‘ক্রীড়াঙ্গনের কোনও মেয়ের সঙ্গে যেন এমন আর না হয়’

মাবিয়া আক্তার সীমান্তএক নারী ভারোত্তোলকের ওপর যৌন নির্যাতনের অভিযোগ নিয়ে এখন ক্রীড়াঙ্গনে তোলপাড়। ভারোত্তোলন ফেডারেশনের কর্মকর্তারা বিব্রত, আর এসএ গেমসে সোনাজয়ী মাবিয়া আক্তার সীমান্ত ক্ষুব্ধ। অভিযোগ প্রমাণিত হলে দায়ী ব্যক্তির শাস্তি দাবি করেছেন তিনি।

গত ১৩ সেপ্টেম্বর জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ভবনে মেয়েটিকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে ভারোত্তোলন ফেডারেশনের অফিস সহকারী সোহাগ আলীর বিরুদ্ধে। ঘটনার পর থেকে লজ্জায়-ভয়ে লোকচক্ষুর অন্তরালে ছিলেন সেই ভারোত্তোলক। মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে গত ২৩ অক্টোবর হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। এক মাস কেটে গেলেও এখনও সুস্থ হতে পারেননি।

অভিযুক্ত সোহাগ আলীর শাস্তি চেয়ে ভারোত্তোলন ফেডারেশনকে চিঠি দিয়েছে মেয়েটির পরিবার। এরই মধ্যে সোহাগ আলীকে বরখাস্ত করেছে ফেডারেশন। তবে অনেক চেষ্টা করেও তার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। কয়েক দিন ধরেই তার মোবাইল ফোন বন্ধ।

এমন ভয়ঙ্কর ঘটনা শুনে মর্মাহত মাবিয়া। ২০১৬ সালে ভারতের শিলং-গৌহাটিতে অনুষ্ঠিত এসএ গেমসে সোনাজয়ী এই ভারোত্তোলক ক্ষোভের সঙ্গে বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছেন, ‘মেয়েটির সঙ্গে এমন কিছু হলে অবশ্যই বিচার হওয়া উচিত। ভবিষ্যতে ক্রীড়াঙ্গনের কোনও মেয়ের সঙ্গে এমন কিছু করার দুঃসাহস কেউ যেন না দেখাতে পারে। আমি মেয়েটিকে চিনি, তার সঙ্গে আমার পরিচয়ও আছে। অভিযুক্ত ব্যক্তি দোষী প্রমাণিত হলে তার শাস্তি হতেই হবে।’

ক্ষোভের পাশাপাশি মাবিয়া শঙ্কিতও, ‘আমার ৮/৯ বছরের ক্যারিয়ারে এমন ঘটনা প্রথম ঘটতে দেখলাম। এই ঘটনার কথা জানতে পারলে আমার পরিবারের সদস্যরা হয়তো আমাকে আর খেলতেই দেবে না।’

ঘটনাটা প্রকাশ্যে আসার পর তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করেছে ভারোত্তোলন ফেডারেশন। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদও (এনএসসি) তদন্ত কমিটি করেছে। তিন সদস্যের কমিটির প্রধান এনএসসি’র পরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন। অন্য দুজন হলেন তাসলিমা আক্তার ও নিয়াজুল হাসান। এরই মধ্যে যৌন নির্যাতনে সহায়তার অভিযোগে অফিস সহকারী মালেককে শোকজ করেছে এনএসসি।

মঙ্গলবার মেয়েটিকে হাসপাতালে দেখতে যান এনএসসি’র সচিব মাসুদ করিম। বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেছেন, ‘মেয়েটিকে দেখে খুব খারাপ লেগেছে। মেয়েটি খুব গরীব পরিবারের, সে ঠিক মতো কথাও বলতে পারছে না। আমরা একটা তদন্ত কমিটি করেছি, একজনকে শোকজও করেছি। এ ঘটনায় আমরা কাউকে ছাড় দেবো না।’