শিক্ষা স্বাস্থ্য খাতে বৈষম্য কমাচ্ছে প্রযুক্তি পণ্য

আধুনিক মিটিং রুমযোগাযোগের পুরনো পদ্ধতিগুলোর মাধ্যমে মানুষের কাছে পৌঁছানোর প্রক্রিয়াটি ছিল অনেক সময়সাপেক্ষ, জটিল। এই অবস্থার পরিবর্তন ঘটিয়েছে প্রযুক্তি। বিশেষ করে মানুষের যোগাযোগের ধরন, পেশাগত কাজ, শিক্ষার্থীদের অধ্যয়ন ইত্যাদি সব ক্ষেত্রে প্রযুক্তি ব্যাপক উন্নয়ন সাধন করেছে। এখন স্মার্টফোন, ল্যাপটপ এবং ট্যাবের মতো সাধারণ ডিভাইস দিয়ে আরও দ্রুততার সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে। এছাড়া কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন ধরনের কাজকে আগের চেয়ে আনেক সহজে করা যাচ্ছে।

প্রযুক্তি আমাদের প্রত্যেকের জন্য অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। এটা ছাড়া একদিন কাটানোর কথা কল্পনা করাও কঠিন। এসব প্রযুক্তি আমাদের জন্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে যা করে সেগুলোর প্রতি আসক্ত হয়ে পড়েছি আমরা সবাই। এগুলো আমাদের ভালো কিছু করতে সহায়তা করে এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমাদের সক্ষমতাকে বাড়িয়ে তুলছে। জনমানুষের ওপর প্রযুক্তির কী গভীর প্রভাব রয়েছে তার কিছু উদাহরণ তুলা ধরা হলো-

কেস স্টাডি-১

বর্তমানে বিশ্বজুড়ে দূরে থেকেও পড়ালেখার (অনলাইন লার্নিং) যে ধারণা এটা প্রযুক্তির কারণেই সম্ভব হয়েছে। এই সুবিধা প্রাথমিক পর্যায় থেকে উচ্চ পর্যায় পর্যন্ত সুবিধা নিয়ে এসেছে যা একসময় ছিল না।

শিক্ষা ও গবেষণার লক্ষ্যে মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয় সবসময় সীমানাবিহীন ক্লাসরুম তৈরি করতে চেয়েছে। মূলত ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন সংস্কৃতির মানুষকে সংযুক্ত করেছে তারা। এই বিশ্ববিদ্যালয় লজিটেক ভিডিও কলের সহায়তায় ক্লাসরুম ও গবেষণার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থী-শিক্ষকের মধ্যকার সম্পর্কে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এতে সহায়তা রয়েছে লজিটেকের ভিডিও এ/ভি কোয়ালিটি ও নির্ভরযোগ্য মান।

কেস স্টাডি-২

পশ্চিমবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় একটি সংকটের মধ্যে ছিল যা বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর ক্ষতির কারণ হয়ে উঠেছিল। এটা হলো দূরবর্তী স্থানে যোগ্য শিক্ষকের অভাব যা শিক্ষার্থীদের অদক্ষ করে তুলছিল। এই সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসে ওয়েস্ট বেঙ্গল ইলেকট্রনিক্স ইন্ডাস্ট্রি ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন লিমিটেড। তারা বিভিন্ন সফটওয়্যারের মাধ্যমে ভার্চুয়াল ক্লাসরুমের ব্যবস্থা করে দেয় যার ব্যয় ছিল সাধ্যের মধ্যে। এভাবে একটি শিক্ষা সম্পর্কিত চ্যালেঞ্জ দূর হয়।

ভবিষ্যতে ভার্চুয়াল ক্লাসরুম হতে পারে শিক্ষাক্ষেত্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এটা খুব কার্যকর এবং প্রকৃত ফলাফল এনে দেয়। গণশিক্ষার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় উৎস হতে পারে এটি। এই বিষয়টি নজরে এসেছে লজিটেক ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের। এজন্য এ ধরনের ব্যবস্থা তৈরিতে ইউটিলিটি সরবরাহ করেছে লজিটেক। এখন পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের ২৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ২৪টিতে এ ধরনের ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে।

রোগ নির্ণয়ে প্রযুক্তির ব্যবহার

কেস স্টাডি-৩

স্বাস্থ্যক্ষেত্রে স্টার্ট টেলি-হেলথের ‘ডক্টর ইন আ বক্স’ একেবারেই মৌলিক এবং সম্ভাবনাময় একটি উদ্যোগ। লজিটেকের সহায়তায় এটা ‘ভার্চুয়াল হাসপাতাল’ তৈরির পরিকল্পনা করে যা দেশের দূরবর্তী স্থানের মানুষদের স্বাস্থ্যসেবা দিতে কাজ করবে। ডক্টর ইন আ বক্স শুধু চিকিৎসক-রোগীর পরামর্শের সুযোগ দেয় না বরং এর সাহায্যে ক্যামেরা ঘুরিয়ে ওয়ার্ডের সবার অবস্থা সূক্ষ্মভাবে পর্যবেক্ষণ করতে পারেন একজন চিকিৎসক। এভাবেই স্বাস্থ্যক্ষেত্রে মাইলফলক নিয়ে আসছে ভার্চুয়াল চিকিৎসা পদ্ধতি।

কেস স্টাডি-৪

বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে অফিসের ১ হাজার শাখা থাকায় শিন্ডলার তার সব কর্মীর ব্যবস্থাপনায় হিমশিম খাচ্ছিল। বিশ্বের সবচেয়ে বড় লিফট সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান এজন্য একটি সহজ ও মিতব্যয়ী সমাধান চাইছিলো। প্রতিষ্ঠানটির লক্ষ্য ছিল এমন একটি স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি যার মাধ্যমে খুব দ্রুততার সঙ্গে নিজেদের কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাবে। তারা একইসঙ্গে মিতব্যয়ী এবং অল্প সময়ের মধ্যে কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগের উপায় খুঁজছিল। সবকিছু বিচার-বিবেচনা করে অবশেষে লজিটেক গ্রুপকে বাছাই করে শিন্ডলার এবং লজিটেক তাদের চাহিদামতো সব ব্যবস্থা তৈরি করে দেয়।

বর্তমানে লজিটেকের পণ্য বিভিন্ন বিভাগে ব্যবহৃত হচ্ছে। বিশেষ করে বিজনেস রিভিউয়ের জন্য ব্যবস্থাপনার সর্বোচ্চ স্তরে এবং সেলস রিভিউয়ের জন্য সেলস টিমের মধ্যে। শুধু এগুলোই নয়, নলেজ শেয়ারিং ও ট্রেনিং এবং মানবসম্পদ বিভাগও এসব পণ্যের মাধ্যমে উপকৃত হচ্ছে।