ভিত্তিহীন ও বেআইনি অডিট প্রত্যাহার করতে বিটিআরসিকে গ্রামীণফোনের অনুরোধ

গ্রামীণ ফোন

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) পরিচালিত অডিটে ১২ হাজার ৫৭৯.৯৫ কোটি টাকার দাবিকে আইনগতভাবে ভিত্তিহীন বলে অভিহিত করেছে গ্রামীণফোন। মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) বিটিআরসিকে দেওয়া এক চিঠিতে গ্রামীণফোন এই যু্ক্তিহীন অডিট প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে একটি যুক্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য আহ্বান জানিয়েছে। গ্রামীণফোন থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব জানানো হয়েছে।

বিবৃতিতে জানানো হয়, বিটিআরসি ২ এপ্রিল একটি দাবিনামার মাধ্যমে গ্রামীণফোনের কাছে বিটিআরসিকে ৮ হাজার ৪৯৪.০১ কোটি এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) ৪ হাজার ৮৫.৯৪ কোটি টাকা পরবর্তী ১০ কর্মদিবসে পরিশোধ করার নির্দেশ দেয়। বিটিআরসি নিয়োগকৃত জেভিসিএ অব তোহা খান জামান অ্যান্ড কোম্পানি নামের একটি অডিট ফার্ম গ্রামীণফোনের ১৯৯৭ সাল থেকে শুরু করে ২০১৪ সাল পর্যন্ত সময়ে ইনফরমেশান অ্যান্ড সিস্টেম অডিট পরিচালনা করে এই টাকা দাবি করে। এই অডিটে বিটিআরসি দাবিকৃত ৮ হাজার ৪৯৪.০১ কোটি টাকার মধ্যে ৬ হাজার ১৯৪.৩ কোটি টাকাই হলো সুদ যা ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত ধরা হয়েছে।

এর আগে বিটিআরসি আর একটি ইনফরমেশন অ্যান্ড সিস্টেম অডিটের মাধ্যমে ১৯৯৭ থেকে ২০১১ সালের সময়কালে গ্রামীণফোনের কাছে থেকে ৩ হাজার ৩৪ কোটি টাকা পাবে বলে দাবি করে। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ সেই অডিটের অডিটর নিয়োগকে অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন। বিটিআরসি ১৯৯৭-২০১১ সময়কালের আগের অডিটের দাবি নিয়ে আদালতে একদিকে তাদের আইনগত লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে অন্যদিকে ১৯৯৭ থেকে ২০১৪ সালের অডিটে এখন ১২ হাজার ৫৭৯.৯৫ কোটি টাকা দাবি করছে।

গ্রামীণফোনের সিইও মাইকেল ফোলি বলেন, নিয়ন্ত্রণ সংস্থার সঙ্গে অনেকবার আলোচনা এবং অডিটরকে পর্যাপ্ত সহযোগিতা করার পরও আমাদের যুক্তিগুলো অডিট প্রতিবেদনে প্রতিফলিত না হওয়া খুবই দুঃখজনক। অডিট চলাকালে পুরো সময়ে আমরা বারবার অডিট প্রক্রিয়ার ত্রুটিগুলো তুলে ধরেছি। কিন্তু আমাদের মতামতকে দাবিনামায় সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষা করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের আগস্ট মাসে বিটিআরসি গ্রামীণফোনকে অডিটের প্রতিবেদনের ওপরে আনুষ্ঠানিক জবাব দিতে বলে। গ্রামীণফোন নির্ধারিত সময়ে সেপ্টেম্বরে বিস্তারিত ব্যাখ্যা ও যুক্তি দাখিল করে। কিন্তু বিটিআরসি তাদের দাবিনামায় শুধু ২০১৮ সালে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেওয়া গ্রামীণফোনের ব্যাখ্যা আমলে নিয়েছে।

রাজস্ব বোর্ডের পাওনা বিষয়ে গ্রামীণফোনের বক্তব্য, রাজস্ব বোর্ডের হয়ে টাকা দাবি করার কোনও এখতিয়ার বিটিআরসির নেই। এই পরিস্থিতিতে অডিটের দাবি প্রত্যাহার করে গ্রামীণফোন বিটিআরসিকে একটি সুষ্ঠু সমাধানের জন্য আবারও আলোচনার দাবি জানাচ্ছে।