সাঙ্গাকারার মুখে ২০১১ বিশ্বকাপ ফাইনালের দুবার টসের গল্প

২০১১ বিশ্বকাপ ফাইনালের টস২৮ বছর পর ভারত তাদের দ্বিতীয় বিশ্বকাপ জেতে ২০১১ সালে। জয় ধরা দিয়েছিল মহেন্দ্র সিং ধোনির হেলিকপ্টার শটের ছক্কায়। ভারতবাসীর কাছে সততই মধুর সেই স্মৃতি। সেদিনের বিজিত শ্রীলঙ্কান অধিনায়ক কুমার সাঙ্গাকারার সঙ্গে ইনস্টাগ্রাম লাইভ আড্ডায় সেই স্মৃতিটা আবার তুলে আনলেন ভারতের অফ স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিন। ওই বিশ্বকাপের টস নিয়ে একটা বিভ্রান্তি ছিল। ‘অ্যাশের সঙ্গে স্মৃতিচারণ’ শীর্ষক কথোপকথনের সাম্প্রতিক পর্বে সাঙ্গাকারা জানালেন, ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামের জনসমুদ্রের গর্জনে সেদিন কথাই শোনা যাচ্ছিল না, তাই দুবার টস করতে বাধ্য হয়েছিলেন দুই অধিনায়ক।

সাঙ্গাকারা ৯ বছর পেছনে ফিরে তাকিয়ে বলেন, ‘দর্শকসংখ্যা ছিল বিশাল। শ্রীলঙ্কায় কখনও এমনটা দেখা যায় না। একবার ইডেন গার্ডেনে (কলকাতা) এমন বিপুল দর্শক দেখেছিলাম, যে কারণে প্রথম স্লিপের ফিল্ডারের সঙ্গে আমি কথাই বলতে পারছিলাম না। আর অবশ্যই সেদিনের ওয়াংখেড়েতে (মুম্বাই)। টসে কল করার কথা আমার মনে আছে, কিন্তু মাহি (ধোনি)  নিশ্চিত ছিল না। সে আমাকে বলে, “তুমি কি টেইল বলেছো?”, আমি বললাম, “ না, আমি হেড বলেছি”।’

বিষয়টির বিশদ বিবরণই দিয়েছেন সাঙ্গাকারা, ‘ম্যাচ রেফারিই বলে দিয়েছিলেন যে আমি টস জিতেছি। কিন্তু মাহি বললো, না। একটা বিভ্রান্তি তৈরি হলো এবং মাহি প্রস্তাব করলো কয়েনটা আবার টস করা হোক। এবারও উঠলো হেড।’

দুবারের টসেই ক্রিকেট-বিধাতা শ্রীলঙ্কান অধিনায়কের দিকে তাকিয়ে হেসেছেন। তবে টস জয়টা তার জন্য সৌভাগ্য না দুর্ভাগ্য বয়ে এনেছিল, এ নিয়ে সাঙ্গাকারার নিজের ভেতরকার দোলাচলটি এখনও যায়নি। তার বিশ্বাস, ধোনি টসটা জিতলে ভারতই হয়তো প্রথমে ব্যাট করতো এবং ইতিহাসটা লেখা হতে পারতো অন্যভাবে। কারণ ভারত তাদের বেঁধে দেওয়া ২৭৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করে ১০ বল হাতে রেখেই ম্যাচ জিতে নেয় ৬ উইকেটে। ভারতের দ্বিতীয় বিশ্বকাপ জয়ের উল্লাসের পাশে সেটি ছিল শ্রীলঙ্কার নিদারুণ এক ব্যর্থতার গল্প। টানা দ্বিতীয়বার ফাইনাল উঠে পরাজয়ের যন্ত্রণায় পুড়তে হয় তাদের।

উল্টোটাও তো ঘটতে পারতো। যেমন ভারত টস জিতে প্রথমে ব্যাট করলো, আর শ্রীলঙ্কা তাদের  রান তাড়া করে জিতলো। তাহলে ভারতের আগেই দ্বিতীয় বিশ্বকাপ শিরোপা জেতা হয়ে যায় লঙ্কানদের। ১৯৯৬ বিশ্বকাপ জয়ের ১৫ বছর পর আবার!

ফাইনালে না গিয়ে ট্রফি জিততে না পারার এই হতাশায় এখনও পুড়তে হয় সাঙ্গাকারাকে, ‘আমরা জিতি বা হারি, কীভাবে এটিকে নিতে হয় তা আমাদের সয়ে গেছে। হাসির আড়ালে লুকিয়ে রাখি দু:খ, হতাশা এবং শ্রীলঙ্কার ২ কোটি মানুষের মুখ যারা সেই ১৯৯৬ সাল থেকে অপেক্ষায় আছে। ২০১১ সালে আমরা সুযোগ পেয়েছি, সুযোগ পেয়েছি ২০০৭ সালে, তারপর টি-টোয়েন্টিতে ২০০৯ ও ২০১২ সালে।’