মুশফিক কিছুটা নরম স্বভাবের। ওই ঘটনার পর ভীষণ নার্ভাস হয়ে পড়েছিলেন দেশসেরা উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান। দেশে ফিরে ছেলে মোহাম্মদ শাহরোজ রহিম মায়ানকে আদর করে স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করছেন তিনি। রবিবার মুশফিকের বাবা মাহবুব হানিফ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছেন, ‘আজ বাসায় অনেক আত্মীয়-স্বজন এসেছিল। তাদের সঙ্গে কথা বললেও মুশফিক বেশিরভাগ সময় ছেলের সঙ্গেই ছিল। কাল রাতে বাসায় ফিরে ঘণ্টা খানেক বাচ্চার সঙ্গে খেলেছে। তবে ও খুব কম কথা বলছে। আমরা ওকে ওর মতো থাকতে দিচ্ছি।’
শুক্রবার ঘটনার পর থেকেই ভীষণ দুশ্চিন্তায় ছিলেন মুশফিকের বাবা-মা-স্ত্রী। মুশফিক সহ ক্রিকেটাররা নিরাপদে দেশে ফেরায় তারা এখন স্বস্তিতে। মাহবুব হানিফ বললেন, ‘ঘটনার পর থেকে আমাদের পরিবারের কেউ স্বস্তিতে ছিল না। মুশফিকের মা এবং আমার বউমা খুব টেনশনে ছিল। ও ঘরে ফেরার পর সব টেনশন দূর হয়েছে।’
মুশফিকের বাবা আরও বললেন, ‘আজ সকালে রিয়াদের (মাহমুদউল্লাহ) সঙ্গে কথা হচ্ছিল। রিয়াদ বলছিল, স্বয়ং আল্লাহ ওদের বাঁচিয়েছেন। অমন পরিস্থিতি থেকে তো বেঁচে ফেরার কথাই নয়!’
সেদিন দলের সঙ্গে ছিলেন সৌম্য সরকার। ঘটনার পর ফোন করে বাবাকে জানিয়ে দেন, নিরাপদে আছেন তিনি। সৌম্যর বাবা কিশোরী মোহন সরকার জানালেন, ‘ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই বাড়িতে ফোন করেছিল সৌম্য। পার্ক থেকে মাঠ, মাঠ থেকে হোটেল সব জায়গায় সে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিল। তবে বাবা-মার দুশ্চিন্তা কী আর এত সহজে যায়! আমরা বিসিবি কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম। ক্রিকেটাররা নিরাপদে আছে বলে তারা আশ্বস্ত করেছেন আমাদের। বিমানে ওঠার আগ পর্যন্ত সারাক্ষণ আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছে সৌম্য।’
আরেক বাঁহাতি ব্যাটসম্যান মুমিনুল হক এখন ঘুমের মধ্যেও চমকে উঠছেন। বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বললেন, ‘আল্লাহ নিজ হাতে আমাদের বাঁচিয়ে দিয়েছেন। ঘুমের ভেতরেও ওই ঘটনা তাড়া করছে আমাকে। লাঞ্চ করে মসজিদে গিয়েছি বলেই সময় নষ্ট হয়েছে, আর এটাই আমাদের বেঁচে যাওয়ার কারণ। এই ট্রমা থেকে বের হতে হয়তো কিছুদিন লাগবে। দেশে ফিরে পরিবারের সবার সঙ্গে সময় কাটাতে খুব ভালো লাগছে।’
দেশের বাতাসে নিঃশ্বাস নিতে পেরে মোহাম্মদ মিঠুনও স্বস্তিতে, ‘ঘটনার পর থেকেই আমরা চিন্তা করছিলাম কত তাড়াতাড়ি আমরা দেশে ফিরতে পারবো। যেভাবেই হোক আমরা ফিরে এসেছি। দেশের বাতাসে নিঃশ্বাস নিতে পেরে খুব ভালো লাগছে, প্রিয়জনদের কাছে পেয়ে স্বস্তি পাচ্ছি।’
ছবি: সাজ্জাদ হোসেন