করোনার কাছে হার মানলেন স্বাধীন বাংলা দলের নওশের

চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের নওশেরুজ্জামানস্বাধীন বাংলা ফুটবল দল থেকে খসে পড়লো আরও একটি তারা। করোনাভাইরাস কেড়ে নিলো দলটির অন্যতম নায়ক নওশেরুজ্জামানকে। আজ (সোমবার) রাত সাড়ে ৯টায় না ফেরার দেশে পাড়ি দিয়েছেন সাবেক এই স্ট্রাইকার। ঢাকার স্থানীয় একটি হাসপাতালে ৭২ বছর বয়সে মারা গেছেন তিনি। রেখে গেছেন স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে।

এই মাসের শুরুতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন নওশের। রাজধানীর মুগদা হাসপাতাল ও গ্রীন লাইফ হয়ে শেষ পর্যন্ত ইবনে সিনায় ভর্তি হয়েছিলেন। সেখানেই ছেড়েছেন শেষ নিশ্বাস। শুরু থেকে অবশ্য আইসিইউ শয্যার প্রয়োজন হয়েছিল, ছিলেনও কয়েকদিন। এরপর অবস্থার অবনতি হলে লাইফ সাপোর্টে রাখতে হয়েছিল। তার চিকিৎসার দায়িত্বও নিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সপ্তাহখানেক জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থেকে ওপারের ডাক থেকে নিজেকে আর ফিরিয়ে আনতে পারেননি। তার চাচাতো ভাই সাইদুজ্জামান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছেন, ‘নওশের ভাইকে শেষ পর্যন্ত আর বাঁচানো যায়নি। লাইফ সাপোর্ট দিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি। রাত সাড়ে ৯টার দিকে তিনি আমাদের সবাইকে ফেলে অন্যলোকে চলে গেছেন।’

স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অন্যতম সদস্য নওশের ছিলেন নামি স্ট্রাইকার। স্বাধীনতার আগে খেলেছেন রেলওয়ে, ওয়ারী, ফায়ার সার্ভিস ও ভিক্টোরিয়া স্পোর্টিং ক্লাবে। স্বাধীন বাংলা দলের হয়ে ভারতের বিভিন্ন জায়গায় খেলেছেন তিনি।

স্বাধীন বাংলাদেশে ওয়াপদাতে ১৯৭২ থেকে ১৯৭৪, মোহামেডানে ১৯৭৫ থেকে ১৯৭৭ ও ওয়ান্ডারার্সে ১৯৭৮ থেকে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত খেলেছেন। আর জাতীয় দলে ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত খেলেছেন সুনামের সঙ্গে।

ফুটবল ছাড়াও ক্রিকেটে তার দাপট কম ছিল না। সেখানেও সমান পারদর্শী ছিলেন। মোহামেডানের মতো দলে নিয়মিত খেলে গেছেন সাবেক এই ওপেনার। এছাড়া ভিক্টোরিয়াতে তিন ও কলাবাগানে খেলেছেন পাঁচ বছর।

খেলাধুলায় বিশেষ অবদানের জন্য ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ব্লু’  পাওয়া সাবেক এই স্ট্রাইকারকে একটা আক্ষেপ নিয়েই ছাড়তে হলো পৃথিবী। মৃত্যুর আগে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেখে যাওয়া হলো না তার।

মঙ্গলবার সকাল ১০টায় বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে প্রথম জানাযা অনুষ্ঠিত হবে, বাদ জোহর মুন্সীগঞ্জে দ্বিতীয় জানাযার পর চাঁদপুরে এই কৃতি ক্রীড়াবিদের দাফন সম্পন্ন হবে।