নাম নাঈম শেখ। কিন্তু সাকিবের ভীষণ ভক্ত এই ছেলেটি নিজের নামই পাল্টে রেখেছে সাকিব আল হাসান! গত কয়েক মাস শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের ১ নম্বর গেটের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে নাঈমকে। কিন্তু সুযোগ মিলছিল না প্রিয় ক্রিকেটারের সঙ্গে দেখা করার। দুই দিন আগে স্টেডিয়ামে ঢোকার সুযোগ পেলেও পায়নি সাকিবের দেখা। তবে আজ (মঙ্গলবার) স্বপ্নের ক্রিকেটারের সঙ্গে দারুণ কিছু সময় কাটানোর সুযোগ পেয়েছে নাঈম।
প্রিয় ক্রিকেটারের দেখা পাবে- এই ভাবনাতে গত কয়েক মাস ধরে প্রতিদিন অপেক্ষার ছিল ক্লাস ওয়ানে পড়া ছেলেটি। অপেক্ষাটা খুব বেশি দীর্ঘ হয়নি। স্বপ্নের নায়ককে কাছেই শুধু পায়নি, সাকিবের ভালোবাসায়ও সিক্ত হয়েছে খুদে ‘সাকিব’। সাকিব ইনডোরে স্পিন বোলারদের বিপক্ষে অনুশীলন করছিলেন, সেখানে গিয়ে এক ওভার বোলিংও করেছে নাঈম। শুধু তা-ই নয়, সাকিবের কাছ থেকে ব্যাট-জুতা-জার্সি আদায় করে নেয় সে।
প্রেসবক্স প্রান্তের গ্যালারিতে দাঁড়িয়ে সাকিবের ব্যাটিং দেখছিল খুদে ‘সাকিব’। বিষয়টি নজরে আসতেই ভক্তকে ডেকে নেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। মাঠ হয়ে একাডেমিতে যেতে যেতেই সাকিবের কাছে বোলিং করার আবদার করে নাঈম। তাতে সাড়া দিয়ে নাঈমের বিপক্ষে পুরো এক ওভার ব্যাটিং করেছেন সাকিব। এরপর সাকিব যখন অনুশীলনে মত্ত, তখন নেট বোলারদের সঙ্গে খুনসুটিতে মেতে থাকতে দেখা গেছে নাঈমকে। চঞ্চল স্বভাবের এই ছেলেটির কাছে সাকিবের কীর্তি অনন্য। নিজেও স্বপ্ন দেখে সাকিব আল হাসানের মতো বড় ক্রিকেটার হওয়ার। কিন্তু তার স্বপ্ন পূরণে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে দারিদ্রতা।
নিজের স্বপ্ন ছোঁয়ার পর খুদে ভক্ত বলেছে, ‘সাকিব ভাই আমারে এইখানে নিয়া আইছে। তারে বল করছি, আমি ভাইরে এক ওভার বল করছি। সাকিব ভাইরে বল করে আমার ভালো লাগছে। সাকিব ভাই আমারে জুতা, ব্যাট, জামা গিফট করবে।’
নাঈমের স্বপ্ন একদিন জাতীয় দলে সাকিবের জায়গায় খেলবে। বাংলা ট্রিবিউনকে মুঠোফোনে সে বলেছে, ‘আমার কাছে সাকিব ভাই মানে বিশাল কিছু। উনার সঙ্গে তো আসলে কারও কোনও তুলনা হয় না। উনার মতো অলরাউন্ডার হতে চাই। সাকিব ভাই যখন অবসরে যাবেন, তখন আমি সাকিব ভাইয়ের মতো অবদান রাখতে চাই। জানি না পারবো কিনা, তবে স্বপ্ন দেখি।’
বাবা কামরুল ইসলাম জানেন ছেলের ক্রিকেটের প্রতি ঝোঁক আছে। কিন্তু ছেলেকে ক্রিকেটার বানানোর সামর্থ্য নেই। তবে কেউ যদি উদ্যোগ নিয়ে ছেলেকে ক্রিকেটার হওয়ার সুযোগ করে দেয়, তার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকবেন তিনি, ‘সাকিবের মতো ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন আমার ছেলের। কিন্তু আমি গাড়ি চালাই, আমার জন্য এটা কঠিন। কেউ যদি উদ্যোগ নিয়ে আমার ছেলের স্বপ্নটা পূরণ করতো, তার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকবো।’