ডিআরএস থাকলে আগেই ‘পারফেক্ট টেন’ হতো কুম্বলের!

অনিল কুম্বলে - ফাইল ছবিটেস্ট ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি উইকেটশিকারী মুত্তিয়া মুরালিধরনের উইকেট ৮০০, শেন ওয়ার্নের ৭০৮, ভারতের অনিল কুম্বলে ৬১৯ উইকেট নিয়ে আছেন তৃতীয় স্থানে। কুম্বলে প্রায় ১০০ উইকেট পেছনে তার অন্য দুই প্রতিদ্বন্দ্বী স্পিনারের চেয়ে। তবে একটা জায়গায় অনেক এগিয়ে। ইংল্যান্ডের জিম লেকারের পর টেস্টের এক ইনিংসে ১০ উইকেট আর কারো নেই। আসলে আন্তর্জাতিক এই দুজন ছাড়া ইনিংসে ১০ উইকেট আর কেউ নিতে পারেননি।

১৯৯৯ সালে দিল্লি টেস্টে পাকিস্তানের বিপক্ষে এই ‘পারফেক্ট টেন’ কুম্বলের কাছে চির অমলিন স্মৃতি। ভারতের সাবেক অধিনায়ক ও কোচ মনে করেন সেই সময় ডিআরএস (ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম) থাকলে আরও আগেই পেয়ে যেতেন ১০ উইকেট।

ইতিহাসের পাতা থেকে কুম্বলের ১০ উইকেট পাওয়ার রেকর্ড কেউ মুছে ফেলতে পারবে না। তবে এখনও অনেকে পেছন ফিরে এটির দিকে একটু সন্দেহের চোখে তাকান। তখনও দুই প্রান্তেই নিরপেক্ষ আম্পায়ার দাঁড়ানোর নিয়মটা চালু হয়নি। এক প্রান্তে থাকতেন স্বাগতিক দেশের আম্পায়ার অন্য প্রান্তে নিরপেক্ষ আম্পায়ার। এই টেস্টে স্বাগতিক আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন এভি জয়প্রকাশ, ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্টিভ বাকনর নিরপেক্ষ আম্পায়ার। এবং কী আশ্চর্য, ১০টি সিদ্ধান্তেই আঙুল তুলেছিলেন এ ভি জয়প্রকাশ।

ফিরোজ শাহ কোটলার ওই টেস্টে একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে আপত্তি ছিল সফরকারী পাকিস্তানের। ওপেনার শহীদ আফ্রিদিকে কট বিহাইন্ড দিলে তিনি সেটি মানতে চাননি। পরে জয়প্রকাশ বলেন, তিনি পরিষ্কার ব্যাট-বলের শব্দ শুনেই সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন এবং তা নিয়ে তার বিন্দুমাত্র সংশয় জাগেনি। অবশ্য ম্যাচ রেফারি আফ্রিদিকে জরিমানাও করেন আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশ করায়।

কিন্তু কুম্বলেকে খোঁচা সইতে হয়েছে আম্পায়ার জয়প্রকাশ ও তিনি বেঙ্গালুরুর বলে! এটা নাকি তার পক্ষে গেছে!

সম্প্রতি ভারতের অফস্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিনের টক-শো ‘ডিআরএস উইথ অ্যাশে’ কুম্বলে কোনওরকম আনুকূল্য পাওয়ার কথা অস্বীকার করে বলেছেন সেই সময় ডিআরএস থাকলে আরও আগেই তার ১০ উইকেট হয়ে যেত। ‘হ্যাঁ, এরকম কথা ওঠে বটে যে এভি জয়প্রকাশ বেঙ্গালুরুর লোক। কিন্তু এটা খুব ভুল ভাবনা এবং আম্পায়ারকে পক্ষপাতিত্বের দোষ দেওয়াটা অন্যায়। তখন যদি ডিআরএস থাকতো আমি তো আরও আগেই ১০ উইকেট পেয়ে যাই। আমি এভাবেই দেখি বিষয়টিকে।’

পেছন ফিরে দেখলে কুম্বলে তার ওই অবিস্মরণীয় অর্জনকে মেনে নেন দলীয় প্রচেষ্টা হিসেবে। ফাস্ট বোলার জাভাগাল শ্রীনাথ তাকে ১০ উইকেট থেকে বঞ্চিত করতে পারতেন। কিন্তু কুম্বলের যখন ৯ উইকেট হয়ে যায় শ্রীনাথ ‘প্রাণপন চেষ্টা’ করেছেন যাতে তিনি উইকেটশূন্য থাকেন, তাই বারবার স্টাম্পের বাইরে বোলিং করেছেন। শ্রীনাথের বলে শেষ ব্যাটসম্যান ক্যাচ তুললে এস রমেশ ক্যাচের জন্য ছোটেন, কিন্তু অন্য ফিল্ডাররা সমস্বরে চিৎকার করতে থাকেন ‘ড্রপ, ড্রপ’। অবশ্য ক্যাচটি ছিল তার নাগালের বাইরে, তারপরও রমেশ প্রায় সেটি নিয়েই ফেলেছিলেন। কুম্বলে স্মরণ করেন, ‘আমার মনে হয় না রমেশ ইচ্ছে করে ক্যাচ নিতে গিয়েছিল। বিষয়টি তার মাথায় আসেনি।’