টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা ভারত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে করে ১৪২ রান। বাংলাদেশের শুরু ভালো না হলেও নিগার সুলতানার পর রুমানা আহমেদের ব্যাটে জয়ের সম্ভাবনা একটু হলেও জেগেছিল। যদিও শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১২৪ রানে থামতে হয় বাংলাদেশের মেয়েদের।
শামিমা সুলতানার (৩) বিদায়ের পর দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে দাঁড়িয়ে যান মুর্শিদা খাতুন ও সানজিদা ইসলাম। মুর্শিদা ২৬ বলে ৪ বাউন্ডারিতে করেন ৩০ রান। আর সানজিদার ব্যাট থেকে আসে ১০। সানজিদার আউটের পরপরই ফারজানা হক (০) প্যাভিলিয়নে ফিরলে চাপে পড়ে বাংলাদেশ।
ওই জায়গা থেকে দলকে টেনে তোলেন নিগার। যোগ্য সঙ্গ পান ফাহিমা খাতুনের কাছ থেকে। আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে তারা স্কোরে রান জমা করেন। ফাহিমা ১৩ বলে ২ বাউন্ডারিতে করেন ১৭ রান। আর নিগার ২৬ বলে ৫ চারে করেন দলীয় সর্বোচ্চ ৩৫ রান। তার আউটের আগে বেশ ভালোভাবেই ম্যাচে ছিল বাংলাদেশ।
সব আশা যখন শেষ গেছে বলে মনে হচ্ছিল, ঠিক তখনই নতুন করে সম্ভাবনা জাগান রুমানা। আট নম্বরে নেমে ভারতীয় বোলারদের ওপর চাপ প্রয়োগ করেন। পরপর বাউন্ডারি হাঁকিয়ে আস্কিং রানরেট নামিয়ে আনেন। তাতে শেষ ওভারে জয়ের জন্য দরকার পড়ে ২২। কঠিন হলেও অসম্ভব ছিল না। কিন্তু শেষ ওভারের প্রথম বলে ৮ বলে ২ বাউন্ডারিতে ১৩ করা রুমানা বিদায় নিলে সেই সম্ভাবনাও শেষ হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত হারের হতাশা নিয়েই বিশ্বকাপ অভিযান শুরু হয় বাংলাদেশের।
আগের ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে গুঁড়িয়ে দেওয়া পুনম যাদব আবারও দেখালেন তার স্পিন জাদু। ৪ ওভারে মাত্র ১৮ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়ে তিনিই ভারতের সেরা বোলার। শিখা পান্ডে ও অরুন্ধতী রেড্ডি নিয়েছেন ২টি করে উইকেট।
শুরুর ওই ধাক্কা অবশ্য ভারত কাটিয়ে উঠেছিল শেফালি ভার্মা ও জেমিমা রদ্রিগেসের ব্যাটে। শেফালি ব্যাটে ঝড় তুলে খেলে যান ১৭ বলে ২ চার ও ৪ ছক্কায় ৩৯ রানের ইনিংস। পান্না ঘোষের শিকার হয়ে ফেরেন প্যাভিলিয়নে। খানিক পর এই পান্নাই তুলে নেন অধিনায়ক হারমানপ্রিত করের গুরুত্বপূর্ণ উইকেট। পয়েন্টে রুমানা আহমেদের হাতে ধরা পড়ার আগে ভারতীয় অধিনায়ক করেন ৮ রান।
বাংলাদেশের মেয়েদের ফিল্ডিং ছিল দেখার মতো। দুটো রান আউটে সেটির ছাপ। নাহিদা আক্তার ও উইকেটকিপার নিগারের চেষ্টায় জেমিমা যেভাবে আউট হলেন, এবারের বিশ্বকাপে নিশ্চিতভাবে অন্যতম সেরা মুহূর্ত হয়ে থাকবে। ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ঝাঁপিয়ে বল ঠেকিয়ে নাহিদা থ্রো করেন স্টাম্প বরাবর, দৌড়ে এসে নিগার বল গ্লাভসে নিয়ে ভেঙে দেন স্টাম্প। তাতে ৩৪ রানের শেষ হয় জেমিমার ইনিংস।
সালমা খাতুনের দ্বিতীয় শিকার হয়ে রিচা ঘোষ ফেরার পর দ্বিতীয় রান আউটটি ছিল চমকপ্রদ। ভারতের দুই ব্যাটার দিপ্তি শর্মা ও ভেদা কৃষ্ণমূর্তি দুজনই দাঁড়িয়ে গেলেন প্রতিদ্বন্দ্বীর ভূমিকায়! ফারজানা হকের থ্রো গ্লাভসে নেওয়া নিগার স্টাম্প ভাঙার আগে ভারতের দুজন ব্যাটারই একপ্রান্তে। রান আউট থেকে বাঁচতে একজন দৌড়ে দাগ ছুঁলেন, আরেকবার ড্রাইভ দিয়ে বাঁচতে চাইলেন। তাহলে কে আসলে আউট? অনেকক্ষণ রিপ্লে দেখার পর দিপ্তির আউটের সিদ্ধান্ত আসে। প্যাভিলিয়নে ফেরার আগে তিনি করেন ১১ রান।
শেষ দিকে ভেদা (২০*) ও শিখা পান্ডের (৭) ব্যাটে ৬ উইকেটে ১৪২ রান করে ভারত।
চমৎকার বোলিংয়ে সালমা ৪ ওভারে মাত্র ২৫ রান দিয়ে নেন ২ উইকেট। তার মতো ২ উইকেট শিকার পান্না ঘোষেরও, তিনিও ৪ ওভার দিয়েছেন ২৫।