাশরাফি! ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে প্রথমবারের মতো অধিনায়কের দায়িত্ব পান তিনি। কিন্তু প্রথম টেস্টেই ইনজুরিতে পড়ে হারান সেই দায়িত্ব। প্রথম টেস্টে দেশে ফিরে আসায় ওয়ানডে সিরিজে আর অধিনায়কত্ব করা হয়ে উঠেনি।
পরের বছর ইনজুরি কাটিয়ে ২০১০ সালে ৫০ ওভারের ক্রিকেটে অধিনায়ক মাশরাফির অভিষেক হয়। সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ব্রিস্টলে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ঐতিহাসিক পাঁচ রানের জয়টা এসেছিল মাশরাফির নেতৃত্বেই। ২৫ বলে ২২ রান ও ৪২ রান খরচায় দুই উইকেট নিয়ে জিতেছিলেন ম্যাচসেরার পুরস্কার। দুটি ম্যাচ ঠিকমতো খেলে আবারো ইনজুরি ডাক দেয় মাশরাফিকে। সেই ডাকে সারা দিয়ে আবারো দল থেকে ছিটকে যাওয়ার পাশাপাশি অধিনায়কত্ব হারান ‘নড়াইল এক্সপ্রেস’।
২০১৪ সালে তৃতীয় দফায় সীমিত ওভার ক্রিকেটে নেতৃত্বে ফেরেন মাশরাফি। ফিরেই বাজিমাত, তার নেতৃত্বে জিম্বাবুয়েকে ৫-০ ব্যবধানে হারায় বাংলাদেশ। সব কিছু ছাপিয়ে যায় ২০১৫ সাল। অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো দেশকে নিয়ে যান কোয়ার্টার ফাইনালে। এরপর দেশে ফিরে পাকিস্তান, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দলকে মাশরাফির নেতৃত্বে হারিয়েছে বাংলাদেশ। শুধু তাই নয়, মাশরাফির অধীনেই প্রথমবারের মতো আইসিসি ওয়ানডে র্যাংকিংয়ের ছয়ে ওঠে বাংলাদেশ দল। তাতে করে ১১ বছর পর আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। এতকিছু সব মাশরাফির নেতৃত্বেই হয়েছে।
যদিও ২১০৫ সালের সাফল্যটা সেভাবে ধরা দেয়নি ২০১৬ সালে। ওই বছর বাংলাদেশ ৯ ম্যাচে জয়ের দেখা পায় তিনটি ম্যাচে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ জিতলেও একটি হারে কলঙ্ক লেপ্টে আছে। চলতি বছরে সাফল্যের হার অনেকটা আগের বছরের মতোই। মাশরাফিবাহিনী ১২ ওয়ানডের মধ্যে জিতেছে চারটি ম্যাচে। এই বছরের শেষ ওয়ানডে ম্যাচটি প্রোটিয়াদের বিপক্ষে খেলতে নেমেছে মাশরাফিরা। বছরের শেষটার পাশাপাশি মাশরাফির মাইলফলকের এই ম্যাচটি জিতে সাফল্যকে রাঙিয়ে তুলবে বাংলাদেশ-এমন আকাঙ্ক্ষা নিয়েই টিভি সেটের সামনে বসেছে দর্শকরা।
ওয়ানডেতে নেতৃত্ব দেওয়া বাংলাদেশ অধিনায়ক
নাম | ম্যাচ | জয় | হার | পরিত্যক্ত | সাফল্যের হার |
|
হাবিবুল বাশার | ৬৯ | ২৯ | ৪০ | ০ | ৪২.০২ |
|
সাকিব আল হাসান | ৫০ | ২৩ | ২৬ | ১ | ৪৬.৯৩ |
|
মাশরাফি বিন মুর্তজা | ৪৯ | ২৭ | ২০ | ২ | ৫৭.৪৪ |
|
মোহাম্মদ আশরাফুল | ৩৮ | ৮ | ৩০ | ০ | ২১.০৫ |
|
মুশফিকুর রহিম | ৩৭ | ১১ | ২৪ | ২ | ৩১.৪২ |
|
খালেদ মাসুদ | ৩০ | ৪ | ২৪ | ২ | ১৪.২৮ |
|