তাহলে হিসেবটা খুব সোজা! মেসি-রোনালদো যুগ শেষ হলেই ব্যালন ডি’অর উঠবে ব্রাজিলের মহাতারকা নেইমারের হাতে। না, এই সময়ের প্রভাবশালী একজন ফুটবলার তা মনে করেন না। কে তিনি? তিনি জর্জো কিয়েল্লিনি। ৩৫ বছর বয়সী জুভেন্টাসের সেন্টার ব্যাক ও অধিনায়কের চোখে মেসি-রোনালদোর উত্তরসূরি হতে চলেছেন নেইমারেরই পিএসজি সতীর্থ কিলিয়ান এমবাপ্পে।
সম্প্রতি নিজের আত্মজীবনী প্রকাশ করেছেন কিয়েল্লিনি, নাম ইয়ো, জর্জো (আমি, জর্জো)। তাতেই লিখেছেন, মেসি-রোনালদো খেলা ছাড়ার পর ফ্রেঞ্চ লিগ-১ এর সর্বোচ্চ গোলদাতা এমবাপ্পেরই পরবর্তী ব্যালন ডি’অরটা প্রাপ্য।
গত মার্চ মাসে করোনাভাইরাসের তাণ্ডবে মাঠের ফুটবল স্থগিত হওয়ার আগে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৩৩ ম্যাচে ৩০ গোল করে এমবাপ্পে বুঝিয়েও দিয়েছেন কেন তাকেই পরবর্তী সেরা বলছেন কিয়েল্লিনি।
‘ক্রিস্টিয়ানো ও মেসি খেলা শেষ করলে কে হতে যাচ্ছে পরবর্তী বিশ্বতারকা? অবশ্যই ফ্রেঞ্চম্যান কিলিয়ান এমবাপ্পে, সত্যিকারের এক অনন্য খেলোয়াড়’-ইয়ো জর্জোতে লিখেছেন কিয়েল্লিনি।
২০১৬-১৭ চ্যাম্পিয়নসলিগে ম্যানচেস্টার সিটির সঙ্গে মোনাকোর হয়ে এমবাপ্পেকে টিভিতে প্রথম খেলতে দেখেন কিয়েল্লিনি। প্রথম দেখাতেই তাকে ভালো লেগে যায়। প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার পর সাবেক ফুটবলার ও জুভেন্টাসের বর্তমান কর্মকর্তা ফাবিও পারাতিসিকে জিজ্ঞেস করেন, ‘খেলোয়াড়টি কে? কোন গ্রহ থেকে এসেছে?’ পারাতিসির উত্তর ছিল, ‘হ্যাঁ, আমি জানি। আমরা তাকে বেশ কিছু সময় ধরে দেখছি… অদম্য এক স্ট্রাইকার, মাত্র ১৮ বছর বয়স এখন তার।’ কিয়েল্লিনির বর্ণনায়, ‘আমরা সে বছরই ইউরোপে তার মুখোমুখি হই। সেমিফাইনালে। তার বয়স এখন ২১ চলছে এবং সে এরই মধ্যে বিশ্বকাপ জয়ী। তার গতি আছে, টেকনিক আছে, আছে সহজাত ফুটবল বোধ… কোনও কিছুতেই ঘাটতি নেই তার।’ ২০১৮ সালে ইতালি দল থেকে অবসর নেওয়া ডিফেন্ডার পরের বাক্যটিতেই লিখেছেন এমবাপ্পে সম্পর্কে সবচেয়ে চমকে দেওয়া কথা, ‘সে এমন এক খেলোয়াড় যার খেলা মুগ্ধ করে এবং অমূল্য শিল্পকর্মের মতো মনে হয়। আমি বলবো, সে নেইমারের চেয়ে ভালো, বেশি ধারাবাহিক। ভবিষ্যতটা তারই হতে যাচ্ছে।’
আত্মজীবনী মানে একজন বিখ্যাত মানুষের অনেক অজানা কথা আর কিছু বিতর্কের অবতারণা। জুভেন্টাসে সাবেক দুই সতীর্থ ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার ফেলিপে মেলো ও ইতালিয়ান স্ট্রাইকার মারিও বালোতেল্লির খুল্লামখোলা সমালোচন করেছেন। মেলোকে বলেছেন ‘পচা আপেল’, বালোতেল্লিকে বলেছেন ‘নেতিবাচক চরিত্র, দলের প্রতি যার শ্রদ্ধাবোধ নেই।’ ২০১৩ সালে কনফেডারেশনস কাপের প্রসঙ্গ তুলে বলেছেন, বালোতেল্লির গালে কষে চড় মারা উচিত ছিল। পরে অবশ্য বালোতেল্লির কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন।
করোনাভাইরাস মহামারিতে পুরো পৃথিবী আক্রান্ত, গোটা ইতালি বিপর্যস্ত। আর এর মধ্যে কিনা আত্মজীবনী প্রকাশ! কিয়েল্লিনি বলেছেন, ইনসুপারবিলি নামের দাতব্য সংস্থার মাধ্যমে করোনাদুর্গতের সাহায্য করতেই এই উদ্যোগ।