‘আর যাতে না নামে দেশের ফুটবল’

‘আর যাতে না নামে দেশের ফুটবল’বাংলাদেশের ফুটবল যাতে আর নিচে না নামে, অবনমনের ধারা যাতে থামে। সেই লক্ষ্যে ফুটবল সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনকে উদ্যোগ নিতে আহ্বান জানিয়েছেন স্বনামধন্য সাবেক জাতীয় ফুটবলার ও সংগঠকরা।

আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় তাদের বক্তব্যে ফুঁটে উঠেছে যুগের পর যুগ ফুটবলে কার্যকরী উন্নয়ন পরিকল্পনা না নেওয়ার হতাশা।

বর্ষীয়ান কোচ ও সাবেক জাতীয় ফুটবলার গোলাম সারওয়ার টিপুর মতে সারাদেশে ফুটবলের যে জনপ্রিয়তা ছিল তার ইতিবাচক উপাদানগুলোকে কাজে লাগানো হয়নি, ‘ফুটবলের উন্নয়নে বিভিন্ন উপাদান, বিশেষ করে তৃণমূলে ফুটবলটা কাঠামোবদ্ধ করে না রাখার খেসারত আজ দিচ্ছি আমরা। লক্ষ্যও নির্ধারণ করা হয়নি, কারণ সাফে আমরা চ্যাম্পিয়ন হতে পারি না।  তারপরেও বাফুফের বোধোদয় হয় না।’

বাফুফের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনজুর হোসেন মালুর মতে বাফুফে কোনও মতেই ব্যর্থতার দায়ভার এড়াতে পারে না, ‘বয়স ভিত্তিক খেলাগুলোর কোনও ধারাবাহিকতা নেই, বাফুফের কাছেও জেলা পর্যায়ের কোন জবাবদিহিতা নেই। প্রকৃত সংগঠকদের নেই কোন মূল্যায়ন। তাই ফুটবলের এ অবস্থা তো অস্বাভাবিক নয়!’

সাবেক তারকা ফুটবলার হাসানুজ্জামান বাবলুর কথায় ফুটে উঠেছে দেশে আধুনিক ফুটবলের ধারণাটা প্রতিষ্ঠিত না হওয়ার অভাব, ‘আধুনিক ফুটবলে ফুটবলার তৈরির একটি প্রক্রিয়া আছে, তা এখনও দেশে প্রতিষ্ঠিত হয়নি। নতুন মান সম্পন্ন ফুটবলার তৈরি হচ্ছে না বলেই আজ এ দূরাবস্থা।’

সাবেক জাতীয় ফুটবলার শামসুল আলম মঞ্জুর কাছে বর্তমান পরিস্থিতি বেদনাদায়ক, ‘ভুটানের কাছে হারের পর আর নিচে নামার স্থান নেই। বাফুফে যদি নিজেকে ব্যর্থ মনে না করে আর এই দুর্যোগ কাটানোর উদ্যোগ না নেয় তাহলে চিত্র আরও ভয়াবহ হবে।’

সাবেক জাতীয় অধিনায়ক হাসান আল মামুন বললেন ফুটবলের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার কথা, ‘ফুটবলে আমাদের দীর্ঘ ঐতিহ্যের কথা আমরা বলি কিন্তু ফুটবলের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার কথা বলি না। ফুটবলাররা তাই একটা পর্যায়ের পর আর যেতে পারছে না।’

সাবেক জাতীয় গোলরক্ষক আমিনুল হকের উদ্যোগে আয়োজিত হয় এই আলোচনা সভা।  যেখানে তার কথাতেও ছিল ক্রমান্বয়ে অবনমনের চিত্র, ‘১৯৯৩ সালে বাংলাদেশের র‌্যাংকিং ছিল ১১৬ আর ২০১৬ সালে ১৮৮। এ অবস্থা থেকে মুক্তি চাই, সবাইকে সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে কাজ করতে হবে, বাফুফেকে পেশাদারী হতে হবে। আজ ভুটান মালদ্বীপও যা পারে আমরা তা পারি না; এটি অত্যন্ত হতাশাজনক।’

 

/আরএম/এফআইআর/