স্বপ্ন অনেক বড় ফকিরেরপুলের

Fakirerpul Young`s men Clubদীর্ঘ ২২ বছর পর আবারও দেশের শীর্ষ ফুটবল আসরে ফিরেছে ঐতিহ্যবাহী ফকিরেরপুল ইয়ং মেন্স ক্লাব। দুই দিন আগে শেষ হওয়া বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নশিপ লিগের শিরোপা জয় করেই তারা আগামী মৌসুমে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে। প্রায় দুই যুগ পরে শীর্ষ স্তরে ফেরার আনন্দের মাঝেই হারিয়ে যেতে চায় না ফকিরেরপুল, দাপটের সঙ্গেই চলতে চায় সামনের পথ।

সেই ১৯৯৪ সালে তৎকালীন ঢাকা সিনিয়র ডিভিশন ফুটবল লিগ থেকে অবনমিত হওয়ার পর আরমান মিয়া, নজরুল ইসলাম, মাসুদ রানা, মাকসুদুল আমিন রানা, শাহেদুল আলম সহ অনেক জাতীয় তারকা খেলোয়াড় তৈরি করা ফকিরেরপুল আর শীর্ষ স্তরের ফুটবলে ফিরতে পারেনি। মাঝে ২০১০ ও ২০১৪ সালে দুইবার ঢাকা সিনিয়র ডিভিশন লিগ জিতে খেলে ২০১৫ সালের বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে। গত মৌসুমে ১ পয়েন্টের জন্য অবনমিত হওয়া থেকে রক্ষা পেয়ে এবারের মৌসুমে গঠন করে শক্তিশালী দল। বাজেট বেশি ছিল না, তবে লক্ষ্য ছিল অটুট। অনেক টাকা ব্যয় করা দলগুলোকে টপকে ফকিরেরপুল জিতে নেয় শিরোপা।

ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সাব্বির হোসেন ফুটবল অঙ্গনে এক পরিচিত নাম। ফুটবল অন্তঃপ্রাণ এই সংগঠক জানিয়েছেন, তাদের সাফল্যের মূলে রয়েছে যথাযথ টিমওয়ার্ক। তার বক্তব্য, ‘আমরা লিগের এক মাস আগে অনুশীলন শুরু করি। খেলোয়াড় বাছাই করেছি পজিশন অনুয়ায়ী, কোচ মহিদুর রহমান মিরাজ কঠোর নিয়মতান্ত্রিকতার সঙ্গে দলকে পরিচালনা করেছেন। আমাদের গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান রাশেদ খান মেনন এমপি, ক্লাবের সভাপতি খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া, ফুটবল কমিটির চেয়ারম্যান সৈয়দ রিয়াজুল করিম সবাই-যার যার জায়গা থেকে দলকে দিয়েছেন সর্বোচ্চ উৎসাহ। খেলোয়াড়রা সেই কারণেই দিয়েছে তাদের সর্বোচ্চ পারফরম্যান্স।’

মতিঝিল ক্লাব পাড়ায় জুয়া খেলাটা নৈত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার হলেও সাব্বির সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পর ফকিরেরপুল ক্লাবে বন্ধ করে দেন টাকা বিনিময়ে সব রকম জুয়া খেলা। সেই বিষয়টিও সামনে আনলেন তার কথায়, ‘আমরা খেলার একটি উপযোগী পরিবেশ নিশ্চিত করতে চেয়েছি। আমাদের রয়েছে দোকান-গোডাউন সহ নির্দিষ্ট কিছু আয়ের উৎস। আমরা এগুলোর ওপরই বেশি নির্ভর করেছি। ক্লাবে স্পোর্টিং স্পিরিট রাখতে চেয়েছি।’

খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিক নিয়েও কোনও দীর্ঘসূত্রিতা রাখেনি ক্লাব। আজ বিকেলে খেলোয়াড়দের শেষ কিস্তির টাকা প্রদান করার পর সাব্বির হোসেন বললেন, ‘আমরা টাকা কম দিতে পারি তবে যে পরিমাণ টাকা দেয়ার কথা, শিরোপা জেতার পর তার চেয়ে বেশিই দিয়েছি। দলের ফরোয়ার্ড জুয়েল, ডিফেন্ডার মিশু, অধিনায়ক ফারুক ও আরেক খেলোয়াড় বিকেএসপির রহমত বিপিএলে সাড়া ফেলবে। আমরা এমন খেলোয়াড়ও খেলিয়েছি, যার এর আগে ঢাকায় ফুটবল খেলার অভিজ্ঞতা নেই।’

সামনে বিপিএল এর বিশাল চ্যালেঞ্জ, এটি জানেন সাব্বির হোসেন, ‘বিপিএলে অনেক দলই এক মৌসুমের বেশি টিকতে পারে না। ফকিরেরপুলের রয়েছে ফুটবল ঐতিহ্য, আমাদের অনেক কষ্টের ফসল এই সাফল্য। এটিকে আমরা যে কোনও মূল্যে অব্যাহত রাখবো, ফকিরেরপুল আবারও ফিরবে সাফল্যের মধ্যগগনে। এটি শুধু আমার নয়, ফকিরেরপুলবাসীদের প্রত্যাশা।’

/আরএম/কেআর/