ইয়ো ইয়ো টেস্টে ব্যর্থ হলেও বাদ পড়বেন না মাহমুদউল্লাহরা 

গত তিন দিনে ক্রিকেটারদের রক্ত পরীক্ষা, ইসিজি, চোখ ও কার্ডিয়াক স্ক্রিনিং হয়েছে। ক্রিকেটারদের ফিটনেসের আসল পরীক্ষা হয়েছে বৃহস্পতিবার। এদিন ১৫ থেকে ১৬ জন ক্রিকেটার ইয়ো ইয়ো টেস্ট দিয়েছেন। সবার ফলাফলই কাছাকাছি এসেছে। তবে কোন ক্রিকেটার কত স্কোর করেছে সেটি নিয়ে বিসিবির ট্রেনাররা মুখে কুলুপ এঁটে আছেন। বিশেষ করে মাহমুদউল্লাহর ইয়ো ইয়ো টেস্টের ফল জানতে আগ্রহী ছিলেন গণমাধ্যমকর্মীরা। তিনি ঠিক কত স্কোর করেছেন সেটি না জানালেও বিসিবির একটি সূত্র বলেছে সেটি ১৭ এর আশেপাশে আছে। যদিও মাহমুদউল্লাহসহ বাকি ক্রিকেটারদের ইয়ো ইয়ো টেস্ট নিয়ে সন্তুষ্টির কথা শোনালেন জাতীয় দলের ট্রেনার নিক লি।

বৃহস্পতিবার ক্রিকেটারদের ইয়ো ইয়ো টেস্টে ফিটনেসের পরীক্ষা দিতে হয়েছে। দৌড়ে প্রমাণ করতে হয়েছে নিজেদের বর্তমান অবস্থা। জাতীয় দলের ট্রেনার নিক লি তাতে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলেছেন, ‘তথ্য-উপাত্তের দিকে না তাকিয়ে আমার মাথায় যা আছে তা থেকে বলতে পারি, সবার (টেস্টের) পারফরম্যান্স প্রায় একই রকম ছিল। এখানে এমন ক্রিকেটারও ছিল যারা সাম্প্রতিক সময়ে জাতীয় দলের আশপাশে ছিল না অথবা ইনজুরিতে ছিল কিংবা দলের বাইরে ছিল। তাদের কিছুটা কম ছিল। তবে সব মিলিয়ে কেউই কম গতিতে ছিল না। সবাই মোটামুটি একই ব্র্যাকেটে ছিল।’

২০২১ সালে বিপ টেস্টের বদলে ইয়ো ইয়ো টেস্ট শুরু করে বাংলাদেশ। ইয়ো-ইয়ো টেস্টে খেলোয়াড়দের গতি এবং সহনশীলতা পরীক্ষা করার জন্য ২-কিলোমিটার সময়ের সার্কিট ট্রায়াল নেয়া হয় (দ্রুত দৌড়)। এবার ইয়ো-ইয়ো টেস্টের বেঞ্চ মার্ক রাখা হয়েছে ১৮.৬। সর্বোচ্চ ১৯.৫ পেয়েছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। কেউ কম স্কোর করলেও সেটিকে আনফিট হিসেবে ধরা হয়নি, ‘আজকে আমরা এই টেস্টিংয়ের পারফরম্যান্স সাইডে নজর দিয়েছি। যেখানে গতি, পাওয়ার, দিক পরিবর্তন, কিছু বডি কম্পোজিশনের পর ইনজার্ন টেস্ট দিয়ে শেষ করেছি। আবহাওয়ার কারণে সুযোগ-সুবিধা আমাদের হাতের বাইরে চলে যাওয়ায় ইয়ো ইয়ো টেস্ট ব্যবহার করেছি। যেখানে বিরতি দিয়ে রিপিট শাটল রাউন্ড হয়েছে। টেস্ট যত সামনে এগিয়েছে, তত দ্রুত করতে হয়েছে।’

টেস্টে সর্বোচ্চ পেয়েছেন শান্ত। এই টেস্টে খারাপ করলেও বাদ পড়ার কোন সুযোগ নেই বলে জানালেন নিক লি, ‘এই টেস্টিং দলে সুযোগ পাওয়া বা বাদ পড়ার কোনও অংশ নয়। এটি স্রেফ আমার, ফিজিও, মেডিক্যাল টিম, নির্বাচক, প্রধান কোচের বোঝার জন্য যে ক্রিকেটাররা কোন অবস্থায় আছে এবং আগামী দুই মাসের মধ্যে তাদের নিয়ে কেমন কাজ করতে হবে। কারও হয়তো অনেক ভালো স্কিল থাকতে পারে, তবে ফিটনেসের দিক থেকে কিছু ঘাটতি থাকতে পারে। এক্ষেত্রে তারা স্কিল ট্রেনিং কিছুটা কমিয়ে ফিটনেসের দিকে মনোযোগ দিতে পারে। যারা ফিজিক্যালি অনেক ফিট, তারা বেশি স্কিল ওয়ার্ক করতে পারে। তো এটি মূলত আমাদের তথ্য দেবে যে, আগামী ৬ থেকে ৮ সপ্তাহের অনুশীলন কীভাবে সাজাবো।’

ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে ব্যস্ত সাকিব আল হাসান, তাওহীদ হৃদয়, লিটন দাস, শরীফুল ইসলামরা। এদিকে ডেঙ্গুর লক্ষণ নিয়ে অসুস্থ হাসান মাহমুদ। জিম্বাবুয়েতে মাত্রই খেলে এসেছেন মুশফিকুর রহিম ও তাসকিন আহমেদ। তামিম ইকবালতো মাত্রই লন্ডন থেকে চিকিৎসা নিয়ে দেশে ফিরেছেন। তাদের ছাড়া বাকিদের বেশিরভাগই ইয়ো ইয়ো টেস্টে অংশ নিয়েছেন, ‘যারা বিদেশি লিগ খেলে এসেছে... তাসকিন ও মুশফিক, তারা বিশ্রাম নিয়ে ২ দিন পরে (ইয়ো ইয়ো টেস্ট) করবে। যাতে ভ্রমণক্লান্তি ও ম্যাচের ধকল কাটিয়ে উঠতে পারে। আমরা উইকেন্ডে করার পরিকল্পনা করছি। কানাডায় আছে লিটন, সে ফেরার পর কিছু দিন বিশ্রাম নিয়ে আলাদাভাবে এই টেস্ট দেবে। শ্রীলঙ্কায় থাকা সাকিব, শরিফুল ও হৃদয়ের ক্ষেত্রে আমরা এশিয়া কাপে যাওয়ার আগে দেখবো।’