সাকিবের সঙ্গে ‘দ্বন্দ্ব’ অস্বীকার করেননি তামিম

এমন নয় যে সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবালের দ্বন্দ্বের বিষয়টি একেবারে নতুন। গত কয়েক বছর ধরেই ক্রিকেট পাড়ায় এ নিয়ে চর্চা হতো। তবে ক্রিকবাজকে বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসানের দেওয়া এক ইন্টারভিউতে সেটি প্রকাশ্যে চলে আসায় তা ভিন্নমাত্রা পেয়েছে। সেই আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতেই ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবালের কাছে বিষয়টি জানতে চাওয়া হয়। পেশাদার জায়গায় সবকিছু ঠিক থাকলেও নিজেদের মধ্যকার দ্বন্দ্বের বিষয়টি একবারও অস্বীকার করেননি তিনি। তবে ‘শীতল’ এই সম্পর্ক ঠিক হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখেন তামিম।

রবিবার মিরপুরে অনুশীলন শুরুর আগে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন ওয়ানডে অধিনায়ক। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ শুরুর দুদিন আগে সব প্রশ্নই ছিল সাকিব-তামিম সম্পর্কিত। তাদের সম্পর্ক কোন পর্যায়ে আছে সেসব এড়িয়ে তামিম জানিয়েছেন, ‘আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস হলো, আমি, সাকিব যখন বাংলাদেশ দলের জার্সি পরি, মাঠে নামি; তখন আমি সেরাটা দেই, সে তার সেরাটা দেয়। যখন অধিনায়কত্ব করি তখন যেকোনও পরামর্শ চাই। সে আমাকে পরামর্শ দেয়। আবার সে যখন অধিনায়কত্ব করে তখন তার কোনও পরামর্শের প্রয়োজন হলে আমি সেটার জন্য প্রস্তুত থাকি। এর বাইরে কিছু নেই।’

সাকিব-তামিমকে সঙ্গে নিয়ে বিবাদ মেটানোর চেষ্টা করেছিলেন বোর্ড প্রধান- এমন কথাও জানা গেছে। কিন্তু সেটি আলোর মুখ দেখেনি। তামিম অবশ্য আশা করেন, ভবিষ্যতে হয়তো সম্পর্কের উন্নতি ঘটবে, ‘যা হয়েছে দুজন ব্যক্তির মধ্যে হয়েছে। দলের জন্য দুজনই গুরুত্বপূর্ণ। বিষয়টা ওই জায়গাতেই আটকে থাকা দরকার। আমি এটা নিয়ে মন্তব্য করতে চাই না। সম্ভব সবকিছুই, এভরিথিং ইজ পসিবল।’

দেশের বাইরে গেলে তামিম তার সতীর্থদের নিয়ে ঘুরতে বের হন, ডিনারে নিয়ে যান। জাতীয় দলে তামিম ইকবালের এই ভূমিকা বেশ প্রশংসিত। সাকিব ইস্যুতে নানা উত্তর শেষে তামিমের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল জাতীয় দলে তার বন্ধু কারা? তামিম অনেকের নাম বললেও সাকিবের নাম বলেননি, ‘সবাই, কোনও ডিপ্লোমেসি না। আমি তাসকিনের সঙ্গে ডিনারে যাই, তাইজুল, মিথুন, শান্তর সঙ্গেও যাই। আমার অনেক বন্ধু। মুশফিকের সঙ্গে ডিনারে যাই। ফ্রেন্ড...দেখেন এটা পেশাদার জায়গা। আমার কাছে মনে হয় সবার সঙ্গে সবার সম্পর্ক একই পর্যায়ে থাকবে না। আমি নিশ্চিত আপনার অফিসে সবার সঙ্গে একই সম্পর্ক নেই। কারও সঙ্গে বেশি থাকে, কারও সঙ্গে কম থাকে। কাউকে পছন্দ করেন, কাউকে করেন না। এটা এমনই। শুধু বাংলাদেশে না, বিশ্বের যেকোনও খেলাতেই একই ব্যাপার।’

তারপরও তামিম আবার মনে করিয়ে দিলেন, পেশাদার জায়গা থেকে সাকিবের সঙ্গে তার কোনও সমস্যা নেই, ‘বারবার একটাই কথা বলছি, যেটা মেটার করে যখন আমরা একসঙ্গে মাঠে নামছি। কাকে কম পছন্দ করি, কাকে বেশি পছন্দ করি এটা মেটার করে না। যখন আমরা একসঙ্গে মাঠে নামছি, তখন আমাদের মোটিভটা এক কিনা। ১০০ ভাগ নিশ্চয়তা দিয়ে আমি বলতে পারি, মোটিভটা একই। একই কথা আমি বারবার বলছি, আশা করি আপনারা বুঝছেন।’

সাকিব-তামিমের সম্পর্ক ছাড়াও দলে গ্রুপিং আছে বলে জানিয়েছেন নাজমুল হাসান। তবে তামিমের দাবি, গত ১৭ বছরে কখনও গ্রুপিং দেখেননি তিনি, ‘আমি ১৭ বছর ধরে জাতীয় দলে খেলছি। ৫ বছর, ১০ বছর কিংবা ১৬ বছর আগে হোক, যখন দল ভালো খেলতো না তখনই এই টার্মটা ব্যবহার করা হতো। বিভিন্নভাবে এই গ্রুপ ওই গ্রুপ। শুধুমাত্র বলার জন্য বলা না, যারা আমাকে কাছ থেকে চেনেন আমি খুবই সোজাসাপ্টা লোক। কোনও কিছু লুকিয়ে বলি না... যা বলি সোজা বলবো।’

তামিম আরও বলেছেন, ‘আপনি পছন্দ করেন আর না করেন। আমি ১৬ বছর আগেও গ্রুপিং দেখিনি, ১০ বছর আগেও দেখিনি, এখন না। সবশেষ ৬ মাস দলের সঙ্গে ছিলাম না, এই জিনিসটা যদি এই ৬ মাসে হয়ে থাকে তাহলে আমি জানি না। ড্রেসিং রুমে সবশেষ ৩-৪ দিন ধরে আছি, এরকম কিছু দেখিনি। সবাই উপভোগ করছে, আমরা সবাই মজা করি।’