‘শুধু ব্যাটসম্যান নয়, দায়িত্ব নিতে হবে বোলারদেরও’

মোহাম্মদ আশরাফুলপ্রায় ৯ বছর পর দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। এই দীর্ঘ সময়ে অনেক বদলে গেছে টাইগাররা। গত কয়েক বছরের সাফল্যে বাংলাদেশ এখন অনেক আত্মবিশ্বাসী, পরিণত। ২০০৮ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যাওয়া অনেকেই এখন জাতীয় দলের বাইরে। তাদের নিয়ে বাংলা ট্রিবিউনের এই ধারাবাহিক আয়োজন। আজ থাকছে ওই সফরে বাংলাদেশের অধিনায়ক মোহাম্মদ আশরাফুলের কথা।

ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকা সবসময়ই কঠিন প্রতিপক্ষ। আশরাফুলের বিশ্বাস, প্রোটিয়াদের মাটিতে সাফল্যের জন্য ব্যাটসম্যানদের পাশাপাশি বোলারদের বাড়তি দায়িত্ব নেওয়া প্রয়োজন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকাকে ২৫০ রানের মধ্যে অলআউট করতে হবে। সেখানে বোলাররা জ্বলে উঠতে না পারলে ম্যাচে টিকে থাকা কঠিন, বিশেষ করে টেস্টে। তাই আমাদের বোলারদের বাড়তি দায়িত্ব নিয়ে বোলিং করতে হবে। নিউজিল্যান্ড সফরে বোলাররা তেমন ভালো করেনি। ওখানে একটা টেস্টে প্রথম ইনিংসে ৫৯৫ রান করেও আমরা হেরেছিলাম বোলারদের বাজে পারফরম্যান্সের কারণে। তাই দক্ষিণ আফ্রিকায় বোলারদের ভালো করা খুব জরুরি। ব্যাটসম্যানদের চেয়ে বোলারদের দায়িত্ব কোনও অংশে কম নয়।’

রুবেল হোসেনের টেস্ট ম্যাচের সংখ্যা ২৪টি। তবে রুবেল ছাড়া বাংলাদেশ দলের অন্য পেসাররা খুব বেশি টেস্ট খেলার সুযোগ পাননি। আশরাফুলের অবশ্য পেসারদের ওপরে যথেষ্ট আস্থা আছে, ‘অভিজ্ঞতা বড় কথা নয়, আসল কথা হলো মাঠে নেমে পরিকল্পনার সঠিক বাস্তবায়ন। দলে রুবেল-মোস্তাফিজ-শফিউলের মতো প্রতিভাবান পেসার আছে। এমনকি শুভাশীষও শ্রীলঙ্কা সফরে ভালো খেলেছিল।’

৯ বছর আগের সফরে থাকা বেশ কয়েকজন আছেন এবারের দলে। তাদের অভিজ্ঞতা কাজে আসবে বলেই আশরাফুলের বিশ্বাস, ‘মাশরাফি, সাকিব, তামিম, মুশফিক আর ইমরুলের সেখানে খেলার অভিজ্ঞতা আছে। এটা আমাদের উপকারে আসবে। প্রস্তুতি ম্যাচে বাংলাদেশ খারাপ খেলেনি। অভিজ্ঞদের পাশাপাশি তরুণদের পারফরম্যান্স টাইগারদের ভালো করতে সাহায্য করবে।’

প্রোটিয়াদের মাটিতে ভালো খেলা যে কোনও দলের জন্যই কঠিন। তবে টেস্ট ক্রিকেটের সর্বকনিষ্ঠ সেঞ্চুরিয়ানের ধারণা, গত কয়েক বছরের উজ্জ্বল পারফরম্যান্স বাংলাদেশকে অনুপ্রাণিত করবেই, ‘শুধু বাংলাদেশ নয়, দক্ষিণ আফ্রিকায় সব দলকেই কঠিন পরিস্থিতিতে পড়তে হয়। অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ডের মতো দলও সমস্যায় পড়ে সেখানে। তবে আমরা প্রায় আড়াই বছর ধরে ভালো ক্রিকেট খেলছি। দুজন ব্যাটসম্যানও বড় ইনিংস খেলতে পারলে স্কোরবোর্ডে যথেষ্ট রান উঠবে।’

৬১ টেস্ট, ১৭৭ ওয়ানডে ও ২৩টি টি-টোয়েন্টি খেলার অভিজ্ঞতায় ঋদ্ধ আশরাফুলের কণ্ঠে ব্যাটসম্যানদের ইতিবাচক হওয়ার আহ্বান, ‘অবশ্যই ইতিবাচক ব্যাটিং করতে হবে। টেস্ট ক্রিকেটে কখনোই রান না করে সেট হওয়া যায় না। একজন ব্যাটসম্যান যদি মনে করে অনেকক্ষণ ক্রিজে থাকার পর রান নেবে, তাহলে ভুল করবে। ক্রিজে সেট হওয়ার জন্য অবশ্যই রান করতে হবে ব্যাটসম্যানকে।’

দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে টেস্ট ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিতে প্রথম ইনিংসে বড় সংগ্রহের বিকল্প নেই বলেই মনে করেন তিনি, ‘শুরু থেকেই ব্যাটসম্যানদের মনোযোগ ধরে রেখে খেলতে হবে। ওখানে যারা স্ট্রোক ভালো খেলতে পারে, তাদের পক্ষে রান করা সহজ। প্রথম ইনিংসে ভালো ব্যাটিং খুব জরুরি। শুরুতে বড় স্কোর গড়তে পারলে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ আমাদের হাতে চলে আসবে।’

সবশেষে আশরাফুল জানালেন, টেস্ট সিরিজে সাকিবের অনুপস্থিতির কারণে মুশফিকের অবশ্যই উচিত উইকেটরক্ষকের দায়িত্ব পালন করা, ‘সাকিব না থাকায় বাড়তি একজন ব্যাটসম্যান বা বোলার খেলাতে হবে। ব্যাটিং অর্ডারে মুশফিককে ওপরে রেখে লিটনকে দিয়ে কিপিং করানোর চিন্তা-ভাবনা করছে টিম ম্যানেজমেন্ট। তবে আমার মনে হয়, সাকিব নেই বলে মুশফিকের কিপিং করা উচিত। দল হতে পারে এরকম- সাত জন ব্যাটসম্যান,  তিনজন পেসার ও একজন অফস্পিনার।’