বুরুন্ডির ফুটবলে ম্যাচ জিতলে তবেই টাকা!

বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে বুরুন্ডি ফুটবল দলপূর্ব আফ্রিকার দেশ বুরুন্ডির ঘরোয়া ফুটবলের কাঠামো বেশ অদ্ভুত। এক কোটি মানুষের দেশটির আনাচে-কানাচে ফুটবল চলে। কিন্তু নিজেদের দেশে ফুটবল খেলে সেভাবে অর্থ উপার্জনের সুযোগ নেই। এমন নিয়মও হয়েছে, ম্যাচ জিতলে খেলোয়াড়েরা পারিশ্রমিক পাবেন। অন্যথায় না! এমন অদ্ভুত নিয়মের বেড়াজালে থেকেও দেশটির ফুটবল কিন্তু এগোচ্ছে। গত বছর তো আফ্রিকান নেশনস কাপেই বুরুন্ডি খেলেছে প্রথমবারের মতো।

তাদের ফিফা র‌্যাঙ্কিংও খারাপ নয়, অবস্থান ১৫১তে। যদিও বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে তাদের দেখে অনেকের ভ্রু কুঞ্চিত হয়েছে প্রথমটায়। কেমন মানের দল তারা, এ নিয়েই ছিল সংশয়। কিন্তু দুই ম্যাচে সাত গোল দিয়ে গ্রুপ সেরা হয়ে বুরুন্ডি নিজেদের জাত চিনিয়েছে। এই প্রতিযোগিতার শিরোপা জিততে হুঙ্কারও ছেড়েছে তারা।

অথচ এই দলটির খেলোয়াড়দের ঘরোয়া ফুটবলে আয়-রোজগার বেশ কম। মাসিক ১২০ থেকে সর্বোচ্চ ৫০০ ডলার বেতন পেয়ে থাকেন। ঢাকার টুর্নামেন্টটি কাভার করতে বুরুন্ডি থেকে একজন মাত্র সাংবাদিক এসেছেন, নাম রিজিকি জ্যাকব।

সেখানকার ঈগল স্পোর্টসের কর্মকর্তা এই সাংবাদিক জানান, ‘আমাদের ওখানে অল্প টাকাতেই সবাই খুশি থাকে। কারণ জীবিকা নির্বাহ করতে বেশি টাকার প্রয়োজন পড়ে না। এই ধরুন এক ডলারের এক তৃতীয়াংশ দিয়েই একবেলার ভালো খাবার হয়ে যায়। তাহলেই বুঝে নিন।’

ক্লাব ফুটবলের কাঠামো সম্পর্কেও ধারণা দিয়েছেন এই সাংবাদিক, ‘ক্লাব ফুটবলে ম্যাচ জিতলে কেউ পারিশ্রমিক পায়। আবার অনেকে চুক্তি করেও খেলে। সেভাবে পেশাদার লিগ নেই। তবে কয়েকটি স্তরে ফুটবল হয়ে থাকে।’

নিজেদের দেশে খেলার পাশাপাশি দেশের বাইরের লিগে প্রায় শতাধিক খেলোয়াড় খেলে থাকেন। তাদের বড় তারকা একসময় ইংলিশ লিগের স্টোক সিটিতে খেলা ফরোয়ার্ড সাদিও ব্রাহিনো (বর্তমানে বেলজিয়াম লিগে খেলছেন)। যদিও ফিফা উইন্ডো না থাকায় নিয়মিত একাদশের অনেক খেলোয়াড়ই ঢাকায় আসেননি।

জ্যাকবের চোখে বুরুন্ডিতে ঝাঁকে ঝাঁকে খেলোয়াড় উঠে আসছে একাডেমির কারণে, ‘আমাদের ওখানে পাঁচটি মূল একাডেমি আছে। যার বিভিন্ন শাখা আছে বিভিন্ন শহরে। একাডেমি থেকেই আমাদের প্রচুর খেলোয়াড় বেরিয়ে আসছে। এই জসপিনও (চার গোলদাতা) এসেছে একাডেমি থেকে।’

বুরুন্ডি দলের ম্যানেজার ইনতামবাবা মুরুগামবা অবশ্য নিজেদের দেশে পেশাদার লিগ আছে বলে দাবি করছেন, ‘আমাদের ওখানে পেশাদার লিগ আছে। সেখানে ফুটবলাররা চুক্তি করেই খেলে থাকে। আমাদের প্রচুর খেলোয়াড় দেশের বাইরে খেলে। বাংলাদেশেও খেলার যোগ্যতা আছে তাদের। যদি আমাদের দেশের খেলোয়াড়েরা এখানে খেলতে পারে তাহলে এ দেশের ফুটবলই এগিয়ে যাবে।’