পাকির আলীরা যখন ঢাকায় খেলতেন, তখন গ্যালারি ভরা থাকতো দর্শকে। ফুটবলের উন্মাদনা ছিল অন্যরকম। কিন্তু বেশ কয়েক বছর ধরেই ফুটবল মাঠে দর্শকখরা। তবে পাকির আলী এ জন্য দর্শকদের দায়ী করছেন না। মানসম্মত খেলোয়াড় না থাকায় দর্শকেরাও যে মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছে, সেটাই বললেন, ‘দেখুন বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কায় একই সমস্যা। ফুটবলের চর্চা সব জায়গায় হলেও দর্শক সেভাবে নেই। এর জন্য ভালো ফুটবলারের অভাবকে দায়ী করবো। যদি মানসম্মত ফুটবলার বেরিয়ে আসতো তাহলে এই সমস্যার মুখোমুখি হতে হতো না।’
দুই দেশের ঘরোয়া ফুটবলে বিদেশি খেলোয়াড়েরা খেলে। পাকির আলী একটা কারণ খুঁজে পান এর মধ্যেও, ‘আমাদের মতোই এখানকার ঘরোয়া ফুটবলেও বিদেশিদের দাপট। ফরোয়ার্ড লাইনে দেশি খেলোয়াড় নেই বললেই চলে। যার কারণে জাতীয় দলকেও ভুগতে হচ্ছে।’
পাকির আলীর কাছে বাংলাদেশ তার ‘সেকেন্ড হোম। দ্বিতীয় বাড়িতে এসে রোমাঞ্চটা কখনও লুকোন না, এবারও যেমন বলছেন, ‘বাংলাদেশ নিয়ে আমার অনেক মধুর স্মৃতি আছে। এখানে খেলেছি। কোচিং করিয়েছি। তাই যতবারই আসি না কেন বাংলাদেশকে নিজের দ্বিতীয় বাড়ি মনে হয়।’
বাংলাদেশের মতো শ্রীলঙ্কার ফুটবলও ধুঁকছে। তার অধীনে দলটি দুই বছর ধরে আছে। কিন্তু সাফল্য পাচ্ছে না। র্যাঙ্কিং নামতে নামতে ২০৫। তবে মনে করেন শ্রীলঙ্কা আবারও ঘুরে দাঁড়াবে, সে জন্য দরকার সময় ।
ঢাকা আবাহনীতে খেলার সময় বাংলা ভাষাও শিখে ফেলেছিলেন পাকির আলী। ভাষার দূরত্ব ঘুচিয়ে ফেলতে পারাটাও বাংলাদেশের কাছে তার আপন হয়ে ওঠার আরেকটি কারণ। পাকির আলী স্মৃতি হাতড়ে ফিরে যান ৪০ বছর আগের ঢাকায়, ‘৮০’র দশকে যখন আবাহনী আসি। তখন ক্লাব টেন্টে গৃহকর্মীর কাছে মুরগির মাংস চেয়েছিলাম। ইংরেজিতে বলার কারণে সে বুঝতে পারেনি। আমিও তার কথা বুঝতে পারছিলাম না। তখনই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললাম, বাংলাদেশে থাকতে হলে বাংলা ভাষা শিখতে হবে। আস্তে আস্তে শিখেও ফেললাম।’