ভেটারান্স কাপে অংশ নিতে সারা দেশ থেকে সাবেক ফুটবলাররা ঢাকায় এসেছিলেন। তাদের ড্রিবলিং বা জোরালো শটে পোস্ট কাঁপানোর দৃশ্য দেখে অনেকেই ফিরে গেলেন ফুটবলের সোনালী সময়ে। খেলোয়াড়ি জীবনের স্মৃতিচারণ করে আসলাম বললেন, ‘এখনও গোলের নিশানা ভুলিনি। গোল-ক্ষুধা না থাকলে কিসের স্ট্রাইকার! যখন ফুটবলার ছিলাম,মাঠে ৯০ মিনিট ঘুরতাম গোলের জন্য। তার পুরস্কারও অনেক পেয়েছি।’
তিনি নিজে ছিলেন দুর্দান্ত স্ট্রাইকার। হেডিং-শুটিং দুটোতেই ছিলেন দারুণ দক্ষ। ঢাকার লিগে কয়েকবার সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার জিতে নেওয়া আসলাম বর্তমান স্ট্রাইকারদের দুর্দশা দেখে ভীষণ হতাশ, ‘এখন তেমন কোনও স্ট্রাইকারই নেই। আমার পর একজনেরই গোল করার দক্ষতা ছিল,সে হলো নকীব। লিগে সে টানা তিনবার সর্বোচ্চ স্কোরার হয়েছিল, এটা সোজা কথা নয়। এরপর ওই মানের স্ট্রাইকার আমার চোখে পড়েনি। এখনকার স্ট্রাইকারদের সাহসও নেই, শুটিংও নেই। কাউকে একটু সাহসী হয়ে মাঝমাঠ থেকে হঠাৎ শট নিতে দেখি না। অথচ আমার ক্যারিয়ারে এভাবে গোল করার অনেক উদাহরণ আছে।’
ফুটবলের প্রতি এতটাই নিবেদিতপ্রাণ ছিলেন যে ফিটনেস ঠিক রাখতে রিকশা পর্যন্ত চালিয়েছেন তিনি! সে সব দিনের কথা আজও ভুলতে পারেননি আসলাম, ‘ফুটবলের অফ সিজনে লাফানোর অভ্যাস ঠিক রাখার জন্য ভলিবল খেলতাম। এমনকি পায়ের পেশি শক্তিশালী করার জন্য রিকশাও চালিয়েছিলাম। শুটিং-হেডিং প্র্যাকটিস তো করতামই। এসব আমি নিজে থেকেই করতাম, কারণ একজন ভালো স্ট্রাইকার হওয়ার জন্য আপনাকে পরিশ্রম করতে হবে। অথচ নিজে আলাদা করে প্র্যাকটিস করার অভ্যাস বর্তমান খেলোয়াড়দের একদমই নেই। ফেসবুকিং আর চ্যাট করে তো ভালো স্ট্রাইকার হওয়া যায় না!’
বর্তমান ফুটবলারদের পারিশ্রমিক নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করলেন জাতীয় দলের সাবেক তারকা, ‘অর্থই হচ্ছে অনর্থের মূল। এত টাকা অপাত্রে দেওয়া হচ্ছে। কত টাকার খেলোয়াড়, সে সম্পর্কে একজন ফুটবলারের ধারণা থাকা উচিত। বর্তমানে নিজের মানের চেয়ে বেশি পাওয়ার কারণে একজন ফুটবলার নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, তার শেখার আগ্রহ কমে যাচ্ছে। বাফুফের উচিত ছিল, জাতীয় দলকে এখানে এনে আমাদের খেলা দেখানো। এই বয়সেও আমাদের পাসিং-মুভমেন্ট দেখলে এখনকার ফুটবলাররা কিছু শিখতে পারতো।’