২০০৬ সালের ৬ আগস্ট হারারেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে দিয়ে শুরু আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার। এরপর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারকে। দেখতে দেখতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কাটিয়ে দিয়েছেন এক যুগ। বাংলাদেশকে অনেক সাফল্য এনে দেওয়া সাকিব আসলেই ‘বাংলাদেশের জান, বাংলাদেশের প্রাণ, সাকিব আল হাসান’।
বাংলাদেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন এখন তিনি। দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের সুবাদে বিশ্বের প্রায় সব ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে খেলার সুযোগ পেয়েছেন সাকিব। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) পাশাপাশি ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল), পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল), ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (সিপিএল), ইংল্যান্ডের টি-টোয়েন্টি ব্ল্যাস্ট আর অস্ট্রেলিয়ার বিগ ব্যাশ লিগে খেলেছেন।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সব ফরম্যাট মিলে সবচেয়ে কম সময়ে ১০ হাজার রান করার পাশাপাশি ৫০০ উইকেট শিকারের কৃতিত্ব সাকিবের। এই মাইলফলক ছোঁয়া অন্য দুই ক্রিকেটার হলেন শহীদ আফ্রিদি ও জ্যাক ক্যালিস। তবে কীর্তিটা গড়তে পাকিস্তান আর দক্ষিণ আফ্রিকার অলরাউন্ডারকে খেলতে হয়েছে পাঁচ শ’র বেশি ম্যাচ। অথচ সাকিব মাত্র ৩০০ ম্যাচ খেলেই স্পর্শ করেছে এই দুর্দান্ত মাইলফলক।
টেস্ট ক্রিকেটেও সাকিবের দারুণ একটা কীর্তি আছে। ২০১৪ সালের নভেম্বরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খুলনা টেস্টে সেঞ্চুরির পর ১০ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। সাকিবের আগে মাত্র দুজন অলরাউন্ডার এমন কীর্তি গড়তে পেরেছিলেন। দুজনই কিংবদন্তি—পাকিস্তানের ইমরান খান এবং ইংল্যান্ডের ইয়ান বোথাম। সাকিবের আরেকটি অর্জন—মাত্র চতুর্থ বোলার হিসেবে সব টেস্ট দলের বিপক্ষে ইনিংসে পাঁচ উইকেট শিকার করেছেন তিনি।
সবচেয়ে দীর্ঘ সময় এক নম্বর অলরাউন্ডারের মুকুট ধরে রাখার কৃতিত্বও তার। ২০০৯ সালের ২২ জানুয়ারি প্রথমবারের মতো আইসিসির ওয়ানডে অলরাউন্ডার র্যাংকিংয়ের শীর্ষে ওঠেন সাকিব। টেস্টে এক নম্বর অলরাউন্ডার হন ২০১১ সালে। আর টি-টোয়েন্টিতে অলরাউন্ডারদের শীর্ষাসনে বসেন ২০১৪ সালে। গত এক দশকে তিনি ক্রিকেট বিশ্বের অন্যতম আলোচিত অলরাউন্ডার। বর্তমানে টেস্ট আর ওয়ানডে র্যাংকিংয়ের এক নম্বর অলরাউন্ডারের নামও সাকিব আল হাসান।
২০০৯ সাকিবের জীবনের অন্যতম স্মরণীয় বছর নিঃসন্দেহে। সে বছর ‘আইসিসি ক্রিকেটার অব দ্য ইয়ার’ এবং ‘আইসিসি টেস্ট প্লেয়ার অব দ্য ইয়ার’ পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন পেয়েছিলেন তিনি। শচীন টেন্ডুলকার, জ্যাক ক্যালিস, গৌতম গম্ভীরের মতো ক্রিকেটারকে পেছনে ফেলে সে বছরই তিনি জিতে নিয়েছিলেন ‘উইজডেন টেস্ট প্লেয়ার অব দ্য ইয়ার’ পুরস্কার।