টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ

টিকে থাকার লড়াইয়ে পাপুয়া নিউগিনির সামনে বাংলাদেশ

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এবারই প্রথম আগমন পাপুয়া নিউগিনির। তবে প্রশান্ত মহাসাগরের এই দ্বীপ রাষ্ট্রটি বাংলাদেশের কাছে মোটেও অচেনা নয়! একটা সময় আইসিসি ট্রফিতে নিয়মিতই তাদের সঙ্গে দেখা হতো বাংলাদেশের। সেই দলটিকেই আজ (বৃহস্পতিবার) বিশ্বকাপে পাচ্ছে মাহমুদউল্লাহরা। সুপার টুয়েলভে যেতে জয়ের বিকল্প নেই বাংলাদেশের সামনে, এমন সমীকরণ সামনে রেখে বাংলাদেশ সময় বিকাল ৪টায় ওমানের আল আমিরাত স্টেডিয়ামে পিএনজির বিপক্ষে নামছে লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। ম্যাচটি সরাসরি দেখা যাবে বিটিভি, গাজী টিভি ও টি স্পোর্টসে।

স্কটল্যান্ডের কাছে হারের পর মঙ্গলবার ওমানের বিপক্ষে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। স্বস্তির জয় এলেও পুরো ম্যাচ জুড়েই অনেক ভুল ছিল। পিএনজি শক্ত প্রতিপক্ষ না হলেও সুপার টুয়েলভের কথা চিন্তা করে ভুলগুলো শুধরে নেওয়া জরুরি। বিশেষ করে, পাওয়ার প্লেতে ব্যাটিং-বোলিং কোথাও ভালো করতে পারছে না বাংলাদেশ দল। দুই ম্যাচেই পাওয়ার প্লেতে রান তুলতে পারেননি ব্যাটাররা। স্কটিশদের বিপক্ষে ২৫ ও ওমানের বিপক্ষে ২৯ রান তুলেছে বাংলাদেশ। এই জায়গাতে ব্যাটারদের স্ট্রাইক রোটেট করা খেলা জরুরি। বোলিংয়ের ক্ষেত্রেও পাওয়ার প্লেতে খানিকটা খরুচে বোলাররা।

ওমানের বিপক্ষে ম্যাচ জেতার পর এই জায়গাতে সতীর্থদের উন্নতির তাগিদ দিয়েছেন বাংলাদেশের অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ, ‘আমরা কিছু জায়গায় উন্নতি করতে চাই। কিছু ভুল শোধরাতে চাই। আমি মনে করি, প্রথম ৬ ওভারের ব্যাটিংয়ে উন্নতি করা দরকার। এই সময়ের বোলিংয়েরও। শেষের দিকে বোলিংটা ভালো হচ্ছে, এটা স্বস্তির।’

ব্যাটিং-বোলিংয়ের পাশাপাশি ফিল্ডিংয়েও উন্নতি জরুরি। গ্রাউন্ড ফিল্ডিংয়ের পাশাপাশি লং ক্যাচ, হাই ক্যাচ মিস হচ্ছে প্রচুর। ওমানের বিপক্ষে বাঁচা-মরার লড়াইয়ের ম্যাচে বেশ কিছু ক্যাচ মিস করেছেন ফিল্ডাররা।

পিএনজির সঙ্গে ম্যাচ জিতলেও বাংলাদেশের গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন নিশ্চিত হবে না। তবে দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে স্কটল্যান্ডকে যদি ওমান হারিয়ে দিতে পারে, সেক্ষেত্রে ‘বি’ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই সুপার টুয়েলভে খেলতে পারবে মাহমুদউল্লাহরা। সাকিব অবশ্য গ্রুপ চ্যাম্পিন হওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী, ‘এখনও গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে আমাদের। স্কটল্যান্ড-ওমান ম্যাচের পরেই মূলত বিষয়টি বোঝা যাবে। কারণ, সেখানে স্কটল্যান্ড হারলে তাদের পয়েন্ট কমে যাবে এবং আমরা জিতলে আমাদের পয়েন্ট বাড়বে।’

ছোট দল হলেও পিএনজির বিপক্ষে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় যাওয়ার কথা নয় বাংলাদেশের। আগের একাদশ নিয়েই মাঠে নামার সম্ভাবনা বেশি। তবে শেষ মুহূর্তে একাদশে দুটি পরিবর্তন আসতে পারে। অনেকদিন ধরেই লিটন দাসের ব্যাটে রান নেই, রান পাননি স্কটল্যান্ড ও ওমানের বিপক্ষেও। সর্বশেষ পাঁচ ম্যাচে লিটনের ইনিংস যথাক্রমে- ১৫, ৬, ১০, ৫, ৬। এমন অবস্থায় পিএনজির বিপক্ষে তাকে একাদশের বাইরে রাখতে পারে টিম ম্যানেজমেন্ট। সেক্ষেত্রে ফিরতে পারেন সৌম্য সরকার। সৌম্য ফিরলে বোলিং অপশনও বাড়বে। সেক্ষেত্রে তাসকিন আহমেদকে বসিয়ে একাদশে সুযোগ দেওয়া হতে পারে বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদকে।

এদিকে নিজেদের প্রথম দুই ম্যাচ হারলেও কাগজে-কলমে সুপার টুয়েলভের আশা একেবারে শেষ হয়ে যায়নি পিএনজির। পরের রাউন্ডে যেতে হলে বাংলাদেশকে বড় ব্যব্যধানে হারানোর পাশাপাশি দিনের পরের ম্যাচে স্কটল্যান্ডকে বড় ব্যবধানে জিততে হবে। এমন সমীকরণ থাকলেও আদতে অসম্ভবই বলা যায়! যদিও পিএনজির লক্ষ্য পরের রাউন্ডে যাওয়া নয়, বাংলাদেশকে চমকে দিতে মূলত স্কটিশদের কাছ থেকেই অনুপ্রেরণা নিচ্ছে তারা।

ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে পিএনজি অলরাউন্ডার চার্লস আমিনি বলেছেন, ‘আমরা যদিও প্রথম দুই ম্যাচ হেরেছি, তারপরও এখনও সুযোগ আছে। স্কটল্যান্ড তাদের প্রথম ম্যাচে অঘটনের জন্ম দিয়েছে (বাংলাদেশকে হারিয়ে)। আমরা বিশ্বাস করি, আমাদেরও ঠিক একই কাজ (বাংলাদেশকে হারানো) করার সামর্থ্য আছে।’