দেশি ব্যান্ডউইথের পরবর্তী গন্তব্য ভূটান?

ব্যান্ডউইথভারতের পর এবার ভূটান হতে পারে বাংলাদেশের অব্যবহৃত ব্যান্ডউইথের ‘কিছু’ অংশের ক্রেতা। সম্প্রতি বাংলাদেশ থেকে ভূটান ব্যান্ডউইথ নেওয়ার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এখন ওই দেশের একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশে এসে সম্ভাব্যতা যাচাই করে ইতিবাচক প্রতিবেদন দিলেই বাংলাদেশ উদ্যোগী হবে ব্যান্ডউইথ রফতানি তথা লিজ দিতে। ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
প্রসঙ্গত, এর আগে ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় ৭টি রাজ্য বাংলাদেশ থেকে ব্যান্ডউইথ নিতে আগ্রহ প্রকাশ করলে প্রাথমিকভাবে ত্রিপুরা রাজ্যে বাংলাদেশের ব্যান্ডউইথ রফতানি শুরু হয়। শুরুতে ১০ জিবিপিএস নিয়ে ব্যান্ডউইথ নিলেও তারা ভবিষ্যতে ৪০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ নিতে চায়।
অতি সম্প্রতি ভূটান সফর করেছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম। ভূটান সফরকালে তিনি সে দেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎকালে ভূটানের প্রধানমন্ত্রী তারানা হালিমের কাছে ব্যান্ডউইথ আমদানির বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন। তারানা হালিম ভূটানের প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশে একটি প্রতিনিধিদল পাঠাতে অনুরোধ করেন। প্রতিনিধিদল ২ মাসের মধ্যে বাংলাদেশে এসে ব্যান্ডউইথের আমদানির বিষয়ে সম্ভাব্যতা যাচাই করবে।
জানতে চাইলে তারানা হালিম বলেন, আমাদের ২০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ সক্ষমতা রয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ১৩১ জিবিপিএস ব্যবহার হচ্ছে। ভারতে যাচ্ছে ১০ জিবিপিএস। দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবলে যুক্ত হলে আগামী বছর আরও ১ হাজার ৫০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ যুক্ত হবে। ফলে আমাদের ব্যান্ডউউথের কোনও ঘাটতি নেই।

অব্যবহৃত ব্যান্ডউইথের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সাবমেরিন ক্যাবলের মেয়াদ ২০ বছর। আমরা কেন কোটি কোটি টাকার ব্যান্ডউইথ ফেলে রাখব। ফেলে রাখার মানে তো নষ্ট করে ফেলা। রাষ্ট্রীয় সম্পদ নষ্ট করে ফেলার মধ্যে আমি কোনও কৃতিত্ব দেখি না। তাই সংশ্লিষ্ট সবার পরামর্শে আমরা ব্যান্ডইউথ রফতানির সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

তারানা হালিম আরও বলেন,ভূটানে ব্যান্ডউইথ রফতানির জন্য আমরা দু’টি পথ প্রাথমিকভাবে নির্বাচন করেছি। একটি পথ হলো পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা হয়ে। অন্যটি রংপুর হয়ে। ওদের প্রতিনিধিদলে এসে প্রতিবেদন দিলেই আমরা আমাদের উদ্যোগ বাস্তবায়নের চেষ্টা করব।

জানা গেছে, বাংলাবান্ধা বা রংপুর হয়ে ভূটানে ব্যান্ডউইথ রফতানি করতে গেলে ভারতীয় ভূখণ্ড দিয়ে কিছু দূরত্বে ক্যাবল টানতে হবে। সেক্ষেত্রে ভারতের ‘কনসার্ন’ নিতে হবে। তারা ইতিবাচক মনোভাব দেখালে ব্যাপারটিতে অগ্রগতি আসবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সেভেন সিস্টার্সের সব রাজ্যে যদি ৪০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথের সরবরাহ শুরু হয় তাহলে ভূটান ভারতে সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলো থেকে ‘কানেক্টেড’ হয়ে ব্যান্ডউইথ নিতে পারে।

তারানা হালিম আরও বলেন, আমি দিল্লীতে ভারতের তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছি। তাদেরকে ৪০ জিবিপিএস –এর অবশিষ্ট অংশ তথা ৩০ জিবিপিএস নিতে বলেছি। আমি ত্রিপুরাতেও গিয়েছি ব্যান্ডউইথ কার্যক্রম দেখতে। তিনি আরও বলেন, সেভেন সিস্টার্সে এখনও সব জায়গায় অবকাঠামো তৈরি হয়নি। আমি বলেছি, আমরাও অবকাঠামো তৈরি করে দিতে পারি, তাহলে ব্যান্ডউইথের রেট হবে একরকম আর যদি তারা নিজেরা অবকাঠামো তৈরি করে তাহলে রেট হবে  আরেকরকম।

কি পরিমাণ ব্যান্ডউইথ ভূটান নিতে আগ্রহ দেখিয়েছে জানতে চাইলে তারানা হালিম বলেন, এটা একেবারেই প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। প্রতিনিধিদল সম্ভাব্যতা যাচাই করে প্রতিবেদন দিলে প্রতিবেদন অনুসারে আমরা অগ্রসর হবো। ভূটানের কাছ থেকে এখনও পর্যন্ত আমরা নির্দিষ্ট কোনও পরিমাণের ব্যান্ডউইথের বিষয়ে অফার পাইনি।     

আরো পড়তে পারেন:   সেপ্টেম্বরে ফেরত আসতে পারে রিজার্ভের দেড় কোটি ডলার

 /এমএসএম/