মেয়েদের ফুটবলে এখন স্বর্ণালী সময়। মারিয়া-তহুরা-আঁখিদের সৌজন্যে একের পর এক সাফল্য ধরা দিচ্ছে। দক্ষিণ এশিয়ায় শিরোপার সৌরভ নিয়ে বাংলাদেশ অংশ নিচ্ছে এশিয়া শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে। মেয়েদের ফুটবলের পথ পরিক্রমা নিয়ে বাংলা ট্রিবিউনের বিশেষ আয়োজনের আজ চতুর্থ পর্ব।
ঢাকার প্রিমিয়ার লিগে এক যুগ খেলার অভিজ্ঞতা নিয়ে কোচিং জীবন শুরু করেন ছোটন। কয়েকটি ক্লাবে কোচিং করিয়ে মেয়েদের প্রশিক্ষণের দায়িত্ব পান তিনি। ছোটন জানালেন, ‘২০০৬ সালে বাফুফের কোচ হিসেবে কাজ শুরু করি। তিন বছর পর মেয়েদের কোচ হই। শুরুতে মেয়েদের কোচিং করানোর কথা শুনে কেমন জানি লেগেছিল। তবে কাজটা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছিলাম।’
রাঙ্গামাটি, নারায়ণগঞ্জ, যশোর ও সাতক্ষীরা থেকে বাছাই করা খেলোয়াড়দের নিয়ে ফুটবল প্রশিক্ষণ শুরু করেন ছোটন। তখন হ্যান্ডবল, ভলিবল খেললেও ফুটবলের সঙ্গে পরিচিতি ছিল না মেয়েদের। ২০১০ সালে ঢাকা এসএ গেমস সামনে রেখে অনুশীলন শুরু করা দলটি ব্রোঞ্জ পেয়েছিল। ছোটন অবশ্য তাতে সন্তুষ্ট হননি, ‘চারটি জেলার মেয়েদের আগ্রহের কারণে ফুটবলে নেওয়া হয়েছিল। তবে ফুটবলের সঙ্গে তাদের কোনও সম্পর্ক ছিল না। মেয়েদের ফুটবলের নিয়ম-কানুন থেকে সব কিছু শেখাতে বেশ কষ্টই হয়েছিল। সেবার আমরা তেমন সাফল্যও পাইনি।’
২০১১ সালে শুরু হয় বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব গোল্ডকাপ ফুটবল। ছোটনের মতে, সারা দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মেয়েদের নিয়ে আয়োজিত এই প্রতিযোগিতার সুফল পাচ্ছে বাংলাদেশ, ‘বঙ্গমাতা ফুটবল সাফল্য পেতে দারুণ সাহায্য করছে। এই প্রতিযোগিতা থেকে যারা উঠে আসছে তাদের নিয়ে দল গড়ে আমরা সাফল্য পাচ্ছি। আগে মেয়েরা ফুটবলের অনেক কিছুই জানতো না। বঙ্গমাতা গোল্ডকাপে খেলে তারা ফুটবলের বেসিকটা শিখে নিচ্ছে শুরুতে। এতে আমাদের সুবিধাই হয়েছে। আমরা তাদের পরিচর্যা করে সঠিক জায়গায় নিয়ে যেতে পারছি।’
বয়সভিত্তিক পর্যায়ে সাফল্যের পর ছোটন এখন তাকিয়ে জাতীয় দলের দিকে। তার বিশ্বাস, ‘বর্তমানে বয়সভিত্তিক দলগুলোতে যারা আছে তাদের ঠিকমতো পরিচর্যা করলে তিন থেকে চার বছরের মধ্যে আমরা একটা শক্তিশালী জাতীয় দল পাবো। তখন জাতীয় পর্যায়ের টুর্নামেন্টেও সাফল্য পাওয়া যাবে।’