বাবাকে ‘সারপ্রাইজ’ দিতে পেরে খুশি অনিক

কাজী অনিকগত ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে অভিষেক হয়েছিল যুব দলের পেসার কাজী অনিক ইসলাম। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে নিজের প্রথম মৌসুমেই জাতটা চেনান এই তরুণ। বড়দের বিপক্ষে ৮ ম্যাচে ৯ উইকেট তাকে এনে দিয়েছে প্রতিভাবানের স্বীকৃতি।  আবাহনীতে ভালো করার ফলাফলটা কিছুদিনের মধ্যেই পেলেন বিপিএলে সুযোগ পেয়ে। শনিবার দুপুরে প্লেয়ার ড্রাফট থেকে রাজশাহী কিংস তাকে কিনে নেয়। আর বাংলাদেশের ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় যোগ দেওয়ার খবরটি তার বাবা কাজী বশিরুল ইসলামের জন্য ‘সারপ্রাইজ’ ছিল জানালেন অনিক।

বিপিএলে এবার ৫ লাখ টাকায় তাকে কিনেছে রাজশাহী। গতবারের রানার্সআপ দলে সুযোগ পাওয়ায় রোমাঞ্চিত অনিক। তবে বাবাকে এ খুশির খবর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আনন্দিত তিনি, “বিপিএলে ভালো সুযোগ পেয়েছে তারাই, যারা অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ খেলেছে। সেই দিক থেকে এতো তাড়াতাড়ি এখানে সুযোগ পেয়ে আমি খুব খুশি। আমার জন্য এটা অনেক বেশি আনন্দের ব্যাপার। তবে এ খবরে সবচেয়ে বেশি খুশি হয়েছেন আমার বাবা।  তিনি অল্পতেই দুশ্চিন্তা করেন। গতবার ধ্রুব (আফিফ আহমেদ) বিপিএলে সুযোগ পাওয়ার পর থেকেই তিনি বলছিলেন, ‘ধ্রুব সুযোগ পেয়েছে, তোর কিংবা অন্য কারও সুযোগ হলো না।’ বাবা মনে করছেন, তার ছেলে অনূর্ধ্ব-১৫ থেকে শুরু করে পর্যায়ক্রমে অনূর্ধ্ব-১৯ দলে আছে। এর মধ্যে কোথাও বাদ পড়েনি। প্রিমিয়ার লিগে আবাহনীর হয়েও ভালো করেছে। সব মিলিয়ে বাবা বিষয়টা নিয়ে বেশি ভাবছিলেন। ড্রাফট হওয়ার আগের রাতে আমাকে বাবা জিজ্ঞাসা করেছিলেন ‘তোর নাম কি থাকবে?’ আমি বলেছি নাও থাকতে পারি। তবে শেষ পর্যন্ত রাজশাহী আমাকে নিয়েছে। আর বাবাকে সারপ্রাইজ দিতে পেরেছি বলে খুব ভালো লাগছে।” 

প্রিমিয়ার লিগে মোহামেডান ও গাজী গ্রুপের বিপক্ষে দুই ম্যাচে অনিক তার আসল রূপ দেখিয়েছেন। প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের বুকে এক প্রান্ত থেকে কাঁপনও ধরিয়েছেন তরুণ এ পেসার। আবাহনীতে ভালো করাতেই কি বিপিএলে সুযোগ? এমন প্রশ্নের উত্তরে অনিক বলেছেন, ‘চেষ্টা ছিল প্রিমিয়ার লিগে ভালো বল করার, সবকিছু মিলিয়ে আমি খুশি। কারণ প্রিমিয়ার লিগে ওটাই আমার প্রথম বছর ছিল। আর আবাহনীতে খেলতে পারাটা ভাগ্যের ব্যাপার। কারণ আবাহনীতে সবাই চাইলেই খেলতে পারে না। আমি চেষ্টা করেছি যতটুকু সম্ভব ভালো করার।’

চলতি মাসের শেষ দিকে আফগাস্তিানের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলবে যুবারা। এরপর নভেম্বরের শুরুতে মালয়শিয়াতে এশিয়া কাপ খেলতে যাবে মিশু-সাইফরা, যাবেন অনিকও। ওখান থেকে ফিরেই বিপিএলে কয়েকটি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবেন তিনি। এই কারণেই আপাতত বিপিএল নিয়ে ফোকাস করতে চান না তিনি, ‘বিপিএল আন্তর্জাতিক মানের টুর্নামেন্ট। এখানে উঁচু মানসিকতা থাকতে হয়। সবকিছু মিলিয়ে নিখুঁতভাবে করতে হয়। সামনের সিরিজগুলো থেকে কিছু শেখার চেষ্টা করবো। তবে এই মুহূর্তে আমি বিপিএল নিয়ে চিন্তা করছি না। সামনে আমাদের যে দুটি সিরিজ আছে, আফগানিস্তান ও এশিয়া কাপ ওই দুইটাতে ভালো করার চেষ্টা থাকবে।’

পেসার হয়েও ব্যাটসম্যানের দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত হচ্ছেন অনিক, ‘ক্রিকেট এখন আগের মতো নেই। দলের জন্য সবারই কিছু না কিছু দায়িত্ব থাকে। শুরুতেই ৬-৭টি উইকেট পড়ে গেলে বোলারদের কিছু রান করার দায়িত্ব থাকে। তিনটা বোলার যদি ২০ করে ৬০ রান করে সেটা আমাদের দলের জন্য ভালো হয়। এগুলো নিয়ে আমি কাজ করছি।’