মঙ্গলবার মুন্নার ১৪তম প্রয়াণ দিবস। মাত্র ৩৬ বছর বয়সে পরলোকে পাড়ি দিয়েছেন বাংলাদেশের অন্যতম সেরা এই ফুটবলার। তার স্ত্রী ইয়াসমিন মোনেম সুরভির প্রত্যাশা, ‘মোনেম মুন্নাকে সবাই মনে রাখুক।’
১৯৬৮ সালের ৯ জুন নারায়ণগঞ্জে জন্ম মোনেম মুন্নার। ১৯৮০-৮১ মৌসুমে পাইওনিয়ার ফুটবল লিগ দিয়ে তার ক্যারিয়ার শুরু। ১৯৮৭ সালে আবাহনীতে যোগ দেওয়ার পর দলবদল করেননি, ক্যারিয়ার শেষ করেছেন আকাশি-হলুদ জার্সি পরে। ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত আবাহনীর সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে থেকে দলকে এনে দিয়েছেন পাঁচটি লিগ এবং তিনটি ফেডারেশন কাপের শিরোপা।
দীর্ঘ ১১ বছর জাতীয় দলের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিলেন মুন্না। তার অধিনায়কত্বে ১৯৯৫ সালে মিয়ানমারে অনুষ্ঠিত চার জাতির টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশ। আন্তর্জাতিক ফুটবলে সেটাই লাল-সবুজ পতাকার প্রথম সাফল্য। কলকাতার বিখ্যাত ক্লাব ইস্টবেঙ্গলেও দুই মৌসুম সুনামের সঙ্গে খেলে ফুটবলপ্রেমীদের মন জয় করে নিয়েছিলেন তিনি।
১৯৯৮ সালে অবসরের পর আবাহনীর ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করার সময় কিডনিজনিত রোগে অসুস্থ হয়ে পড়েন মুন্না। কিডনি প্রতিস্থাপনের পর কিছু দিন ভালো থাকলেও শেষ রক্ষা হয়নি, ২০০৫ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি দেশের ফুটবলকে কাঁদিয়ে চলে যান না ফেরার দেশে।
বাংলাদেশের অন্যতম সেরা ডিফেন্ডারের কথা অনেকেই ভুলতে বসেছে। এ নিয়ে গভীর অনুতাপ মুন্নার স্ত্রীর কণ্ঠে। বাংলা ট্রিবিউনকে ইয়াসমিন মোনেম সুরভি বলেছেন, ‘আমি চাই মোনেম মুন্নার অবদানের কথা সবাই জানুক, মনে রাখুক। বর্তমান প্রজন্ম তো তার কথা সেভাবে জানেই না। মুন্নাকে স্মরণীয় করে রাখতে প্রত্যেককে অনুরোধ জানাচ্ছি আমি।’
মুন্নার স্মরণে ধানমন্ডির আট নম্বর সড়কের নামকরণ হয়েছে। কিন্তু সেখানে কোনও নামফলক নেই। মুন্নার স্ত্রীর আক্ষেপ, ‘ধানমন্ডির সেই সড়কে গেলে মুন্নার কোনও স্মৃতি দেখতে পাবেন না। সড়কটা যে ওর নামে হয়েছে তা বোঝা যাবে না। আমি চাই সেখানে একটা মনুমেন্ট হোক। সবাই জানুক মুন্না কে ছিলেন। এছাড়া নারায়ণগঞ্জ স্টেডিয়ামের একটা অংশ তার নামে হলে ভালো হতো। তাহলে নতুন প্রজন্ম তাকে জানতে পারতো।’
গত বছরের সেপ্টেম্বরে মুন্নার পরিবারের জন্য একটি আবাসিক ফ্ল্যাট বরাদ্দ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে ইয়াসমিন মোনেম সুরভি বলেছেন, ‘এটা আমাদের জন্য খুবই খুশির খবর। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের পাশে দাঁড়ানোয় আমরা খুব খুশি।’