এক যুগ পর পর্তুগাল চেয়েছিল শান্তির ঘুম। কিন্তু এদিন ম্যাচের শুরুতে আবারও কাঁদলেন রোনালদো। ফাইনালের প্রথমার্ধেই ইনজুরিতে মাঠ ছাড়ার বেদনায়। অথচ সেমিফাইনালে জিতে বলেছিলেন, আনন্দাশ্রু নিয়ে ফাইনাল শেষ করতে চান। মঞ্চ প্রস্তুত ছিল, সেখানে উপস্থিতও ছিলেন সিআর সেভেন। কিন্তু সে মঞ্চ থেকে ফুটবল মহানয়াকের এমন অশ্রুসিক্ত প্রস্থান হবে কে ভেবেছিল? ভাগ্যদেবতা এমন দুঃখ-সুখের গল্প লিখে রেখেছেন কে জানতো?
ম্যাচের ২৫ মিনিট যেতে না যেতে পর্তুগিজদের হতাশায় ডুবিয়ে পায়ের ইনজুরির জন্য মাঠের বাইরে চলে যেতে হলো ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে। পায়েতের একটি সাধারণ ট্যাকলে পড়ে গিয়েছিলেন। ব্যথা পান হাঁটুতে। আগে মিনিট কয়েক বাইরে ছিলেন। ফিরলেও আর পারলেন না। নানিকে অধিনায়কের আর্মব্যান্ড পরিয়ে দিলেন। তারপর বসে বসে কষ্টে কাঁদতে থাকলেন রোনালদো। ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল শেষ হয়ে গেলো তার জন্য! স্ট্রেচারে করে মাঠের বাইরে চলে গেলেন তিনবারের বিশ্ব সেরা ফুটবলার রোনালদো। স্বপ্নের ফাইনালে যাকে ঘিরে শিরোপা প্রত্যাশা সেই মানুষই আর রইলেন না মাঠে। বদলি হিসেবে মাঠে নামলেন রিকার্ডো কোয়েরেজমা। অনেকেই ভেবে নিয়েছিলেন পর্তুগিজদের ইউরোতো ওখানেই শেষ!
কিন্তু রোনালদো বিজয়মঞ্চে আগমন অখ্যাত আন্তোনিও লোপেজের। যিনি এদের নামে পরিচিত। ম্যাচের ১০৯ মিনিটে গোল করে সমগ্র ফ্রান্সকে স্তব্ধ করেন দেন তিনি।
তারকাশোভিত ক্যারিয়ারে সাফল্যের আরেকটি নক্ষত্র যোগ করার হাতছানি ছিল রোনালদোর সামনে। এই সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বী লিওনেল মেসিকেও এক দিক থেকে পেছনে ফেলতে পারতেন পর্তুগালের অধিনায়ক। রোনালদো চ্যাম্পিয়ন হলেন ঠিকই। কিন্তু ফুটবল ঈশ্বর কী পরিহাস। মাঠে থেকে জয়োৎসব করতে পারলেন না তিনি। তাতে কী আসে যায় বাস্তবতা হলো 'ড্রিম কামস ট্রু'।
চার বার ফাইনালে উঠেও মেসি কাঙ্ক্ষিত এই সাফল্য পাননি। রোনালদোর সামনে এই সুযোগ এসেছিল ২০০৪ সালে। কিন্তু দেশের মাটিতে সেবারের ইউরোর ফাইনালে গ্রিসের কাছে হেরে শিরোপা জয়ের স্বপ্ন ভাঙে তার। আবার শিরোপা জয়ের খুব কাছে এসে দাঁড়িয়েছিলেন রোনালদো। সেখানে তাকে বহুল প্রতিক্ষীত ট্রফিটি এনে দিলেন এদের। ট্র্যাজেডির নায়কে পরিণত হতে যাওয়া রোনালদোর মুখে ফুটলো স্বর্গীয় হাসি! যেখানে নায়ক রূপে আবির্ভূত হলে এদের। তাতে অবশ্য সবচেয়ে বেশি খুশি রোনালদো নিজেই!
/এমআর/