জাপানের আইটি খাতে দক্ষ জনশক্তির ঘাটতিকে সুযোগ হিসেবে কাজে লাগাবে বাংলাদেশ: পলক

সনদপত্র বিতরণ অনুষ্ঠানতথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, মোট জনসংখ্যার ৬৫ ভাগের অধিক তরুণ জনশক্তি নিয়ে বাংলাদেশ বর্তমানে ‘পপুলেশন ডিভিডেন্ড’ উপভোগ করছে। অপরদিকে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিশ্বের মধ্যে তৃতীয় বৃহত্তম বাজার ও অর্থনীতির দেশ জাপান তাদের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে  প্রয়োজনীয় কর্মক্ষম মানুষের সংকটে ভুগছে। বাংলাদেশ সেই সুযোগটাই গ্রহণ করতে চায়। তিনি বলেন, আমরা ২০২১ সালের মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ২০ লাখ তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থান ও ৫ বিলিয়ন ডলার আয়ের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি,সেই লক্ষ্য অর্জনে আমরা জাপানের বাজারের সুযোগ গ্রহণ করতে চাই। জাপানের আইটি খাতে দক্ষ জনশক্তির ঘাটতিকে সুযোগ হিসেবে  আমরা কাজে লাগাতে চাই।
রবিবার দুপুরে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) ও জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন (জাইকা) আয়োজিত বাংলাদেশ-জাপান আইসিটি ইঞ্জিনিয়ারস ট্রেনিং প্রোগ্রামে (বি-জেট) অংশগ্রহণকারীদের মাঝে সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পলক এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ও জাইকার প্রতিনিধির কাছে বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে জাপানি কোম্পানির বিনিয়োগ বাড়াতে সহযোগিতা কামনা করে প্রতিমন্ত্রী পলক আরও বলেন, জাপানের এক্সটারনাল ট্রেড অর্গনাইজেশন পরিচালিত জরিপ অনুসারে বাংলাদেশ বিনিয়োগের জন্য সবচেয়ে আকর্ষণীয় গন্তব্য। বাংলাদেশী কর্মীদের তুলনামূলক কম বেতন, বিদ্যুতের নিম্ন মূল্য ও সাশ্রয়ী উৎপাদন খরচের ফলে বাংলাদেশ জাপানি কোম্পানিগুলোর জন্য বিনিয়োগের আদর্শ জায়গা হতে পারে। বিনিয়োগের সার্বিক চিত্র নিয়ে এশিয়া ও ওশেনিয়া অঞ্চলের ২০ দেশের ওপর পরিচালিত সেই জরিপে উৎপাদনমুখী ও সেবা- উভয় খাতেই বাংলাদেশ শীর্ষ স্থান দখল করেছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জাপানের রাষ্ট্রদূত হিরোইয়াসু ইজুমা বলেন,জাপান-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক সবসময়ই অনন্য। সেই সম্পর্কের সুত্র ধরে তেমনিভাবে এই বি-জেট প্রশিক্ষণের মাধ্যমে যারা জাপানের আইটি খাতে কর্মসংস্থান নিশ্চিত করেছে, তারাও জাপানের আইটি খাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। প্রত্যকেই একেক জন জাপানি উন্নয়নের অগ্রদূত হিসেবে ভূমিকা রাখবে।
বিসিসির নির্বাহী পরিচালক স্বপন কুমার সরকারের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে প্রশিক্ষণার্থীদের মাঝে সনদ বিতরণ করা হয়।

প্রসঙ্গত, বিসিসি ও জাইকা পরিচালিত দ্য প্রজেক্ট ফর স্কিল ডেভেলপমেন্ট অব আইটি ইঞ্জিনিয়ারস টার্গেটিং জাপানিজ মার্কেট প্রকল্পের আওতায় পরিচালিত এই প্রশিক্ষণে প্রশিক্ষণার্থীদের জাপানি ভাষা, জাপানি ব্যবসায়িক প্রথা ও আইটি ইঞ্জিনিয়ারস এক্সামিনিশেন (আইটিইই)-এর মাধ্যমে ৩ মাসের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। পরবর্তীতে প্রশিক্ষণার্থীরা জাপানের আইটি কোম্পানিতে ২ মাসের ইন্টার্নশিপে অংশ নেয় এবং প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের নিয়োগ দেয়।

প্রথম ব্যাচে অংশ নেওয়া ২০ প্রশিক্ষণার্থীদের মধ্যে িএরই মধ্যে ১৩ জন জাপানের বিভিন্ন কোম্পানিতে চাকরি হয়েছে। অন্যরা ইন্টার্ন করছেন। প্রকল্পের আওতায় প্রতিবছর ১২০ জনকে জাপানের বিভিন্ন আইটি কোম্পানিতে চাকরি দেওয়ার লক্ষ্যে জাইকার সহযোগিতায় বিসিসি এই প্রশিক্ষণ বাস্তাবয়ন করছে।