নিত্যপণ্যের দাম বেশি নিলে অভিযোগ ৩৩৩ নম্বরে

জাতীয় হেল্পলাইন নম্বর ৩৩৩-এ বাড়তি একটি ডিজিট যোগ করে নিত্যপণ্যের দামের তথ্য আদান-প্রদানের উদ্যোগ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। চলতি মাসের মধ্যে এই কার্যক্রম শেষ করে সেবা প্রদান করা হতে পারে।

সোমবার (১৫ জানুয়ারি) সচিবালয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সম্মেলনকক্ষে বাজার সংক্রান্ত অংশীজনদের নিয়ে আয়োজিত ‘বাজার দরে অধিক স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণ এবং এ বিষয়ে ডিজিটাইজেশনের মাধ্যমে উদ্ভাবনী পরিবর্তন আনয়ন' সংক্রান্ত পরামর্শক সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় পলক এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে প্রযুক্তি সুযোগ কাজে লাগানোর এই নির্দেশনা দেন তিনি।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে এটুআই’র সিনিয়র পলিসি অ্যাডভাইজার আনির চৌধুরী, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন এবং ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর, টিসিবি, বাংলাদেশ চিনি শিল্প করপোরেশন, ‍ এস আলম গ্রুপ, সিটি গ্রুপ, মেঘনা গ্রুপ, প্রাণ, অ্যাগোরা, মীনা বাজার, স্বপ্ন, কাওরানবাজার মালিক সমিতি, চাল-ডাল, ফল ব্যবসায়ী সমিতির প্রতিনিধিরা, বিভিন্ন ব্যবসায়িক ফোরামের প্রতিনিধিরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি বিভাগ থেকে আলোচনা করে দেখেছি- যেকোনও পণ্য উৎপাদন, মজুত, বাজারজাতকরণ এবং আমদানি- এ পাঁচটি বিষয়ে সঠিক তথ্য ও তথ্য সংগ্রহ এবং নিজেদের মধ্যে আদান প্রদান করা যায় তাহলে সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। আমরা প্রযুক্তির ব্যবহার করে তথ্য বিশ্লেষণ করে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে অবদান রাখতে চাই। আমরা পণ্যের উৎপাদন, মজুত, বাজারজাতকরণ, বিপণন এবং আমদানির রিয়েল টাইম ডেটা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে দিতে চাই কল সেন্টারের মাধ্যমে। তিনি বলেন, রমজান উপলক্ষে আমরা কল সেন্টার নম্বর ৩৩৩-এর পরে একটা ডিজিট বরাদ্দ করবো।

ওই নম্বরে যেকোনও নাগরিক ফোন করে আলু, ছোলা, পেঁয়াজ, খেজুর বা সবজিসহ সবকিছু সরকারের বেঁধে দেওয়া দাম কোন দোকান বা সুপার মার্কেট কত চেয়েছে তা জেনে নিতে ও জানাতে পারবেন।

ভোক্তা যখন দেখবেন যে দাম বেশি তখন কল সেন্টার থেকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের কাছে কল স্থানান্তর করা হবে এবং অ্যাকশন নেওয়া হবে।

সরকারি গুদামের মজুতের তথ্য জানতে পারলেও বেসরকারি গুদামের মজুত আমরা জানতে পারি না উল্লেখ করে পলক বলেন, আমরা বেসরকারির তথ্যটা চাই। আমরা 'ফুড ফর নেশন'-এর আওতায় একটি ওয়েবসাইট খুলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে দেবো, সেখানে পণ্যের উৎপাদন ও মজুতের তথ্য থাকবে। ধরেন, চালের উৎপাদন, মজুত, আমদানি এবং বাজারে কত পরিমাণ আছে সেসব তথ্য দেখা যাবে। আর ২০ বা ৩০ জন শীর্ষ ব্যবসায়ীর গুদামে কত পণ্য আছে— সেটি প্রধানমন্ত্রী এবং বাণিজ্যমন্ত্রী স্মার্টফোনে দেখতে পারবেন। কোনও কারসাজি হলে তারা জানতে পারবেন।

পাশাপাশি পণ্যের দাম ওয়েবসাইটে আমরা জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেবো যাতে সবাই জানতে পারেন।

তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে শহর থেকে গ্রামে দামের ফারাক কমানো, মজুতদারদের কারসাজি এড়ানো এবং পণ্য সরবরাহের মাধ্যমে বাজার নিয়ন্ত্রণ করাই এই উদ্যোগের উদ্দেশ্য বলে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী উল্লেখ করেন।