সিলেটি ভাষা শেখার চেষ্টা করছেন মঈন আলী

মঈন আলী ইংল্যান্ডে খেললেও তার আলাদা একটা পরিচয় আছে। ইংলিশ এই ক্রিকেটার বাংলাদেশের জামাই! মূলত বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ফিরোজা হোসেনকে বিয়ে করার সুবাদেই এই পরিচয় তাকে আলাদা করে তুলে ধরে।  

মঈন আলী বিশ্বব্যাপী কুড়ি ওভারের ক্রিকেট ফেরি করে বেড়ান। তারপরও বাংলাদেশের প্রতি এই ক্রিকেটারের অন্যরকম টান। বিশেষ করে সিলেট তাকে বরাবরই টানে। এর কারণও আছে অবশ্য! এখানেই তো মঈনের শ্বশুর বাড়ি। 

বিপিএলে প্রথমবার তিনি খেলতে আসেন ২০১৩ সালে। সেবার দুরন্ত রাজশাহীর হয়ে মাঠে নেমেছিলেন। এবার দ্বিতীয়বারের মতো খেলতে এসে নাম লিখিয়েছেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সে। তবে মঈন প্রথমবার বাংলাদেশ আসেন ২০০৫ সালে অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে। ২০১০-১১ মৌসুমে ঢাকা লিগে খেলতে এসেছিলেন। জাতীয় দলের হয়েও বেশ কয়েকবার বাংলাদেশ সফরে খেলতে এসেছিলেন তিনি। কিন্তু কোনওবারই সিলেটে পা রাখা হয়নি। এবার বিপিএলের সুবাদে প্রথমবার নিজের শ্বশুর বাড়িতে এলেন ইংলিশ এই অলরাউন্ডার।

এমন সুযোগে মঈন আলীও দারুণ খুশি। রবিবার অনুশীলন শেষে সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, ‘‘বাংলাদেশও বাড়ি, পাকিস্তান-ইংল্যান্ড সবই আমার ঘর। সব আমার চোখে এক। আমার শ্বশুরবাড়ি এখানে। অনেক শ্রদ্ধা আছে আমার। সিলেটে আমার এবারই প্রথম আসা। ওরা আমাকে সবসময় বলত, ‘চলো সিলেটে যাই।’ কিন্তু সময় হয়ে ওঠেনি। এবার আসতে পেরে ভালো লাগছে। হতাশাজনক যে বাইরে যেতে পারছি না। তবে এখানে এসে ভালো লাগছে। আমার পরিবার এখানকার। খুবই খুশি।’’

অবশ্য এবার মঈন আলী একাই বাংলাদেশে আসেননি। স্ত্রী-সন্তান সবাইকে নিয়ে এসেছেন। যদিও মঈন সিলেটে আসলেও পরিবার ঢাকাতে অবস্থান করছে। ২/১ দিনের মধ্যেই পুরো পরিবার সিলেটে চলে আসবেন বলে জানালেন মঈন, ‘পরিবারের অনেকেই এসেছে। আমার স্ত্রী এখানে। তার বোনরা, আমরা শ্যালক, সবাই আছে। ওরা ঢাকায় আছে, দিন-দুয়েকের মধ্যে ওরা সিলেটে আসবে।’

শ্বশুর বাড়িতে এসে সিলেটি ভাষাও শিখছেন বলে জানালেন মঈন, ‘কয়েকটি সিলেটি শব্দ জানি আমি, এই তো। সত্যি বলতে, আরও বেশি জানতে পারলে ভালো লাগত। চেষ্টা করবো আরও শিখতে। এখন হোটেলে লোকেরা আমার সঙ্গে সিলেটি কথা বলছে। চেষ্টা করছি শিখতে।’

প্রথম বার ঢাকা লিগে খেলতে ২০১০-১১ সালে এসেছিলেন মঈন আলী। তখনও জাতীয় দলে সুযোগ হয়নি এই অলরাউন্ডারের। মোহামেডানের হয়ে সাকিব-তামিমদের সঙ্গে ঢাকা লিগ মাতিয়েছিলেন। পুরনো স্মৃতি রোমন্থন করতে গিয়ে ইংলিশ এই ক্রিকেটার বলেছেন, ‘হ্যাঁ, তামিম, সাকিবদের সঙ্গে মোহামেডানে খেলেছিলাম। দারুণ ছিল। অবশ্যই খুব কঠিনও ছিল ঢাকার উইকেট… দেশের নানা জায়গায় খেলেছিলাম, দর্শকরা ছিল অসাধারণ। সময়টা উপভোগ করেছিলাম। সত্যি বলতে, অনেক কিছু শিখেছিলামও। যা নিজেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এগিয়ে নিয়ে যেতে সহায়তা করেছিল।’

মঈন আলীর শ্বশুর বাড়ি সিলেটের পীর মহল্লায়। মঈন আলীর স্ত্রী ফিরোজা হোসেনের জন্ম-বেড়ে ওঠা দুটোই ইংল্যান্ডে। ফিরোজার বাবা এম হোসেন পরিবার নিয়ে সিলেটেই বসবাস করতেন। পরে তিনি ইংল্যান্ডে পাড়ি জমান। সেখানেই জন্ম হয় ফিরোজার। বড় হওয়ার পর ফিরোজার বন্ধুত্ব হয় পাকিস্তানী বংশোদ্ভূত ইংলিশ নাগরিক মঈন আলীর। পরে তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। আবু বকর নামে তাদের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে।