‘আন্ডারডগ’ হওয়াতেই উইলিয়ামসনের আনন্দ

সংবাদ সম্মেলনে উৎফুল্ল কেন উইলিয়ামসনরাউন্ড রবিন লিগের শেষ তিন ম্যাচ হারলেও বিশ্বকাপের প্রথম ৬ ম্যাচ অজেয় থাকায় সেরা চারের শেষ দল হয়ে সেমিফাইনালে উঠেছিল নিউজিল্যান্ড। টুর্নামেন্টের শুরু থেকে ‘আন্ডারডগ’ হিসেবে খেলে প্রথম পর্ব উতরে যাওয়া দলটিই সেমিফাইনালে হারিয়ে দেয় ‘ফেভারিট’ ভারতকে। ফাইনালেও তাদের সামনে ফেভারিট ইংল্যান্ড। শিরোপার দৌড়ে মনস্তাত্ত্বিকভাবে স্বাগতিকদের চেয়ে পিছিয়ে থাকবে কিউইরা, কিন্তু ‘আন্ডারডগ’ হিসেবে মাঠে নামায় উৎফুল্ল অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন।

লর্ডসে ফাইনালের আগে সবশেষ সংবাদ সম্মেলনে বোঝা গেলো কতটা নির্ভার কিউই অধিনায়ক। সাংবাদিকরা তার চোখেমুখে চাপের কোনও ছিটেফোটা খুঁজে পাননি। আন্ডারডগ বলেই কি ফাইনালে দেখিয়ে দেওয়ার তাড়না বেশি পাচ্ছেন? এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার আগেই হাসির রোল উঠলো পুরো সংবাদ সম্মেলন কক্ষে, হাসলেন উইলিয়ামসনও। হাসি থামিয়ে তিনি বললেন, ‘টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই আন্ডারডগ হিসেবে অনেকেই নিউজিল্যান্ডকে দেখছে। আসলে এটা আমাদের জন্যই ভালো। ইংল্যান্ড ফেভারিট মর্যাদা পাওয়ার দাবি রাখে। টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই তারা ফেভারিট ছিল। পুরো টুর্নামেন্টে খেলেছেও ভালো।’

এরপরই গম্ভীর কণ্ঠে ব্ল্যাক ক্যাপ অধিনায়ক বললেন, ‘কিন্তু আমরা যেমন ডগই হই না কেন, গুরুত্বপূর্ণ হলো নিজেদের খেলার দিকে ফোকাস করা। কিন্তু আমরা জানি কোনও দলকে হারাতে হলে ভালো ক্রিকেট খেলতে হবে। আমরা অনেকদিন ধরেই দেখছি, যে কেউ যে কাউকে হারাতে পারে তা ডগের ধরন যেমনই হোক (হাসি)।’

ঘুরেফিরে আসছে গত বিশ্বকাপের কথা, যেখানে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে টুর্নামেন্টের আয়োজক ছিল তারা। দক্ষিণ আফ্রিকাকে সেমিফাইনালে হারিয়ে প্রথমবার ফাইনালে উঠেছিল। কিন্তু মেলবোর্নে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে স্বপ্নভঙ্গ হয় তাদের। ৪ বছর পর আবারও ফাইনালে নিউজিল্যান্ড, উইলিয়ামসনের নেতৃত্বে এবারও তারা মুখোমুখি স্বাগতিকদের। ওই হতাশার পুনরাবৃত্তি হবে নাকি আরেকটি সুযোগ কাজে লাগিয়ে উৎসবে মাতবে কিউইরা, কে জানে?

কিন্তু উইলিয়ামসন কী মনে করছেন? অধিনায়কের সোজাসাপ্টা উত্তর, ‘আপনি কি আবারও ডগ নিয়ে কথা বলছেন? আন্ডারডগ (হাসি)? দেখুন, আমরা উপলক্ষটা মাতানোর জন্য সত্যিই মুখিয়ে আছি। এখনকার শুরু আর শেষটার মধ্যে অনেক তফাৎ আছে। কাজেই এটা (আন্ডারডগ) নিয়ে বেশি মাতামাতি কোনও কাজে দেবে না। মাঠে খেলতে নামলে অনেক চাপ ও অনেক ভিন্নধর্মী বিষয় সামলাতে হয়। আমরা এটুকু বলতে পারি, এই মুহূর্তে পুরো দল ফাইনাল খেলতে প্রস্তুত।’

ফাইনালে গ্যালারির বেশির ভাগ থাকবে ইংল্যান্ড সমর্থকদের দখলে। মাঠের পাশাপাশি গ্যালারির চাপও তাই সামলাতে হবে কিউইদের। অবশ্য এটা নিয়ে নির্ভাবনায় উইলিয়ামসন। পুরো টুর্নামেন্টের মতো ফাইনালেও যথেষ্ট সমর্থন পেতে আশাবাদী তিনি, ‘পুরো বিশ্বকাপে আমরা অনেক সমর্থন পেয়েছি। ঘরের মাঠের মতো তো আর সমর্থন পাওয়া যাবে না। যতখানি পেয়েছি, তাতেই আমি অভিভূত। পুরো টুর্নামেন্টে অনেক সমর্থন পেয়েছি, আশা করি ফাইনালেও তা বজায় থাকবে।’

স্বাগতিক হওয়ায় ইংল্যান্ডের ওপরও খানিকটা চাপ থাকবে। এটা থেকে নিউজিল্যান্ড কোনও ফায়দা পাবে কিনা জানতে চাইলে উইলিয়ামসনের জবাব, ‘স্বাগতিক হিসেবে কিছুটা চাপে তো তারা থাকবেই। তবে সত্যি কথা বলতে, চাপ সবার আছে। একেক জনকে একেক রকম চাপ নিতে হয়। এটা যে সবচেয়ে ভালোভাবে সামলাতে পারবে, তারাই জিতবে এবং এটাই বাস্তবতা। আমরা নিজেদের সেরাটা দিতে প্রস্তুত।’