দলগত নৈপুণ্য জিতিয়ে দিলো অস্ট্রেলিয়াকে

Lipu bhai picদিনশেষে কাগজে-কলমে ৪৮ রানে হেরে গেছে বাংলাদেশ। কিন্তু ব্যাটিংয়ে তাদের লড়াকু মনোভাবের কারণে জয় করেছে সবার মন। বাংলাদেশকে এই বিশ্বের অন্যতম সেরা ক্রিকেট দলের বোলিং ইউনিটের বিপক্ষে ব্যাট করতে হয়েছে এবং তা থেকে তারা ৩৩৩ রান সংগ্রহ করেছে। পক্ষান্তরে বিশ্ব ক্রিকেটের বোলিং ইউনিট হিসেবে এখনও আমরা যথেষ্ট উজ্জ্বল হয়ে উঠতে পারিনি। স্পিনের চেয়ে পেস বোলিং বেশ পিছিয়ে, তেমন অবস্থান থেকে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ৩৮১ রান। এই ব্যবধান হয়তো কমে যেত, যদি সাব্বির রহমান ডেভিড ওয়ার্নারের ক্যাচটি বা রান আউটের সুযোগটি হাতছাড়া না করতেন।

অস্ট্রেলিয়ার টপ অর্ডারকে ঘায়েল করার পরিকল্পনা সফল না হওয়ায় তারা তাদের আকাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছে গেছে। আমাদের দুর্ভাগ্য আমরা শেষ ম্যাচ জয়ী সেরা কম্বিনেশনের দলটাকে নিয়ে মাঠে নামতে পারিনি। সাইফউদ্দিনের অভাব রুবেল মেটাতে পারেননি, একইভাবে ফিল্ডিং ও ব্যাট হাতে সুযোগ পেয়ে সাব্বিরও দুর্ভাগ্যক্রমে জ্বলে উঠতে পারেননি।

৪৪ ওভারের মাথায় যখন অস্ট্রেলিয়া ২ উইকেটে ৩১৩ রান সংগ্রহ করে, তখন এটা পরিষ্কার খেলার শুরু থেকেই নতুন বা পুরোনো বলে আমাদের পেস বা স্পিন বোলিং মোটেই কর্যকর ছিল না। ব্যাট হাতে অস্ট্রেলিয়াই শাসন করেছে বলকে। বোলাররা যেমন নিয়মিত ব্রেক থ্রু পাননি, তেমনি রানের চাকাকেও নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেননি।

অনিয়মিত বোলার হিসেবে সৌম্য সরকার ছিলেন সফল। উইকেটগুলো তুলে নেওয়ার পেছনে তার বিচক্ষণতার পরিচয় ছিল দৃষ্টিনন্দন। প্রতি ম্যাচে আমাদের তিন বোলারের অন্তত ১০ ওভারের কোটা পূরণ করা উচিত। তাহলে বোঝা যাবে তার মূল দায়িত্বটি তিনি কতটা নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করতে পারছেন এবং যা পরবর্তীতে নির্বাচন প্রক্রিয়াকে স্বচ্ছতা দেবে ভবিষ্যৎ ম্যাচের একাদশ নির্বাচনের ক্ষেত্রে। ভালো ফিল্ডিং করে বোলিং ডিপার্টমেন্টকে সহায়তার কাজটি সঠিকভাবে করা হচ্ছে না, যেটা হতাশাজনক। পক্ষান্তরে অস্ট্রেলিয়া সৌম্যকে সরাসরি দারুণ থ্রোতে রান আউট করেছে এবং তাদের ইনার ও আউটার সার্কেলের গ্রাউন্ড ফিল্ডিং ছিল অসাধারণ। ন্যুনতম ১৫ রান বাঁচিয়েছে তারা।

৩৮২ রান তাড়া করা হয়তো যথেষ্ট কঠিন একটি কাজ, তবে তা অর্জন করার জন্য যথেষ্ট ভালো স্ট্রাইক রেট শুরুতেই তামিমের কাছে প্রত্যাশিত ছিল, বিশেষ করে সৌম্য আউট হওয়ার পর। তার অর্জিত রান মন্দ নয়, তবে এই স্ট্রাইক রেট মোটেও যথেষ্ট ছিল না দলকে অনুপ্রাণিত করতে। সাকিবকে ৪১ রানে ফেরত পাঠানো ছিল অস্ট্রেলিয়ার দলের অন্যতম সফলতা। লিটন দাসের আউটের সিদ্ধান্তটিও মনঃপূত হয়নি। তবে মুশফিকের দায়িত্বশীল ব্যাটিং ও মাহমুদউল্লাহর ম্যাচ জয়ের বাসনায় আক্রমণাত্মক ব্যাটিং উপভোগ্য ছিল। এককথায় দারুণ লড়েছে বাংলাদেশ। এমন লক্ষ্য অর্জন করতে হলে আগামীতে বল প্রতি রান সংগ্রহের লক্ষ্যে উন্নতি করার দিকে আরও মনোযোগী হতে হবে।